ঘন ঘন পেশির টান কমবে কী ভাবে। ছবি: ফ্রিপিক।
ঘুমের মধ্যে বা একটানা অনেক ক্ষণ বসে বা শুয়ে থেকে ওঠার সময়ে পিঠ ও পায়ের পেশিতে টান ধরে। ধরুন, অফিসে দীর্ঘ ক্ষণ বসে কাজ করছেন, আচমকাই পিঠের পেশিতে টান ধরল, অথবা রাতে ঘুমিয়ে আছেন, পাশ ফিরতে গিয়ে দেখলেন পিঠ ও পায়ের পেশি টান ধরে অসাড় হয়ে গিয়েছে। সে যন্ত্রণা বড় কম নয়। পেশির টান আপনা থেকেই ছেড়ে যায় বেশির ভাগ সময়ে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, অসাড় ভাবটা কেটে যাওয়ার পরেও যন্ত্রণা থেকে গিয়েছে। অনেকের আবার ঘন ঘন পিঠ, কোমর ও পায়ের পেশিতে টান ধরে। সে ক্ষেত্রে কী করণীয় জেনে নিন।
পেশিতে টান ধরার অন্যতম কারণ হল শরীরে জলের পরিমাণ কমে যাওয়া। আপনি জল এতটাই কম খাচ্ছেন যে, ঘাটতি পড়ছে পেশির স্থিতিস্থাপকতায়। রাতে পাশ ফিরে শোয়ার সময়ে বা হাঁটাহাঁটির সময়ে, বসে বা শুয়ে থেকে ওঠার সময়ে পেশিতে আঘাত লাগছে। পেশিতে ল্যাকটিক অ্যাসিড জমে গেলে বা ভিটামিন ও পটাশিয়ামের অভাব হলেও ঘন ঘন পেশিতে টান ধরতে পারে।
পেশিতে টান ধরলে সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত জায়গায় বরফ সেঁক দিন। দ্রুত মাসাজ করে পেশিকে শিথিল করে তুলতে হবে। এমন ভাবে মাসাজ করুন যাতে জায়গাটায় চাপ পড়ে, কিন্তু ব্যথা না লাগে।
গরম জলে তোয়ালে ভিজিয়ে ভাল করে নিংড়ে নিন। এ বার ভেজা তোয়ালে ব্যথার জায়গায় চেপে ধরে থাকুন। অনেকটা আরাম হবে।
একটি চেয়ারে ভর দিয়ে দাঁড়ান। যে পায়ে টান লেগেছে সেটি কোমর বরাবর সামনের দিকে তুলুন। ১০ সেকেন্ড রেখে নামিয়ে নিন। বার কয়েক এমন করলে রক্ত সঞ্চালন ভাল হবে। পেশির টান ছেড়ে যাবে।
পিঠে টান ধরলে সবচেয়ে ভাল ব্যায়াম হল ভুজঙ্গাসান। উপুড় হয়ে শুয়ে, দুই হাতে ভর দিয়ে কোমর অবধি শরীর তুলতে হবে। দুই পা মাটিতে টানটান থাকবে। মাথা থাকবে সোজা। ওই ভাবে ২০ সেকেন্ড থেকে আগের অবস্থানে ফিরে যেতে হবে। তিন বার করতে হবে এই ব্যায়াম।
প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। পেশিতে টান ধরলে উষ্ণ গরম জল খান আর হাঁটাহাঁটি করুন, দেখবেন দ্রুত পেশি সচল হবে।
যদি ঘন ঘন পেশিতে টান ধরতে থাকে, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ঘুমনোর সময়ে পায়ের নীচে বালিশ রাখুন। বেশি করে সবুজ শাকসব্জি, ফল, ডিম, দুধ খেতে হবে। ডাবের জল খান। যদি দেখেন টান ধরার পর পায়ের পেশি ফুলে উঠছে এবং সেখানকার ত্বকের রং বদলে যাচ্ছে, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।