জামাইষষ্ঠী স্পেশাল পর্বে ঋদ্ধিমা-গৌরব। সংগৃহীত চিত্র।
যত গরম, তত চওড়া হাসি শাশুড়িদের। যাক, এ বার জামাইয়ের হাতে কার্বাইডে পাকানো আম, জাম, কাঁঠাল তুলে দিতে হবে না। বাবাজীবনেরা অবশ্য আপ্যায়নের কথা ভেবে যতটা খুশি, ততটাই শঙ্কিত। একে সবাই শরীর সচেতন। আগের মতো কব্জি ডুবিয়ে ভূরিভোজের দিন নেই। তবু, ওই দিনের মাহাত্ম্যই আলাদা। তা ছাড়া, এই প্রজন্ম ফিউশন রান্না চেটেপুটে খায়। তা হলে এ বারের জামাইষষ্ঠীর মেনু কেমন হতে পারে? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন ঢুঁ মেরেছিল গৌরব চক্রবর্তী-ঋদ্ধিমা ঘোষের রান্নাঘরে। সেখানে পা রেখেই চোখ কপালে। পুরো এলাহি আয়োজন। তার মধ্যে কোমরে আঁচল গুঁজে রাঁধছেন অভিনেত্রীই। পাশে হাতে হাতে জোগান দিচ্ছেন তাঁর অভিনেতা স্বামী।
রাজারহাটের একটি স্টুডিয়োয় গৌরব-ঋদ্ধিমার অস্থায়ী রান্নাঘর। সৌজন্য জি বাংলার নতুন কুকারি শো ‘রন্ধনে বন্ধন’।
বাইরের ঝলসানো আবহাওয়া স্টুডিয়োর ভিতরে উধাও। কর্তা-গিন্নির পোশাকে রংমিলন্তি। পরনে রানি রঙের ধুতি-পাঞ্জাবি ও শাড়ি। সেটে ভাল ভাল রান্নার খোশবাই। যত্নে সাজানো ফ্রিজ, রকমারি সব্জি, অভেন। মডিউলার কিচেনে যেমন থাকে। প্রতিযোগীরা সদ্য একপ্রস্ত রান্না করে বিশ্রামে। ঋদ্ধিমা তখন জামাইষষ্ঠীর বিশেষ পর্বের জন্য বোঁদের পায়েস বানাচ্ছেন! পাত্রে দুধ ঘন হতেই বাটি ভর্তি বোঁদে স্ত্রীর দিকে এগিয়ে দিলেন গৌরব। বাড়িতেও এ ভাবেই রান্নাঘরে যুগলবন্দি দেখা যায়? আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্নে করতেই ঝলমলিয়ে উঠলেন উভয়ে। গৌরব বললেন, ‘‘অনেকটাই। ঋদ্ধিমা আগে থেকেই রকমারি খাবার বেক করে। এখন কুকারি শো-এর দৌলতে নতুন নতুন রান্না শিখেছে। আমি বাড়িতেও সহকারী। আর খাবার চেখে দেখি।’’ সঙ্গে সঙ্গে অভিনেত্রীর যোগ, বাড়িতে তাঁরা এত সেজেগুজে থাকেন না। আর প্রতি দিন এত অতিথিও আসেন না।
এই প্রথম ছোট পর্দায় যুগলে। তাও আবার সঞ্চালনায়...তড়িঘড়ি ঋদ্ধিমার দাবি, ছেলে ধীর খুব ছোট্ট। রাজি হওয়ার আগে তিনি ভেবেছিলেন। নতুন বিষয়ের হাতছানিও এড়াতে পারেননি। তার উপরে অনেক দিন কাজ থেকে দূরে। ‘‘সব মিলিয়ে যাকে বলে কামব্যাক’’, হেসে বললেন তিনি। গৌরব তত ক্ষণে চেয়ারে আধশোয়া। জানালেন, টানা দাঁড়িয়ে থাকার পর এটুকুই তাঁর আরাম। সে দিন এক জোড়া মা ও মেয়ে এসেছিলেন সেটে। জামাইষষ্ঠী স্পেশাল পর্বের জন্য রান্না রাঁধতে। মেনুতে মাটন। দুই তরফের মধ্যে জোর লড়াই, কে আগে ঠিক ভাবে রান্না শেষ করবেন। সে দিকে দেখতে দেখতে ঋদ্ধিমার বক্তব্য, ‘‘পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। মা-ও আমাদের জন্য এ ভাবে রকমারি পদ রাঁধতেন। অনুষ্ঠানের দিন সকাল থেকে বিশাল আয়োজন।’’ তিনি থামতেই গৌরব বাকিটা বললেন, ‘‘শাশুড়ি মা নেই। উদ্যাপনে ভাটা পড়েনি। শ্বশুরমশাই ঠিক আগের রীতি মেনে যা যা শাশুড়ি মা খাওয়াতেন, তাই-ই খাওয়ান। রুপোর থালা-বাসনে সাজিয়ে।’’
আরও একটি বিষয়ে দারুণ খুশি দম্পতি। উপহারের দেওয়া-নেওয়াটা হয়তো সে ভাবে হয় না। কিন্তু এ দিন ঘোষ বাড়িতে চক্রবর্তী পরিবারের বড় ছেলে জামাই কম, বাড়়ির ছেলে বেশি। আন্তরিকতায় কোনও ঘাটতি নেই। উল্টে জামাইয়ের সঙ্গে মেয়েও সমান সম্মান, আপ্যায়ন পান।