হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণই হল শিরা ও ধমনীর প্রাচীরে কোলেস্টেরল জমে যাওয়া। —ফাইল চিত্র
কোলেস্টেরল এক নীরব ঘাতক। গোটা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ মারা যান হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে। আর এর অন্যতম প্রধান কারণই হল শিরা ও ধমনীর প্রাচীরে কোলেস্টেরল জমে যাওয়া। কোলেস্টেরল আবার একা আসে না, নিজের সঙ্গে জমায় অন্যান্য স্নেহ পদার্থও। ফলে ক্ষতি হয়ে যায় রক্তবাহের। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস’। হৃদ্যন্ত্রের সংলগ্ন শিরা বা ধমনীতে এই ধরনের অবরোধ দেখা দিলে তা যেমন হৃদ্রোগের কারণ হতে পারে তেমনই মস্তিষ্কে ঘটলে বাড়ে স্ট্রোকের আশঙ্কা। এ হেন শত্রুকে নিকেশ করতে কাজে আসতে পারে এমন একটি খাবার, যা বহু দিন পর্যন্ত কিছুটা অপরিচিতই ছিল বাঙালির কাছে। কিন্তু বিশ্বায়নের হাত ধরে এখন হয়ে উঠেছে বেশ জনপ্রিয়। ওট্স।
১। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বলছে, ওট খেলে দেহে কোলেস্টেরলের সার্বিক পরিমাণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস রোগে ঝুঁকির আশঙ্কা অনেকাংশে বৃদ্ধি করে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল। ওট্স খেলে দেহে এই খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণও হ্রাস পায় অনেকটাই। পাশাপাশি, ওট স্থূলতার সমস্যা কমাতেও কাজে আসে। যা পরোক্ষ ভাবে কমায় হৃদ্রোগের আশঙ্কা।
২। ওটসে থাকে বিভিন্ন ‘ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট’। এই উদ্ভিজ্জ উপাদান স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এমনই একটি ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট হল ‘অ্যাভেনানথ্রামাইড’। এটি এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টও বটে। এই উপাদানটি প্রদাহ কমাতে কাজে আসে। এ ছাড়া, শিরা ও ধমনীর দেওয়ালে আটকে থাকা বিভিন্ন উপাদান সাফ করতেও সহায়তা করে এটি।
৩। ওট্স জলে দিলে যে লেই তৈরি হয়, তাতে থাকে বিটা গ্লুকান নামের একটি উপাদান। এটি এক ধরনের ফাইবার বা তন্তু জাতীয় উপাদান। দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজে আসে এই উপাদান।
৪। ওট থেকে প্রাপ্ত ফাইবারে থাকে এমন কিছু উপাদান যা রক্তনালির পুনর্গঠনে সহায়তা করে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত রক্তনালীগুলি পুনরায় চাঙ্গা হয়ে ওঠে। রক্তবাহ ভাল থাকলে অক্সিজেনের আদানপ্রদান ভাল হয়। অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস রোগে রক্ত চলাচলেও সমস্যা দেখা দেয়। তাই রক্তে পর্যাপ্ত অক্সিজেন থাকলে বাঁচাতে পারে প্রাণ।