Meningitis Symptoms

ঋতু বদলের সময়ে বাড়ে মেনিনজাইটিসের আশঙ্কা! কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?

মেনিনজাইটিসের ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস শরীরে ঢোকে নাক বা শ্বাসনালির মধ্য দিয়ে। তার পরে তারা সেখানে বাসা করে এবং শেষমেশ গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। কোন উপসর্গ দেখলেই সতর্ক হবেন?

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:০৬
Early warning signs and symptoms of meningitis

মেনিনজাইটিস হইতে সাবধান। ছবি: শাটারস্টক।

মরসুম বদলের সময়ে ভাইরাসঘটিত রোগের দাপট সবচেয়ে বেশি। কোভিডের পর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে ভাইরাল অসুখ শরীরে জাঁকিয়ে বসতে খুব বেশি সময় লাগছে না। এমনই ভাইরালঘটিত রোগ মেনিনজাইটিস।

Advertisement

কী এই রোগ?

মানুষের মস্তিষ্কের উপরে ফাইবারের একটা স্বচ্ছ, পাতলা আস্তরণ থাকে। এর নাম মেনিনজেস। এটি মস্তিষ্ককে সুরক্ষা দেওয়ার কাজ যেমন করে, তেমনই আবার এর পুষ্টি জোগাতেও সাহায্য করে। মেনিনজেসে যদি কোনও কারণে সংক্রমণ বা প্রদাহ হয়, তখন তাকে বলা হয় মেনিনজাইটিস। ভাইরাস, টিউবারকিউলোসিস-সহ ব্যাক্টেরিয়া, ফাঙ্গাস বা অন্যান্য জীবাণুর সংক্রমণ থেকেই মূলত হতে পারে মেনিনজাইটিস। কিছু বিরল ক্ষেত্রে কোনও সংক্রমণ ছাড়াও এই রোগ হতে পারে। যেমন, ক্যানসার থেকে বা কোনও রাসায়নিক যৌগ থেকে। মেনিনজাইটিস একটি স্নায়ুঘটিত রোগ। এ ক্ষেত্রে যদি চিকিৎসা শুরু করতে দেরি করা হয়, তা হলে রোগীর সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সমস্যা হতে পারে। মেনিনজাইটিসের ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস শরীরে ঢোকে নাক বা শ্বাসনালির মধ্য দিয়ে। তার পরে তারা সেখানে বাসা করে এবং শেষমেশ গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। নাকের সঙ্গে যেহেতু মস্তিষ্কের যোগ রয়েছে, তাই এই সংক্রমণ খুব তাড়াতাড়ি চলে যায় ব্রেনে।

Early warning signs and symptoms of meningitis

এই রোগে আক্রান্ত হলে জ্বর হয়, সঙ্গে প্রচণ্ড মাথাব্যথা, ঘন ঘন বমি, খিঁচুনি ধরতে পারে। ছবি: শাটারস্টক।

কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?

এই রোগে আক্রান্ত হলে জ্বর হয়, সঙ্গে প্রচণ্ড মাথাব্যথা, ঘন ঘন বমি, খিঁচুনি ধরতে পারে মাঝেমধ্যেই এবং ধীরে ধীরে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন রোগী। এগুলি ছাড়াও আরও দু’-একটি লক্ষণ দেখা যায়— যেমন, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া বা গাভর্তি র‌্যাশ। বেশ কিছু মেনিনজাইটিসের ক্ষেত্রে শরীরে র‌্যাশ বেরোতে দেখা যায়। মেনিনগোকক্কাল ব্যাক্টেরিয়ার কারণে সদ্যোজাত বা শিশুদের মেনিনজাইটিস হলে গায়ে র‌্যাশ বেরোয়। সঙ্গে জ্বর ও বমিও হয়। বড় বা ছোটদের মধ্যে এই লক্ষণগুলি একসঙ্গে বা এদের কয়েকটি দেখা দিলেই রোগীকে তখনই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত।

মেনিনজাইটিসে তিন ধরনের পরিণতি হতে পারে। এক, রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেন। দুই, চিকিৎসা সত্ত্বেও রোগী মারা গেলেন। সাধারণত বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই আশঙ্কা বেশি থাকে। আর তিন, রোগ সেরে গেলেও রোগের মাত্রা খুব বেশি হওয়ার কারণে শারীরিক সমস্যা থেকে গেল। এ ক্ষেত্রে কারও হয়তো ব্রেন ড্যামেজ হল, কেউ স্মৃতিশক্তি হারালেন, কারও শরীরের এক দিক প্যারালিসিস হয়ে গেল, কেউ এক কানে আর শুনতে পেলেন না, কারও চোখের মণি প্রভাবিত হল। এটা অনেকটা রোধ করা যায় যদি ঠিক সময়ে রোগ ধরা পড়ে এবং সেই মতো চিকিৎসা শুরু করা যায়।

ভাইরাল জ্বর হলে আমরা খুব বেশি পাত্তা দিই না। তবে এই ভাইরাল জ্বর প্রাণও কেড়ে নিতে পারে। তাই জ্বরের সঙ্গে এই উপসর্গগুলি দেখলেই সতর্ক হন, চিকিৎসকরের পরামর্শ নিন।

আরও পড়ুন
Advertisement