(বাঁ দিকে) সৃজিত মুখোপাধ্যায়, সুব্রত বারিশওয়ালা (ডান দিকে)। ছবি: ফেসবুক।
তখন তিনি গ্রুপ থিয়েটার করেন। বয়স কতই বা, ১৮-এর আশেপাশে হয়তো। সেই সময় প্রেমে পড়েছিলেন বিস্তর। প্রচুর আবেগ তাতে। সেই প্রেম হঠাৎ যেমন এসেছিল, হঠাৎ ভেঙে খানখান। কে বলে, পুরুষ বিরহে দিনযাপন করে না? সুব্রত বারিশওয়ালা তেমনই একজন। প্রেম ভাঙতেই অবসাদে ডুবে গিয়েছিলেন তিনি। পরিশ্রমের ছুতোয় মনখারাপ ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টা। তাঁর কথায়, “ঠিক সেই সময় মুক্তি পেল সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘হেমলক সোসাইটি’। ছবির নায়ক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। চরিত্রের নাম আনন্দ কর। যাঁরা আত্মঘাতী হওয়ার পথ খোঁজেন তাঁদের জীবনের পথে ফেরান আনন্দ। বাস্তবে ওই ছবি, ওই চরিত্র কতজনকে আত্মঘাতী হওয়া থেকে বাঁচিয়েছিল জানি না, আমাকে কিন্তু জীবনের পথে ফিরিয়েছিল।”
সদ্য সৃজিতের জন্মদিন গেল। সুব্রত আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে পরিচালককে নিয়ে আবেগপ্রবণ। সাল ২০২২। বারিশের ফি-দিন দেখা স্বপ্ন সত্যি। সৃজিত ‘এক্স=প্রেম’ বানাচ্ছেন। গানের দায়িত্বে সপ্তক সানাই দাস। বারিশ তাই নিয়ে কফিহাউসে বসে এক বন্ধুর কাছে আক্ষেপ করছেন, “খুব ইচ্ছে সৃজিতদার ছবির টাইটেল কার্ডে আমার নাম থাকবে। ইদানীং নতুনদের নিয়েও কাজ করছেন। আমিও যদি সুযোগ পেতাম।” ঈশ্বর সে দিন তাঁর কথা বুঝি শুনতে পেয়েছিলেন। সানাইয়ের বরাতের একটি গান তখনও তৈরি হয়নি। সেই গানের দায়িত্ব বর্তেছিল বারিশের উপরে। গীতিকারের দাবি, সেই শুরু।
যে প্রেম তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল সেই প্রেমের ছবিই তাঁকে নতুন করে প্রেমে পড়তে শিখিয়েছে, দাবি বারিশের। তিনি কি নতুন প্রেমের সন্ধান পেয়েছেন? অল্প হেসে দাবি, “আপাতত সৃজিতদার ছবিতে কাজের নেশা আমায় পেয়ে বসেছে। ওঁর আগামী ছবি ‘টেক্কা’তেও আমার একটি গান রয়েছে। সেই গানও ভালবাসায় ভরপুর... বাকিটা পর্দায় দেখতে হবে।” রহস্য জিইয়ে কথা শেষ করলেন গীতিকার। টলিউড জানে, বারিশওয়ালার গানের পংক্তি, ‘ভালবাসা জারি থাক’।
যিনি এ ভাবে কাউকে জীবনে ফেরান তিনি কতটা প্রেমময়? জবাব দেওয়ার আগে দ্বিতীয় বার ভাবেননি বারিশ। তাঁর জোরালো দাবি, “অঙ্ক কষে নয়, হৃদয় দিয়ে বুঝেছি সৃজিত=প্রেম, প্রমাণিত। সৃজিতদা আদ্যন্ত প্রেমিক। সোচ্চার ওঁর প্রেম। নইলে ‘জাতিস্মর’ তৈরি হত না। কখনও নিজের প্রেমজীবন গোপনে রাখেননি। সিনেমা থেকে পথে প্রতিবাদ— সবেতেই ওঁর প্রেম ছড়ানো।”