এই পুজোয় কী পরিকল্পনা অভিনেত্রী ঊষসী রায়ের?
দেবীপক্ষের সূচনা হয়ে গিয়েছে। অপেক্ষার আর মাত্র সাত দিন। সারা দিনের কাজের ব্যস্ততা সামলে এ বার ঠিক করে ফেলতেই হবে, পুজোর ক’টা দিন সাজটা ঠিক কেমন হবে। পুজোয় নিজেকে সবচেয়ে সুন্দর ভাবে সেজে ওঠার ইচ্ছা হয় সকলেরই।
কী ভাবে সাজলে ভিড়ের মধ্যেও আলাদা দেখাবে আপনাকে? সেই হদিসই দিলেন অভিনেত্রী ঊষসী রায়। ছোট পর্দা ছেড়ে অভিনেত্রী এখন মন দিয়েছেন ওয়েব সিরিজে। পুজোর সাজ থেকে পুজোয় প্রেম— আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে আড্ডায় মজলেন নায়িকা।
ড্রেস, কুর্তি, সালোয়ার— এ সব কিছুই এখন অতীত। যদিও ফিউশনের যুগ, কিন্তু পুজোর আমেজে ঊষসীর পছন্দ শুধুই শাড়ি। তবে সেই শাড়িরও রকমফের আছে। ষষ্ঠীর দিন তাঁর একটু হালকা সাজই পছন্দ। সারা দিন ঘোরার জন্য এমন শাড়ির সঙ্গে হালকা সাদা ব্লাউজ় বেছে নিয়েছেন অভিনেত্রী। আর গরমে বড় চুল খোলা রাখার তো প্রশ্নই ওঠে না।
উষসী খাস কলকাতার মেয়ে। নিউ আলিপুরে বেড়ে ওঠা। ছোট থেকেই দুর্গাপুজোর এক অন্য রকমের উত্তেজনা। সেই উত্তজনা এখনও কমেনি। পুজোর আগে সারা শহর জুড়ে ম ম করে এক অন্য রকম গন্ধ। সেই গন্ধ এখনও উপলব্ধি করেন অভিনেত্রী। চারিদিকে আলোর রোশনাই, বড় থেকে ছোট— যে কোনও দোকানে উপচে পড়া ভিড় দেখলেই একটা অন্য রকম অনুভূতি তৈরি হয়।
প্রতিটা সাজের সঙ্গে গয়না একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখন তো অক্সিডাইস্ড গয়না বা রুপোর গয়না যে কোনও লুকের সঙ্গে মানিয়ে যায়। উষসীর ষষ্ঠীর সাজেরও সেটাই বিশেষত্ব। খোঁপার সঙ্গে হাত ভর্তি রুপোর বালা, চুড়ির সঙ্গে পছন্দসই হার। লুক সম্পূর্ণ। সারা দিন ঘুরতে হলে যত হালকা মেকআপ রাখা যায়, ততই ভাল।
ষষ্ঠীর সাজ যতই হালকা হোক না কেন, সপ্তমীর রাত একটু জমকালো না সাজলে ভাল লাগে। অনেকেই ভাবেন, পুজোয় সাদা পরবেন, তা কি ভাল দেখায়? তবে মানানসই গয়না পড়লে সব লুকই তাক লাগিয়ে দিতে পারে। এই যেমন সপ্তমীর জন্য সাদা আর সোনালির মেলবন্ধনে এমনই শাড়ি বেছে নিয়েছেন ঊষসী।
মাথায় ফুল দিতে সবাই কম বেশি ভালবাসেন। আর তা যদি লাল গোলাপ হয় তা হলে তো কোনও কথাই নেই। সাদা-সোনালির শাড়িতে সাজ যদি একটু ফিকে লাগে তা হলে লাল গোলাপ সম্পূর্ণ করে দেবে আপনার সপ্তমীর লুক।
অভিনয়ে আসার পর থেকেই সারা বছর তিনি কিছু না কিছু কিনতেই থাকেন। শ্যুটিংয়ের জন্য সারা ক্ষণই নিত্যনতুন জামাকাপড় কিনতে হয় তাঁকে। তাই বলে কি পুজোয় বাদ যাবে? তা বললে কি চলে! তবে এখন কেনার চেয়ে দেওয়ার সংখ্যা অনেকটা বেড়ে গিয়েছে।
অষ্টমী মানে পুজো একেবারে মধ্যগগনে। এ দিন নিজের সেরা সাজটাই সাজতে চান সবাই। সারা বছর শাড়ি থেকে শত হস্ত দূরে থাকেন যাঁরা, অঞ্জলি দেওয়ার সময় কিংবা সন্ধিপুজোর সময় কিন্তু মায়ের সেরা শাড়িটাই নিজের জন্য বেছে নেন তাঁরা।
পুজোয় সাজগোজ ছাড়াও প্রেম একটা বড় অংশ। তবে ঊষসীর কখনও পুজোয় প্রেম হয়নি। ষষ্ঠীতে প্রেমের শুরু আর দশমীতে মায়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রেমের বিসর্জন— নাহ্! এই চার দিনের প্রেমে কখনও মজেননি অভিনেত্রী।
পুজোর প্রেম যখন হয়নি। তাই বিশেষ মানুষের কাছ থেকে পুজোর বিশেষ উপহারও তাই মেলেনি নায়িকার। পুজোর ঠিক আগেই যে যার পথ বেছে নিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে বড়দিনে উপহার মিলেছে। কিন্তু পুজোর সেই বিশেষ শাড়ি এখনও পাওয়া হয়ে ওঠেনি। তাই অষ্টমীর প্রেমটা চেষ্টা করেও জমেনি ঊষসীর।
নবমী মানেই যেন পুজো শেষ হয়ে গেল! মনখারাপের মধ্যেও শেষ বেলায় নিজেকে সুন্দর দেখানোর চেষ্টা থাকে সকলেরই। তবে এ দিন থাকে অভিজাত সাজের সঙ্গে আধুনিকতার ছোঁয়া। তেমনই ঊষসী এ দিনের জন্য বেছে নিয়েছেন হালফ্যাশনের শাড়ি। কিন্তু চুলের কায়দা বুঝিয়ে দিচ্ছে এ দিনটা একটু অন্য রকম।
পুজোর সময় সাজগোজ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল খাওয়াদাওয়া। এই চার দিনই কব্জি ডুবিয়ে খেতে ভালবাসেন অভিনেত্রী। এই ক’দিন কোনও ডায়েট নেই।
চার দিন নিজেকে যে ভাবেই সাজানো হোক না কেন। দশমীর দিন মায়ের শাড়িতে সাজার ইচ্ছে থাকে সব মেয়েদেরই। অভিনেত্রী থেকে সাধারণ— সবারই এ দিন শুধু মা-ই ভরসা।
ছবি: দেবর্ষি সরকার
পোশাক: পরমা, রঙ্গোলি
গয়না: অরণ্য, গহেনা জুয়েলারি
স্টাইলিং: অনুপম চট্টোপাধ্যায়
মেক আপ: অভিজিৎ পাল, সানন্দা লাহা (সহকারী)
স্থান: ব্রায়ো