‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ প্রসঙ্গে হাওয়া গরম ইফি-র অন্দরে। ফাইল চিত্র।
গোয়ায় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের শেষটা হল বির্তক উস্কে। নেপথ্যে একটা ছবি। নাম ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। মাস কয়েক আগেও যে ছবিকে ঘিরে উত্তাল ছিল গোটা দেশ। যদিও ভারত সরকারের কাছ থেকে প্রশংসিত হয়েছিল এই ছবি। সেই ছবিকে প্রকাশ্য ‘অশ্লীল’ ও ‘প্রচারধর্মী’ বলে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে ছবিটিকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান পরিচালক নাদাভ লাপিড। জুরি বোর্ডের শীর্ষে থাকা ইজ়রায়েলি পরিচালকের এই মন্তব্য রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে।
অনুষ্ঠানে আসা সিনেমাগুলির শিল্পগুণ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রকাশ্য মঞ্চে তিনি মোদীর পছন্দের ছবিকে তিরস্কার করেছেন। বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর তীব্র সমালোচনা করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইজ়রায়েলি এই পরিচালক। নাদাভের এ হেন মন্তব্যের পর ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে নেমেছে ইফি-র জুরি বোর্ড। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ‘‘সবটাই পরিচালকের ব্যক্তিগত মতামত।’’ নিজের ছবি নিয়ে এমন সমালোচনায় ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন অভিনেতা অনুপম খের। টুইট করেছেন পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীও।
ঠিক কী বলেছিলেন নাদাভ?
চলচ্চিত্র উৎসবে আসা বিভিন্ন দেশের সিনেমা নিয়ে কথাবার্তা বলতে গিয়ে নাদাভ বলেন, ‘‘প্রতিযোগিতায় থাকা ১৫টি ছবির মধ্যে ১৪টির শিল্পগুণ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু পঞ্চদশ সিনেমা ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-কে আমি প্রচারধর্মী এবং আপত্তিকর একটি ছবি বলেই মনে করছি। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতায় এই ছবিকে রাখাটাই ঠিক হয়নি।’’
এই ছবিটি প্রসঙ্গে প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, নব্বইয়ের দশকে কাশ্মীর থেকে পণ্ডিতদের উৎখাতের বিষয় নিয়ে তৈরি এই ছবিটি ‘‘অনেক সত্যি কথাকে তুলে ধরেছে, যা এত দিন চেপে রাখা ছিল।’’ এ বার ইজ়রায়েলি পরিচালক তথা চলচ্চিত্র উৎসবের জুরির বোর্ডের চেয়্যারম্যানের এই মন্তব্যে অস্বস্তি বাড়ছে বিজেপির অন্দরে।
ছবির অন্যতম অভিনেতা অনুপম খের বলেন, ‘‘আমি চাইব ঈশ্বর ওঁকে বুদ্ধি দিক। যাতে ভবিষ্যতে কখনও তিনি নিজের ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে এই ধরনের মঞ্চকে ব্যবহার না করেন।’’ এখানেই না থেমে অনুপম আরও বলেন ‘‘আমরা এই মন্তব্যের আইনি জবাব দেব। এই ক্ষেত্রে বলতেই হচ্ছে যদি হিটলারের ‘হলোকাস্ট’ সঠিক ধরা হয়, তা হলে ঘরছাড়া কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হয়ে সওয়াল তোলা অপরাধ নয়। ওঁর এই মন্তব্য দুভার্গ্যজনক। এই পরিস্থিতির শিকার যাঁরা সে রকম লক্ষ লক্ষ মানুষকে ব্যাথিত করেছেন এ হেন মন্তব্য করে। আমি চাইব, কোনও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যর ফলে যাতে আর কোনও সাধারণ মানুষকে ভুগতে না হয়।’’
এই ছবির পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী টুইট করে লেখেন, ‘‘সত্যি আসলে ভয়ঙ্কর জিনিস, সত্যি মানুষকে মিথ্যে বলতে বাধ্য করে।’’ ইফির মঞ্চে ছবিটি নিয়ে যে বির্তক নতুন করে দানা বেঁধেছে সেই জল কত দূর গড়ায় এখন সেটাই দেখার।’’