Mental Health

মনের যত্ন নিন! মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখা কঠিন নয়, মানতে হবে কোন পন্থাগুলি?

মানসিক ক্লান্তির গূঢ় সমস্যাগুলির শিকড় কিন্তু একটি বা দু’টি নয়। বরং অনেকগুলি। মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে তাই মেনে চলুন কয়েকটি বিষয়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২২ ১৩:২৮
করোনার প্রভাব তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনে অনিয়মও মানসিক স্বাস্থ্যকে বিপর্যস্ত করে তুলছে।

করোনার প্রভাব তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনে অনিয়মও মানসিক স্বাস্থ্যকে বিপর্যস্ত করে তুলছে। প্রতীকী ছবি।

সার্বিক ভাবে ভাল থাকার ভিত্তি হল মানসিক সুস্বাস্থ্য। মন শরীরের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। অথচ মনের শুশ্রুষা আড়ালেই থেকে যায়। দীর্ঘ দু’বছর কোভিড সংক্রমণের প্রভাবে বিঘ্নিত হয়েছে মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন। করোনার জেরে বিশ্বব্যাপী বেকারত্ব, সামাজিক ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া, গৃহবন্দি জীবন, বেতনে কোপ— সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত হয়েছে মন। নানা সংস্থার তরফে সে সব নিয়ে সমীক্ষাও চলছে। করোনার প্রভাব তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনে অনিয়মও মানসিক স্বাস্থ্যকে বিপর্যস্ত করে তুলছে।ব্যস্ততম জীবনে মনের তো দূর, শরীরের যত্ন নেওয়ার পর্যন্ত সময় পাওয়া যায় না। কর্মক্ষেত্রের প্রত্যাশা পূরণের চাপ, ভবিষ্যৎ চিন্তা, ব্যক্তিগত জীবন, অপছন্দের কাজ করা, সময়ের অভাবে পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া, নিজের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলা, অতিরিক্ত ক্লান্তি— মানসিক স্বাস্থ্য বিঘ্নিত হওয়ার প্রধান কিছু কারণ। মানসিক ক্লান্তির এই যে গূঢ় সমস্যা, তার শিকড় কিন্তু একটি বা দু’টি নয়। বরং অনেকগুলি। মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে তাই মেনে চলুন কয়েকটি বিষয়।

Advertisement

সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার কমানো

ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, টুইটার— ক্রমাগত নেটমাধ্যমের ব্যবহারের ফলে বিষণ্ণতা, একাকীত্ব, ঈর্ষা, উদ্বেগ জন্ম নিতে পারে। ফলে জীবনের প্রতি অসন্তোষ তৈরি হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে। সারা ক্ষণ ফোনের সংস্পর্শে থাকার ফলে মনের উপর তার প্রভাব পড়ছে। এতে চিন্তাভাবনার পরিসরও ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে আসে। কাজের প্রয়োজনে প্রযুক্তির কাছে মাথা নত করা ছাড়া উপায় থাকে না। মনোবিদরা বলছেন, প্রয়োজন ছাড়া নেটমাধ্যম থেকে দূরে থাকাই ভাল। প্রযুক্তির ব্যবহার ঘুমেরও ঘাটতি তৈরি করে। তাই প্রয়োজন ছাড়া সমাজমাধ্যম ব্যবহার না করাই ভাল।

নিজের প্রতি সৎ থাকুন

সততা মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। নিজের কাজের প্রতি সব সময় সৎ থাকার চেষ্টা করুন। নিজের অনুভূতির খেয়াল রাখুন। নিজের দর্শন, আদর্শের প্রতি অনড় থাকুন। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। কোনও পরিস্থিতিতেই আত্মবিশ্বাস হারাবেন না।

নিজেকে গুরুত্ব দিন

অন্যকে সময় দিতে গিয়ে বা কাজের ব্যস্ততায় নিজের খেয়াল রাখার ফুরসত পান না অনেকেই। এখানেই ভুলের শুরু। সব কিছু ঠিক থাকবে, যদি আপনি ভাল থাকেন। তাই সব থেকে আগে নিজের প্রতি সচেতন হন। নিজের ভাললাগা, পছন্দ-অপছন্দকে গুরুত্ব দিন। উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতা দূর করার অন্যতম উপায় হল নিজেকে ভালবাসা। তা হলে দেখবেন, কোনও সমস্যাই আর খুব গুরুতর বলে মনে হচ্ছে না।

সারা ক্ষণ ফোনের সংস্পর্শে থাকার ফলে মনের উপর তার প্রভাব পড়ছে।

সারা ক্ষণ ফোনের সংস্পর্শে থাকার ফলে মনের উপর তার প্রভাব পড়ছে। ছবি: সংগৃহীত

মানসিক ক্লান্তি গোপন করবেন না

মানসিক স্বাস্থ্য অবহেলা করার বিষয় নয়। মনের কোণে যদি এতটুকুও উদ্বেগের মেঘ জমাট বাঁধে, তা চেপে রাখবেন না। যাঁকে বললে বা যাঁদের কাছে বললে আপনি হালকা হতে পারবেন বলে মনে হচ্ছে, দেরি না করে বলে ফেলুন। সমস্যা চেপে রাখলে আয়তনে আরও বাড়তে থাকে। লাভ কিছু হয় না। দরকার হলে মনোবিদের সাহায্য নিন। কিন্তু মনের মধ্যে যন্ত্রণা আটকে রেখে নিজেকে তিলে তিলে কষ্ট দেওয়া মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

বিশ্রাম নিন

একঘেয়ে জীবনে মাঝেমাঝে বিরতির দরকার হয়। রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো ছুটে চলা জীবনে মাঝেমাঝে লাগাম পরান। কাজ তো সারা জীবন থাকবে, কিন্তু নিজের সেরাটুকু দেওয়ার জন্যেও খানিক প্রস্তুতির দরকার হয়। মনখারাপ হোক বা না হোক, সময় পেলেই বেড়িয়ে আসুন। দরকার হলে সময় বার করে ঘুরে আসুন। আপনার মনের দেখাশোনার দায়িত্ব আপনারই। চাঙ্গা থাকার চেষ্টা করুন। ইচ্ছে অনুযায়ী চলুন। এগুলিই মনের ক্ষতে একটু একটু করে প্রলেপ লাগাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement