BSF-BGB

বিজিবির বাধা উড়িয়ে বেড়া গ্রামবাসীর

বিকেলে বিএসএফের জলপাইগুড়ি সেক্টরের ডিআইজি ব্রিগেডিয়ার রাজীব গৌতম এবং বিজিবির রংপুর সেক্টর কমান্ডার সাব্বির আহম্মেদের বৈঠক হয়।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫৬
দু’কিলোমিটার এলাকায় প্রায় চার ফুট উঁচু বেড়া দেওয়া হয়।

দু’কিলোমিটার এলাকায় প্রায় চার ফুট উঁচু বেড়া দেওয়া হয়। —প্রতীকী চিত্র।

মালদহের পরে এ বার কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়ে উত্তেজনা ছড়াল কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের তিন বিঘা সীমান্তে। তবে মালদহে ‘জ়িরো পয়েন্ট’ থেকে ৮০ গজ দূরে ভারতীয় ভূখণ্ডে বেড়া দেওয়া শুরু করেছিল সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুক্রবার বাংলাদেশের দহগ্রাম-আঙ্গারপোতা এই দুই গ্রামের সীমানায়, জ়িরো পয়েন্ট থেকে বড় জোর দেড় ফুট দূরত্বে নিজেদের খরচে বেড়া দিলেন লাগোয়া ভারতীয় গ্রামের বাসিন্দারা। তা নিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে তাঁদের বিবাদে পরিস্থিতি তেতে উঠলে, ভারতীয়দের পক্ষ নেয় বিএসএফ। শেষ পর্যন্ত বিজিবির বাধা উপেক্ষা করে, দু’কিলোমিটার এলাকায় প্রায় চার ফুট উঁচু বেড়া দেওয়া হয়। তা নিয়ে বিকেলে বিএসএফের জলপাইগুড়ি সেক্টরের ডিআইজি ব্রিগেডিয়ার রাজীব গৌতম এবং বিজিবির রংপুর সেক্টর কমান্ডার সাব্বির আহম্মেদের বৈঠক হয়। বিএসএফের এক কর্তার দাবি, ‘‘সীমান্তে যাতে উত্তেজনা না ছড়ায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’ মালদহের সুকদেবপুর সীমান্তে অবশ্য এ দিনও বেড়া দেওয়ার কাজ হয়নি।

Advertisement

দহগ্রাম ও আঙ্গারপোতা এক সময়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে বাংলাদেশের ‘ছিটমহল’ ছিল। সেখানে বাংলাদেশ থেকে যাতায়াতের রাস্তা ছিল না। ১৯৯২ সালে এক চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের তিন বিঘা করিডর নিরানব্বই বছরের জন্য ব্যবহারের লিজ় দেওয়া হয় বাংলাদেশকে। সে সময়ে দহগ্রাম ও আঙ্গারপোতা থেকে সরাসরি বাংলাদেশে যাওয়া শুরু হয়। সেখানে বাংলাদেশ পুলিশের একটি ফাঁড়ি-সহ বিজিবির সীমান্ত চৌকি রয়েছে।

ওই এলাকায় প্রায় ১৮ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে ১২ কিলোমিটারে বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে। বাকিটা উন্মুক্ত। সে অঞ্চল দিয়ে অবাধে চোরাচালান চলে বলে অভিযোগ লাগোয়া কুচলিবাড়ি, তিন বিঘা গ্রামের বাসিন্দাদের। তাঁদের ক্ষোভ, গরু পাচারের জেরে, ওই সীমান্তে ভারতীয় ভূখণ্ডের কৃষিজমি নষ্ট হতে বসেছে।

বাংলাদেশের অস্থির আবহে ওই খোলা সীমান্ত নিয়ে ভারতীয় গ্রামের বাসিন্দাদের ক্ষোভ বাড়ছিল। এ দিন সকালে কাঁটাতার, লোহার খুঁটি নিয়ে বেড়া দিতে শুরু করেন একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয় সূত্রের খবর, দু’কিলোমিটার জুড়ে ওই বেড়া দিতে প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ঘিশুরাম রায়, অনুপ রায় বলেন, ‘‘নিজেদের খরচে জমিতে কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছি। তাতে বাধা পেলেও কাজ করব৷ কারণ, গরু পাচারের ঠেলায় আমাদের চাষের জমি উচ্ছন্নে যেতে বসেছে।’’

বিজিবির উপস্থিতিতে উত্তেজনা ছড়ালে পরিস্থিতিতে ভারতীয় বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়ায় বিএসএফ। পুরো কাজ শেষ হয়নি। বাকি অংশে আজ, শনিবার বেড়া দেওয়া হবে বলে জানান বাসিন্দারা। রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, বেড়া লাগোয়া এলাকায় বিএসএফ এবং বিজিবির পাহারা রয়েছে। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে মাটি খুঁড়ে ‘পজিশন’ নিতে দেখা গিয়েছে বিজিবি-কে।

মালদহের সুকদেবপুরের খোলা সীমান্তে ভারতীয় ভূখণ্ডে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ এ দিনও হয়নি। বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া দিতে চাইছি।’’

অন্য দিকে, এ দিন ভোরে সশস্ত্র গরু পাচারকারীদের ‘হামলার’ মুখে পড়ে মালদহের বামনগোলা থানার খুটাদহ সীমান্তে শূন্যে এক রাউন্ড গুলি চালায় বিএসএফ। কোনও পাচারকারী ধরা পড়েনি।

Advertisement
আরও পড়ুন