পার্নো মিত্র।
সুনেত্রা সুন্দরমকে নিয়ে আগ্রহী শহর কলকাতা। কারণ, শহরে বা গ্রামের অসংখ্য নারী সুনেত্রার মতোই রাস্তাঘাটে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে না পারার যন্ত্রণায় ভোগেন। এই সমস্যাই পরিচালক শিব রাম শর্মা আগামী ছবি ‘সুসু’র বিষয়। স্বাভাবিক ভাবেই ছবির গল্প সাড়া ফেলেছে বিনোদন দুনিয়ায়, সাধারণের মনে। বুধবার প্রকাশ্যে ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘সুনেত্রা’ ওরফে পার্নো মিত্রর ফার্স্ট লুক। ছাপা সালোয়ার-কামিজ, ওড়নায় সেজে ওঠা সুনেত্রা সাধারণ নারীর প্রতিনিধি। কানে বড় ঝুমকো রিং। খোলা চুল, কাঁধে ব্যাগ তাঁর। এ দিন থেকেই ছবির শ্যুটও শুরু।
রূপটান নিতে নিতেই আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে ফোনে কথা অভিনেত্রীর। তখনই জানালেন, ‘‘মেয়েদের ঋতুস্রাব নিয়ে একাধিক ছবি হয়েছে। কিন্তু টয়লেট করার সমস্যা নিয়ে শুধু বাংলায় নয়, মনে হয় সর্ব ভারতীয় স্তরে প্রথম ছবি হতে চলেছে ‘সুসু’। আরও ভাল লাগছে, এক জন পুরুষ প্রথম মেয়েদের এই সমস্যা অনুভব করলেন। তাকে ক্যামেরাবন্দি করতে চলেছেন।’’
পার্নোর মতে, রাস্তায় টয়লেট করা শুধুই মেয়েদের নয়, পুরুষদেরও সমস্যা। তাঁরাও কিন্তু প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার আগে আড়াল খোঁজেন। টয়লেট ব্যবহার করতে পারলে খুশি হন। না পারলে অগত্যা পথে-প্রান্তরেই মূত্রত্যাগ করেন। কিন্তু মেয়েরা সেটাও পারেন না। ফলে, তাঁদের সমস্যা আরও বেশি। পার্নো কোনও দিন এই সমস্যায় ভুগেছেন? ‘‘ভুগিনি আবার। এ তো রোজের সমস্যা!’’, বক্তব্য পার্নোর। অভিনেত্রীর জানান, বিশেষ করে আউটডোর শ্যুটিং বা গ্রাম-গঞ্জে মাচা করতে গিয়ে এই সমস্যায় বেশি ভুগেছেন। তখন মাঝ রাস্তায় যাতে বাথরুম না পায় তার জন্য পর্দার ‘সুনেত্রা’ কম জল খান। গ্রামবাসীদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের টয়লেট ব্যবহার করেন। পার্নোর দাবি, গ্রামে তবু সমস্যার সমাধান হয়। শহরে সমস্যা অনেক বেশি।
তিনি জানিয়েছেন, ছবির সুনেত্রার মতো যাঁরা কিডনির রোগী তাঁদের সমস্যা আরও মারাত্মক। তাঁরা বাথরুম চাপতে পারেন না। জোর করে চাপলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। যেমন, পার্নোর মা অসুস্থতার কারণে রাস্তায় বেরোনোর সময় ডায়পার পরে নেন। পর্দার মতোই পার্নো কি বাস্তবেও ভুক্তভোগী নারী-পুরুষকে একত্রিত করে বিষয়টিকে আন্দোলনের রূপ দেবেন? ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীও এক জন নারী। তিনি যদি ছবিটির পৃষ্ঠপোষকতা করেন তা হলে এই ছবি ঘিরে সচেতনতা আরও বাড়বে?
অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘আমি সমাজসেবী নই। সমাজশাসকও নই। তাই আমি হয়তো সমস্যাকে আন্দোলনের রূপ দিতে পারব না। কিন্তু এই ছবির মাধ্যমে আমরা সমাজকে, সমাজের প্রতি শ্রেণির মানুষের কাছে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতেই পারি। সেটিই করতে চলেছে টিম ‘সুসু’।’’ তিনি এও জানিয়েছেন, ছবির পৃষ্ঠপোষকতা প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী করবেন কিনা জানা নেই। তবে ছায়াছবি সব সময়েই সমাজের প্রতিবিম্ব। তিনি বিশ্বাস করেন, শিব রাম শর্মার এই ছবিটিও নিজ গুণে সেই দায়িত্ব পালন করবে।