Lung Cancer

কিছুতেই কাশি কমছে না? ক্যানসার নয় তো? কোন কাশি কিসের লক্ষণ, বুঝবেন কী ভাবে?

ফুসফুসের ক্যানসারের অন্যতম প্রধান লক্ষণ কাশি। কিন্তু সর্দিকাশি তো ঘরে ঘরে লেগেই থাকে। বিশেষ করে এই ঠান্ডা-গরমে আরও বাড়ে সমস্যা। তা হলে কী ভাবে চিনবেন কোন কাশি কিসের লক্ষণ?

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ ১০:৫৪
প্রায় ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্যানসার ধরা পড়ার সময়ে কাশির সমস্যা থাকে রোগীদের।

প্রায় ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্যানসার ধরা পড়ার সময়ে কাশির সমস্যা থাকে রোগীদের। ছবি: প্রতীকী

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্যানসার হানা দেয় গুপ্ত ঘাতকের মতো। জানান দেয় না আগে থেকে। ফুসফুসের ক্যানসারও তার ব্যতিক্রম নয়। পরিসংখ্যানগত ভাবে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এই ধরনের ক্যানসারই সবচেয়ে বেশি। অথচ প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগকে চিহ্নিত করা বেশ কঠিন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্যানসারের অন্যতম প্রধান লক্ষণ কাশি। অন্য বেশ কিছু গবেষণাতেও দেখা গিয়েছে একই বিষয়। প্রায় ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্যানসার ধরা পড়ার সময়ে কাশির সমস্যা থাকে রোগীদের। রোগ যদি ছড়িয়ে যায়, তবে আরও বেড়ে যায় সমস্যা। কিন্তু কাশি তো ঠান্ডা লেগেও হতে পারে। বিশেষ করে এই ঠান্ডা-গরমের সময় কাশির সমস্যা ঘরে ঘরে। তা হলে কী ভাবে চিনবেন কোন কাশি কিসের লক্ষণ?

Advertisement

শ্বাসনালির যে কোনও ধরনের সমস্যার প্রথম লক্ষণ হল কাশি। ফুসফুসের ক্যানসারে অনেক সময় শ্বাসনালির পথ রুদ্ধ হয়, তাই কাশি হয়। আবার অনেক সময়ে ফুসফুসের ক্যানসারে বুকে জল জমে যায়। একে বলে প্লিউরাল ইফিউশন। এর-ও প্রাথমিক লক্ষণ কাশি। অনেক সময়ে টিউমার মিউকাস বা শ্লেষ্মার চলাচলের পথ আটকে দেয়। তাতেও কাশি হতে পারে। কিন্তু সাধারাণ কাশির সঙ্গে এর পার্থক্য হল, সাধারণ কাশি কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় না। কাশি যদি কয়েক সপ্তাহের (মোটামুটি ২ মাস) বেশি স্থায়ী হয় বা ক্রমাগত বেড়েই চলে তবে দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

অনেক সময়ে ফুসফুসের ক্যানসারে বুকে জল জমে যায়।

অনেক সময়ে ফুসফুসের ক্যানসারে বুকে জল জমে যায়। —ফাইল চিত্র

অনুসারী লক্ষণ

শুরুর দিকে সাধারণত ক্যানসারের কাশির সঙ্গে মিউকাস বা শ্লেষ্মা থাকে না। কিন্তু গলা বা বুক রুদ্ধ হয়ে আসে। সব সময় মনে হয়, গলা সাফ করা দরকার। এর পর কাশির পাশাপাশি ফুসফুসের ক্যানসারের আরও কিছু লক্ষণ দেখা দেয়, যা সর্দিকাশির থেকে আলাদা। শ্লেষ্মার সঙ্গে রক্তক্ষরণ বা লাল রঙের কফও ফুসফুসের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। কাশির ধরনের পরিবর্তন ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির লক্ষণ হতে পারে।

বুকে ব্যথা

বুকে ব্যথা যদি কিছুতেই না কমে, তা হলে তা-ও ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে শ্বাস নেওয়ার সময় বা হাসতে গিয়ে ব্যথা অনুভূত হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। অল্প কাজে হাঁপিয়ে ওঠা বা ক্লান্ত লাগার মতো অসুবিধাও ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

অন্যান্য লক্ষণ

ক্যানসার শরীরে বাসা বাঁধলে প্রধান লক্ষণ ছাড়াও আরও কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। অনেক সময়ে কোনও কারণ ছাড়াই গলা বসে যায়। বহু ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, আক্রান্তের ওজন দ্রুত কমে যাচ্ছে। ক্ষুধামান্দ্য, বার বার ঠান্ডা লাগা, দীর্ঘ দিন সংক্রমণ থেকে মুক্তি না পাওয়াও লক্ষণ হতে পারে এই মারণরোগের।

মোট কথা, সাধারণ মানুষের পক্ষে আলাদা করে ক্যানসারের কাশি চিনে নেওয়া সহজ নয়। দরকার যথাযথ পরীক্ষা। যত আগে ক্যানসার ধরা পড়বে, তত বাড়বে চিকিৎসার সুযোগ। কাজেই কাশি হলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।

আরও পড়ুন
Advertisement