শ্রেয়ার ছোটবেলা কেটেছে পশ্চিম এশিয়ায়। —ফাইল ছবি।
‘চুপ: রিভেঞ্জ অফ দ্য আর্টিস্ট’ ছবির সাফল্য জীবন ঘুরিয়ে দিয়েছে শ্রেয়া ধন্বন্তরির। কিন্তু মাথা ঘোরাতে পারেনি। কারণ এখনও ভুলতে পারেননি তাঁর অতীত। অতীতের সেই লড়াই। কাজের খোঁজে ১০ বছর চলেছিল সেই লড়াই। জীবনযুদ্ধ, যখন মাথায় ছাদ আর পেটে খাবার পর্যন্ত ছিল না নায়িকার।
শ্রেয়ার বয়স তখন মাত্র কয়েক মাস। বাবা-মায়ের সঙ্গে পশ্চিম এশিয়ায় চলে গিয়েছিলেন। শ্রেয়ার ছোটবেলা কেটেছিল দুবাই, বাহরিন, কাতারে। এর পর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে ভারতে চলে আসেন তিনি। যদিও বরাবর ইচ্ছা ছিল, অভিনয় করবেন।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে শ্রেয়া বলেন, ‘‘আমার কাছে ছবিতে অভিনয় বিষয়টি সহজ ছিল না। মনের গভীরে কোথাও এই ইচ্ছাটা থাকলেও প্রকাশ করতে পারিনি। কারণ আমার মতো এক জনের সিনেমায় অভিনয় করাটা সত্যিই এক অর্থে অস্বাভাবিক ছিল। আমি যে আজ এখানে, এখনও বিশ্বাস করতে পারি না।’’
পশ্চিম এশিয়া থেকে দেশে ফিরে শুরু হয় লড়াই। শ্রেয়ার কথায়, ‘‘আমার প্রথম ছবিতে অভিনয় করার আগে ১০ বছর লড়াই করতে হয়েছিল।’’ কী ভাবে সেই অসাধ্যসাধন করলেন অভিনেত্রী? এখন ভাবলে তাঁর নিজেরই খুব অবাক লাগে। শ্রেয়া বলেন, ‘‘দয়া করে জিজ্ঞেস করবেন না, কী ভাবে করেছিলাম? আমি নিজেই জানি না, কী ভাবে পেরেছিলাম। টাকার খুব অভাব ছিল। কী ভাবে এখানে ছিলাম, জানি না। প্রায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছিলাম। দিনের অনেকটা সময় কিছু না খেয়ে কাটিয়ে দিতাম। কী ভাবে তখন পেরেছিলাম, জানি না।’’
২০০৮ সালে এক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন শ্রেয়া। তখন তিনি এ দেশে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েন। প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে তেলুগু ছবি ‘জোশ’ এবং ২০১০ সালে ‘স্নেহ গীতম’ ছবিতে অভিনয় করেন। ১০ বছর পর ইমরান হাশমির বিপরীতে ‘হোয়াই চিট ইন্ডিয়া’ ছবিতে অভিনয় করেন। বলিউডে ওটাই তাঁর প্রথম ছবি।
এর পর ওটিটি প্লাটফর্মে ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’ সিরিজে অভিনয় করে শিরোনামে আসেন শ্রেয়া। ‘স্ক্যাম ১৯৯২’ সিরিজ তাঁর মুকুটে আরও একটা পালক যোগ করে। ২০২২ সালে ‘লুপ লপেটা’ ছবিতে অভিনয় করেন শ্রেয়া। সম্প্রতি দক্ষিণী সুপারস্টার দুলকের সলমনের বিপরীতে ‘চুপ: রিভেঞ্জ অফ দ্য আর্টিস্ট’ তাঁকে সাফল্য এনে দিয়েছে। সেই সাফল্যে পৌঁছনোর রাস্তা যে সহজ ছিল না, তা-ই মনে করিয়ে দিলেন শ্রেয়া।