রক্তচাপ বাড়লে হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ে। ছবি- সংগৃহীত
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। তাই বাড়িতে রক্তচাপ মাপার যন্ত্র কিনে রেখে দেন অনেকেই। দিনের বিভিন্ন সময়ে রক্তচাপের মাত্রা এক এক রকম থাকে। কারণ, আপনি কখন কী কাজ করছেন, তার উপর অনেকটাই নির্ভর করে রক্তচাপ। অনেকের হঠাৎই শরীর খারাপ লাগতে পারে, মাথাটা দপ দপ করতে পারে, কিংবা ঘাড়ে মাথায় প্রচণ্ড কষ্ট হতে পারে। আচমকা এমন হলে ধরে নেওয়া হয়, হয়তো রক্তচাপ বেড়েছে।
রক্তচাপের মাত্রা বেড়ে গেলে মাথায় কষ্ট হয় কেন?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন উচ্চ রক্তচাপ আসলে মানবদেহের গোটা সংবহনতন্ত্রেই প্রভাব ফেলতে পারে। যার ফলে রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা হয়। হৃদ্যন্ত্রে রক্ত এবং অক্সিজেন সঠিক মাত্রায় না পৌঁছলে, রক্তবাহিকাগুলি তাদের কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। হৃদ্যন্ত্র থেকে ধমনীর মাধ্যমে সারা দেহে ছড়িয়ে পড়া বিশুদ্ধ রক্ত, অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনার কাজে লাগে। সেখানে রক্তের ঘাটতি হলে সেই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গুলিও কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে প্রথম সমস্যা শুরু হয় মস্তিষ্কে। এর পর একে একে চোখে এবং কিডনিতেও এর প্রভাব পড়ে।
উচ্চ রক্তচাপের ফলে দেহের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে কেমন প্রভাব পড়ে?
মস্তিষ্ক
রক্ত সঞ্চালন কম হলে অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো মস্তিষ্কেও রক্ত পৌঁছতে পারে না। হার্টের ধমনীর মতোই মস্তিষ্কের ধমনীতেও ক্ষতি করে উচ্চ রক্তচাপ। ধমনী বা রক্তবাহিকাগুলিতে রক্তের গতি অবরুদ্ধ হলে তখনই স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটলে স্নায়ুর সমস্যাও দেখা দেয়।
কিডনি
শরীরের যত বর্জ্য পদার্থ, অতিরিক্ত তরল ছেঁকে শরীর থেকে বার করে দেয় কিডনি। রক্তে নুন, বিভিন্ন খনিজ, সোডিয়াম ক্যালশিয়াম, ফসফরাস এবং পটাশিয়ামের মতো যৌগের ভারসাম্য ও নিয়ন্ত্রণ করে।
চোখ
চোখের মধ্যে রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখার জন্য যে সূক্ষ্ম রক্তবাহিকাগুলি থাকে, সেগুলির ক্ষতি করে উচ্চ রক্তচাপ। রেটিনার পিছনে থাকা টিস্যুগুলি নষ্ট হয়ে গেলে পুনরায় চোখের দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না বললেই চলে। চোখে ঝাপসা দেখা, কিছু ক্ষেত্রে রক্ত পড়ার মতো ঘটনাও ঘটতে দেখা যায়।