জন্ডিসের মতো সাধারণ রোগকে খুব একটা আমল দেন না অনেকেই। প্রতীকী ছবি।
ক্যানসার মারণরোগ হলেও ঠিক সময়ে ধরা পড়লে এবং সঠিক চিকিৎসা হলে তা সেরে যায়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্যানসার ধরা পড়ে এমন সময়ে যে, চিকিৎসকদের তখন আর কিছুই করার থাকে না। বিরল হলেও পিত্তনালির ক্যানসার কিন্তু ধরা পড়ে অনেক দেরিতে। কারণ, প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগের সব লক্ষণ দেখলেই তাকে সাধারণ ভাবে জন্ডিস বা লিভার বড় হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা বলেই মনে হয়। জন্ডিসের মতো সাধারণ রোগকে খুব একটা আমল দেন না অনেকেই। ফলে যখন আসল রোগ ধরা পড়ে, তখন বিশেষ কিছু করার থাকে না।
চিকিৎসকদের মতে, পিত্তনালির ক্যানসার হলে সেই অংশের কোষগুলি হঠাৎ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে, যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় ‘কোলানজিয়োকার্সিনোমা’। এই ক্যানসার সম্পর্কে আগে থেকেই সচেতন হতে হবে। জেনে নিন পিত্তনালির ক্যানসারের প্রধান কিছু লক্ষণ।
১) জন্ডিস
পিত্তরসের মধ্যে মিশে থাকা বিলিরুবিন নামক যৌগটি, লিভার শোষণ করতে না পারলে সেই অতিরিক্ত বিলিরুবিন রক্তে মিশতে থাকে। সেখান থেকেই জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। পিত্তনালির ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম এবং প্রধান লক্ষণ হল জন্ডিস। তবে জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়া মানেই কিন্তু তা ক্যানসার নয়।
২) চুলকানি
চিকিৎসকদের মতে, পিত্তনালির ক্যানসারে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগীদের মধ্যেই চুলকানির সমস্যা দেখা যায়। কারণ, রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলেই গায়ে র্যাশ বেরোতে পারে। হতে পারে চুলকানিও।
৩) মলের রং পরিবর্তন
মলের রং কেমন হবে, তা নির্ধারণ করে বিলিরুবিন। স্বাভাবিক ভাবে মলের রং হালকা থেকে গাঢ় হলুদ পর্যন্ত হতে পারে। যদি হঠাৎই কারও মলের রঙে পরিবর্তন আসে বা সাদাটে হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
৪) প্রস্রাবের রং পরিবর্তন
রক্তে মিশে থাকা অতিরিক্ত বিলিরুবিন প্রস্রাবের সঙ্গে মিশে গেলে তার রংও পাল্টে দিতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়ার পরও মূত্রের রং যদি হঠাৎ অতিরিক্ত গাঢ় হয়ে যায়, তৎক্ষণাৎ সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
৫) জ্বর, বমি, পেটে ব্যথা
সাধারণত পেটের ডান দিকে ব্যথা এবং সেখান থেকে মাঝেমধ্যেই জ্বর আসার মতো লক্ষণ কিন্তু পিত্তনালির ক্যানসারের কারণ হতে পারে। পাশাপাশি, খাবার খেয়ে হজম করতে না পারা, সঙ্গে বমি হওয়াও এই রোগের লক্ষণ হতে পারে।