— প্রতীকী চিত্র।
রক্তে ইনসুলিন হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। কারণ, খাবার থেকে প্রয়োজনীয় শর্করা শোষণ করে তা শক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারে না। সেই অতিরিক্ত শর্করা রক্তে ভাসমান অবস্থায় থাকে। ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়তে থাকে। ২০২৩ সালের জুন মাসে একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, ভারতে ইতিমধ্যে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত। পরবর্তী কালে এই পরিসংখ্যান আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা গবেষকদের। চিকিৎসকেরা বলছেন, দীর্ঘ দিন ধরে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকলে ধমনীর দেওয়াল পুরু হতে থাকে। রক্তবাহিকাগুলিও মধ্যেও ফ্যাট জমতে থাকে। ফলে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয়। মস্তিষ্কে অক্সিজেনে সমৃদ্ধ বিশুদ্ধ রক্ত পৌঁছতেও সমস্যা হয়। ফলে স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। চিকিৎসকেরা বলছেন, ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীদের সাধারণত দু’ধরনের স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। একটি হল ইস্কেমিক স্ট্রোক। রক্তের মধ্যে থাকা কোনও ক্লট যখন মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বাধা দেয়, তখন এই স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। অন্যটি হল হেমরেজিক স্ট্রোক। এ ক্ষেত্রে রক্ত সরবরাহকারী নালিকাগুলি ছিঁড়ে গিয়ে মস্তিষ্কের মধ্যেই রক্তক্ষরণ হতে শুরু হয়।
ডায়াবেটিক স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আগে কোনও পূর্বাভাস পাওয়া যায় কি?
সাধারণত কথা বলতে সমস্যা হওয়া, শরীর অবশ হয়ে যাওয়া, দুর্বল লাগা, অতিরিক্ত ক্লান্তি, দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে আসার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে এই সব লক্ষণ অন্য কোনও রোগেরও হতে পারে। তাই দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করার উপায়গুলি কী কী?
১) কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম
রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে বড় ভূমিকা রয়েছে কার্বোহাইড্রেটের। তাই ভাত, রুটির বদলে ফাইবারজাতীয় খাবার খাওয়ার উপরেই জোর দেন পুষ্টিবিদেরা।
২) মদ্যপানে লাগাম
অ্যালকোহলযুক্ত সব ধরনের পানীয়ের উপর লাগাম টানতে বলা হয় ডায়াবিটিস আক্রান্তদের। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাসে।
৩) নিয়মিত শরীরচর্চা
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে যেমন খাওয়াদাওয়ায় লাগাম টানা জরুরি, তেমনই সুস্থ থাকতে নিয়মিত ঘাম ঝরানোর উপরেও জোর দিতে বলেন চিকিৎসকেরা।