তৃণমূলে শ্রাবন্তী?
ঘটনা ১: ১১ নভেম্বর সকাল থেকেই তোলপাড়। টুইট করে বিজেপি ছাড়ার ঘোষণা শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের। বিরোধী দলের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, ‘বাংলার উন্নয়নের জন্য বিজেপি আন্তরিক নয়। বাংলার জন্য কাজ করার মনোভাবের অভাব রয়েছে তাদের।’
ঘটনা ২: ঠিক পাঁচ দিনের মাথায় ফের ঝাঁকুনি। এক মঞ্চে মদন মিত্র আর বাংলা ছবির ‘দুষ্টু মিষ্টি নায়িকা’! উপলক্ষ, অরিন্দম শীল পরিচালিত হিন্দি গানের ভিডিয়ো ‘ম্যায় হীর ভে’-র আনুষ্ঠানিক মুক্তি। উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে ঘিরে সে দিন যত না ক্যামেরার আলো চমকেছে, তার চেয়েও বেশি আলো ছড়িয়েছে মদন-শ্রাবন্তীর যুগলবন্দি। তাঁদের হাসি-ঠাট্টা আভাস দিয়েছে, ‘কিছু তো বটে...’!
ঘটনা ৩: ২৯ নভেম্বর, সোমবার পদ্মফুল ছেড়ে পাকাপাকি তৃণমূলে শিবিরে অভিনেত্রী। বাসন্তীতে চার বিধায়কের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন তিনি। শাসক দলের শওকত মোল্লার দাবি, এই মঞ্চেই তিনি নাকি ঘাসফুল হয়ে ফুটতে চলেছেন নতুন করে!
অতএব? বিজেপি সফর শেষ শ্রাবন্তীর। দুইয়ে দুইয়ে চারের চেনা হিসেব মিলিয়ে দিলেন তিনিই। সোমবার, শাসক দলের গোসাবা মঞ্চে কী করলেন শ্রাবন্তী? মন থেকে বাসন্তীর উন্নতি চেয়েছেন। গলা ছেড়ে শুনিয়েছেন তাঁর ‘জোশ’ ছবির গান, ‘খুঁজেছি তোকে রাত বিরেতে’। আশ্বাস দিয়েছেন, তাঁকে ডাকলে আবারও তিনি আসবেন। এবং আরও সুন্দর সুন্দর গান শোনাবেন!
অভিনেত্রীর তৃণমূলে যোগ দেওয়া ছিল শুধুই সময়ের অপেক্ষা। তাঁর দলত্যাগের পরেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, বিজেপি করলে বাংলা ছবিতে কাজ পাওয়া যায় না। সেই কারণেই শ্রাবন্তী দল ছাড়লেন। তার উল্টো পিঠে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেছিলেন, ‘‘দলটা (বিজেপি) জঞ্জাল। ওই দলে থাকা মুশকিল। তার উপরে শ্রাবন্তী মহিলা। তাঁর পক্ষে থাকাই সম্ভব নয়।’’
শ্রাবন্তী নিজেও কি পেরেছিলেন তৃণমূলকে মন থেকে মুছে ফেলতে? সম্ভবত পারেননি। তাই দোল উৎসবে দলের ভেদ ভুলে রং খেলায় মেতেছিলেন মদন মিত্রের সঙ্গে। সোমবার তাঁর কালো সালোয়ার-কামিজে জ্বলজ্বল করতে থাকা শাসকদলের ব্যাজ প্রমাণ করে দিল, বৃত্ত সম্পূর্ণ।