শ্যাম বেনেগাল। —ফাইল চিত্র।
এই তো কয়েক দিন আগেই ওঁর জন্মদিনের ছবি দেখলাম সমাজমাধ্যমে। নাসির, শাবানা, রাজিত কপূর, দিব্যা দত্ত, কুণাল কপূরেরা ঘিরে আছেন শ্যামজিকে। কত আনন্দ আর হইচই ওই ফ্রেমে। ওঁকে অবশ্য একটু দুর্বল দেখাচ্ছিল, কিন্তু হাসিমুখে কোনও মালিন্য ছিল না। আর আজ এই মাত্র দুঃসংবাদটি পেয়ে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি। ভাবতেও পারিনি এমনটা ঘটবে। যদি বুঝতে পারতাম অবশ্যই গিয়ে দেখা করে আসতাম একটিবার। এই আফশোস যাওয়ার নয়।
ওঁর হাত ধরেই আমার প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো ‘জুনুন’ ছবিতে। কিছুই জানতাম না, বুঝতাম না। শ্যামজি আমাকে বুঝিয়ে দিতেন কী ভাবে ক্যামেরার সামনে হাঁটতে হবে, চলাফেরা করতে হবে আড়ষ্টতা কাটিয়ে। একটা দুঃখ অবশ্য আমার ছিল, ওঁর সঙ্গে (জুনুনে) সেই ছোট্ট রোলটির পরে আর কখনও সুযোগ হয়নি একসঙ্গে কাজ করার। এত বড় মাপের চলচ্চিত্র পরিচালকের সঙ্গে আর কাজ না-করার সেই বেদনা রয়েই যাবে। তবে ওঁর ছবিতে যাঁরা নিয়মিত এবং দুর্দান্ত কাজ করেছেন সেই নাসির, শাবানা— এঁরা সবাই আমার বন্ধু। বিশেষ করে আমার প্রিয় বন্ধু স্মিতা পাটিলের কথাও আজ মনে পড়ে যাচ্ছে। কী অসামান্য কাজ স্মিতা করেছে ওঁর সঙ্গে, আমরা সবাইতার সাক্ষী।
বন্ধুদের মাধ্যমে আমি ওয়াকিবহাল থাকতাম, কী করছেন তিনি। আজ তাঁর তৈরি একের পর এক অমোঘ সব ফ্রেম মাথায় ভাসছে। সেই ছবিগুলি এতই দৃপ্ত যে, মন থেকে মুছে যাবে না কখনওই। ‘ভূমিকা’, ‘নিশান্ত’-এর মতো কতই না অমর ছবি শ্যামজি আমাদের উপহার দিয়ে গিয়েছেন। পরবর্তী কালে তিনি ছোট পর্দার জন্যও যখন কাজ করেছেন, তা অসামান্য হয়ে উঠেছে। আজ গোটা দেশের সিনেমাপ্রেমীদের কাছে বড়ই শোকের দিন।
অনুলিখন: অগ্নি রায়