সানা জাভেদ, যাঁর কাছে পরাস্ত হলেন ‘টেনিস সুন্দরী’ সানিয়া। গ্রাফিক : শৌভিক দেবনাথ।
সানিয়া মির্জ়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের জল্পনার মাঝেই বিয়ে করলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার। ইনস্টাগ্রামে নিজেই জানালেন বিয়ের কথা। ভারতীয় টেনিস তারকার সঙ্গে ১৩ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল শোয়েবের। বিচ্ছেদের জল্পনা চলছে বহু দিন থেকেই। বুধবার সানিয়া তাঁর একটি পোস্টে বিচ্ছেদের ইঙ্গিত দেন, ‘‘বিয়ে কঠিন। বিচ্ছেদও কঠিন। নিজের কঠিনটাকে বেছে নিন। স্থূলতা ভাল নয়। ফিট থাকাও কঠিন। নিজের কঠিনটা বেছে নিন। ঋণের মধ্যে থাকা কঠিন। অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা কঠিন। নিজের কঠিনটা বেছে নিন। জীবন কখনও সহজ নয়। এটা সব সময় কঠিন। কিন্তু আপনি আপনার কঠিনটা বেছে নিতে পারেন। বেছে নিন।’’ সানিয়াকে জীবনে ‘কঠিন’টা বাছতে বাধ্য করলেন কে? কার কাছে স্ট্রেট সেটে হেরে গেলেন সানিয়া?
সানা জাভেদ, থুরি সানা শোয়েব মালিক। যদিও দিন কয়েক আগেও সমাজমাধ্যমে সানা জাভেদ নামেই পরিচিতি ছিল তাঁর। কিন্তু শনিবার সকাল থেকেই বদলে গেল সানার পরিচয়। ইনস্টাগ্রামে অনুরাগী সংখ্যা প্রায় ৮.৪ মিলিয়ন বা ৮০ লাখেরও বেশি। পাক ক্রিকেট তারকা শোয়েব মালিকের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করলেন পাক টেলিভিশনের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। এই উপমহাদেশের ‘টেনিস সুন্দরী’ সানিয়া মির্জ়া। তবে তাঁকে মাত দিয়ে দিলেন পাকিস্তানের সানা। কিন্তু কে এই সানা জাভেদ? এক বছরের কম সময়ের প্রেম, তাতেই সানিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ ১৩ বছরের সংসার ভেঙেচুরে শেষ। শোয়েব যেন ধেয়ে গেলেন সানার দিকে!
২০১২ সালে সানা নিজের কেরিয়ার শুরু করেন পাকিস্তানি সিরিয়ালের মাধ্যমে। নাম ছিল ‘শের-ই-যাত’। তার পর একের পর পর এক সিরিয়াল ও বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ২০১৩ সালে ‘বেহাদ’ টেলিফিল্মে ফওয়াদ খানের সঙ্গেও অভিনয় করেছেন তিনি। আতিফ আসলামের সঙ্গে মিউজ়িক ভিডিয়ো জনপ্রিয় হয়েছিল তাঁর। তবে সাফল্য আসে ২০১৭ সালে। ‘কহানি’ সিরিয়ালের মাধ্যমে ঘরে ঘরে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন সানা। এখনও পর্যন্ত সানা মোট ২৫টি ধারাবাহিক, চারটি টেলিফিল্ম এবং চারটি মিউজ়িক ভিডিয়োয় অভিনয় করেছেন। বর্তমানে সানার মোট সম্পত্তি ৮৩ কোটি টাকারও বেশি। উল্লেখ্য, সানিয়া মির্জ়া মোট সম্পত্তি এখন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে।
সৌদি আরবে জন্ম সানার। স্কুল শেষ করার পর থেকেই তিনি করাচির বাসিন্দা। সফল অভিনয় জীবন তৈরি করে ২০২০ সালে বিয়ে করেন পাকিস্তানি গায়ক ও অভিনেতা উমের জেসওয়ালকে। করাচিতে নিজের বাড়িতে বিয়ে হয় সানা-উমেরের। রাতারাতি পাকিস্তানের জনপ্রিয় তারকা দম্পতির তকমা পান তাঁরা। কিন্তু বেশি দিন টিকল না সেই সংসার। পরকীয়ায় জড়ালেন সানা। শেষমেশ শোয়েবের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধলেন তিনি। শোনা যায়, তিনি নাকি খুব বেশি মানুষের সঙ্গে মিশতে পারেন না। বন্ধুদের সঙ্গে হইহুল্লোড় করার চেয়ে বাড়িতেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি নিয়মিত ‘জিতো পাকিস্তান লিগ’-এ সঞ্চালনা করতেন সানা।
সানিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর শোয়েব যে সানাকে বিয়ে করতে পারেন, তা নিয়ে চাপা গুঞ্জন ছিলই। তার মধ্যেই শনিবার চার এক হাত হওয়ার খবর প্রকাশ্যে এল। তবে সানাকে বিয়ে করলেও সানিয়ার সঙ্গে যে শোয়েবের বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে এমন খবর প্রকাশ্যে আসেনি। শোয়েবের পরনে সাদা শেরওয়ানি, ওড়না। অন্য দিকে, সানা জাভেদের পরনে আইভরি রঙের লেহঙ্গা, গলায় ভারী গয়না। স্ত্রীকে জড়িয়ে হাসিমুখে পোজ় দিয়ে ছবি তুলে সেটা পোস্ট করেন শোয়েব। একই ছবি নিজের সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন সানা। দু’জনেই লেখেন, ‘‘আলহামদুল্লিহা, ঈশ্বর আমাদের জুটিতে সৃষ্টি করেছেন।’’
২০১০ সালে পাকিস্তানের শিয়ালকোটে বিয়ে হয় সানিয়া-শোয়েবের। একেবারে মুসলিম রীতিনীতি অনুযায়ী বিয়ে করেন তাঁরা। ২০১৮ সালে জন্ম হয় সানিয়া-শোয়েবের পুত্রসন্তানের। তার বছর পাঁচেকের মধ্যে অন্য কারও সঙ্গে ঘর বাঁধলেন তিনি। ছেলেকে নিয়ে বছরের বেশির ভাগ সময়টা এখন দুবাইতে কাটান সানিয়া।