প্রমিতা চক্রবর্তী।
অভিনয়ের ফাঁকেই শাসকদলের হয়ে প্রচার। কী বলছেন বাংলার মানুষ? বাংলায় আবার ঘাসফুল ফুটবে না পদ্মফুল? আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে মুখ খুললেন প্রমিতা চক্রবর্তী।
প্রশ্ন: কী কারণে অভিনয়ের ফাঁকে নির্বাচনী প্রচার?
প্রমিতা: শাসকদলের থেকে ডাক পেলাম। মনে হল যোগ দেওয়া উচিত। তাই স্ব-ইচ্ছায় প্রচারে সামিল হলাম।
প্রশ্ন: বিরোধী শিবিরও ডেকেছিল?
প্রমিতা: বিরোধী পক্ষ নিয়ে কিচ্ছু বলব না।
প্রশ্ন: প্রচারে বেরিয়ে কী দেখলেন?
প্রমিতা: দেখলাম, এই একটি মাধ্যম কত সহজে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়! প্রচারে বেরিয়ে মহিষবাথান সহ বেশ কিছু গ্রাম ঘুরলাম। এত দিন স্টেজ শো করতে গিয়ে হয়তো এই সব জায়গায় গিয়েছি। অনুষ্ঠান করেছি। চলে এসেছি। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা শোনা হয়নি। এ বার সেই অজ্ঞিজ্ঞতা হল। তাছাড়া, আমার কাঁধেও অনেকটা গুরু দায়িত্ব ছিল। শাসকদলের সঙ্গে জনতার যোগ স্থাপন। সেই কাজ করতে গিয়ে ওঁদের রোজের জীবন, চাওয়া-পাওয়ার কথা শুনলাম। এই অভিজ্ঞতা বলে বোঝানোর নয়।
প্রশ্ন: বাংলার মানুষের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের সংযোগ স্থাপনে তারকাদের লাগে?
প্রমিতা: এটা দল বলতে পারবে। আমি নই। আমাদের সাধারণ মানুষ যেহেতু চট করে চিনতে পারেন, রোজ ছোট পর্দায় দেখেন, ভালবাসেন তাই অনেক কথা ভাগ করে নেন আমাদের সঙ্গে। তাঁদের প্রয়োজনের কথা বলেন। যেটা আমরা পৌঁছে দিই নেতা-মন্ত্রীদের কাছে।
প্রশ্ন: আপনারা তাঁদের কী বলেন?
প্রমিতা: দলের নিয়মনীতি জানানো আমার দায়িত্ব। আমি শুনি বেশি, বলি কম। কারণ, আমার একেবারেই অভিজ্ঞতা নেই।
প্রশ্ন: প্রার্থী সুজিত বোসের সঙ্গে অনেক প্রচারে গিয়েছেন। চেনা ছিল?
প্রমিতা: সুজিত বোস কেন, কারওর সঙ্গেই কোনও চেনাশোনা ছিল না। প্রচারে বেরিয়ে শাসকদলের প্রার্থী, নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে পরিচয়ের সৌভাগ্য হয়েছে। কাছ থেকে দেখলাম তাঁদের।
প্রশ্ন: রাজনীতিবিদের জীবন কেমন?
প্রমিতা: দূর থেকে জানতাম, ওঁরা ব্যস্ত। প্রচারে বেরিয়ে দেখলাম, ওঁরা সারাক্ষণ ব্যস্ত! একটা মাথায় অনেক বিষয় ধরে রাখতে হয়। এক সঙ্গে অসংখ্য কাজ করছেন। গোটা বাংলা সামলাচ্ছেন। এঁরাই প্রকৃত মাল্টিটাস্কার।
প্রশ্ন: বাংলায় ঘাসফুল ফুটবে না পদ্মফুল?
প্রমিতা: এটা কি আমি বলতে পারি! তবে এটা দেখলাম, বাংলার মানুষ শাসকদলকে নিয়ে অখুশি নন। তাঁরা কিন্তু অনেক কিছু পেয়েছেন। সে কথা অকপটে জানিয়েওছেন। হয়তো আরও কিছু চাহিদা আছে তাঁদের। সেগুলো মিটলে আরও উন্নত জীবন যাপন করতে পারবেন। তার মানে এটা নয়, ওঁরা রাজ্য সরকারের প্রতি বিরূপ। জোর করে নয়, স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই এ কথা জানিয়েছেন বাংলার মানুষ।
প্রশ্ন: কাজ করতে গেলে রাজনীতিতে যোগ দিতেই হয়?
প্রমিতা: বৃহত্তর ক্ষেত্রে নিজেকে মেলে ধরতে গেলে মনে হয় দরকার পড়ে। আগেই বলেছি, শো করতে গিয়ে সাধারণের ভালবাসা পেয়েছি। কিন্তু তাঁদের সমস্যা জানতে পারিনি। তাঁদের জীবন দেখতে পারিনি। ঘরের ভিতরেও যাওয়ার সুযোগ ঘটেনি। রাজনীতি কিন্তু সেই সুযোগ করে দেয়।
প্রশ্ন: পোক্ত রাজনীতিবিদের মতো কথা! সক্রিয় রাজনীতিতে কবে আসছেন?
প্রমিতা: প্রত্যক্ষ রাজনীতি করতে গেলে মিনিমাম একটা বয়স, অভিজ্ঞতা, দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষমতা, পড়াশোনা লাগে। এ গুলোর কোনওটা এখনও আমার হয়নি। তাই আপাতত সক্রিয় রাজনীতি নিয়ে কিছুই ভাবছি না। পুরোটাই সময়ের উপর ছেড়ে দিয়েছি।
প্রশ্ন: রুদ্রজিৎকে একবারও প্রচারে দেখা যায়নি। ডাক পাননি?
প্রমিতা: (একটু থমকে) আসলে ও শ্যুটিং থেকে সময় বের করতে পারেনি। ডাকও পায়নি, এটাও ঠিক।
প্রশ্ন: প্রমিতা বেশি জনপ্রিয় মুখ?
প্রমিতা: (হেসে ফেলে) এমা! একেবারেই না। কেন ও ডাক পেল না, এটা সত্যি আমার কাছেও ধোঁয়াশা!