প্রথম ওয়েব সিরিজ় ‘শ্বেতকালী’ নিয়ে আড্ডায় ঐন্দ্রিলা সেন। ছবি : ইনস্টাগ্রাম।
শিশুশিল্পী হিসাবে টলিউডে তাঁর যাত্রা শুরু। ছোট পর্দার সফল অভিনেত্রী তিনি। বেশ কিছু বছর হল বড় পর্দায় শুরু হয়েছে নায়িকা ঐন্দ্রিলা সেনের যাত্রা। এরই মধ্যে মুক্তি পেতে চলেছে তাঁর অভিনীত প্রথম ওয়েব সিরিজ় ‘শ্বেতকালী’। সিরিজ় মুক্তির আগে আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা।
প্রশ্ন: শিশুশিল্পী থেকে সিরিয়ালের নায়িকা, তার পর সিনেমা। এ বার সিরিজ়— নিজের যাত্রাকে এক কথায় কী বলবেন?
ঐন্দ্রিলা: চমকপ্রদ যাত্রা আমার। আমার জীবনে যা কিছু হয়েছে সব কৃতিত্বই মা এবং বাবার। আগেও বলেছি, এখনও বলব। আামায় কোনও পরিশ্রম করতে হয়নি। আমার ভাগের পরিশ্রম (স্ট্রাগল) করেছে মা-বাবা। আমায় কারও দরজায় গিয়ে কাজ চাইতে হয়নি ভগবানের আশীর্বাদে। ছোটবেলার জার্নিটা মা-বাবার তৈরি করে দেওয়া। সেই তৈরি করে দেওয়া জায়গাটা আমি ভাল ভাবে বজায় রাখতে চাই। এই নতুন যাত্রাটা উপভোগ করতে চাই। ভগবান আর আমার বাবা যেন সব সময় আশীর্বাদ করে। লড়াই তো সবে শুরু।
প্রশ্ন: অনেকেই বলেন, অঙ্কুশ ‘বয়ফ্রেন্ড’ হওয়ায় আপনার নাকি সুবিধা হয়েছে। এমন বক্তব্য শুনলে কি খারাপ লাগে?
ঐন্দ্রিলা: না আমার লাগে না। ১২ বা ১৩ বছর আগে তো ভাবিনি যে, অঙ্কুশকে ব্যবহার করব, ওকে ধরি— এমন উদ্দেশ্যে তো ওকে দেখিনি। একটা মানুষকে ভাল লাগত, সেখান থেকে বন্ধুত্ব। এখন সে আমার ভালবাসার মানুষ। এখন যদি আমি ওর জন্য ভাবি, বা ও আমার জন্য ভাবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। অঙ্কুশ আর আমি একটা কথা বলতে বলতে ক্লান্ত যে, মানুষের ভুল ধারণা, আমি ওর সঙ্গে ছাড়া আর কারও সঙ্গে কাজ করব না। প্রত্যেকের সঙ্গে কাজ করতে চাই। ‘শ্বেতকালী’ তার বড় প্রমাণ। অনেক সময় এমন হয় যে, একটা চরিত্র শুনে মনে হল এটাতে অঙ্কুশকে মানাবে, কিন্তু বলতে দ্বিধাবোধ হয়। তখন হয়তো সেই প্রযোজনা সংস্থা থেকেই বলল এই চরিত্রে আমরা অঙ্কুশকে ভাবছি, উনি যদি করেন। তখন আমি হয়তো ওর সঙ্গে কথা বলে নিই। এখনও অবধি যা যা কাজ করেছি, আমরা কেউ কাউকে এগিয়ে দিইনি। ভবিষ্যতে আমার কোনও চরিত্র শুনে ওকে সঠিক মনে হলে নিশ্চয়ই বলব। অঙ্কুশও তাই করবে। ও সাম্প্রতিককালে কী করেছে জানেন?
প্রশ্ন: কী করেছেন?
ঐন্দ্রিলা: এক জন পরিচালক চিত্রনাট্য শোনাতে এসেছিলেন। যেখানে নায়িকার চরিত্রে আমায় হয়তো একটুও মানাবে না। তবু তাঁরা আমায় আর অঙ্কুশকে নিতে চেয়েছিলেন। ও সেটা শুনে স্পষ্ট বলে, তোমরা জুটি ভেবে এমনটা বলছ। কিন্তু এই চরিত্রে একদমই ঐন্দ্রিলাকে মানাবে না। অন্য নায়িকা খোঁজো। এটা শুনলে তো আমার রাগ হওয়ার কথা। কিন্তু আমি তো তা করিনি। মজার ছলে বলেছিলাম, ভালই তো কাঁচি করলে (হাসতে হাসতে বললেন)। আমার একটা সময় এই ভয়ও হয়েছিল যে, আমাকে আর অঙ্কুশকে একসঙ্গে দর্শক পছন্দ করবেন তো? কারণ অঙ্কুশের নিজের পছন্দ ছিল, আমার আর বিক্রমের (বিক্রম চট্টোপাধ্যায়) জুটিকে। বরং সম্প্রতি অঙ্কুশ আমায় বলেছে, মেনে নাও তোমায় কোনও ছেলে পাত্তা দেয় না। এটা বরং আমার একটু মনে ও গায়ে লেগেছে।
প্রশ্ন: অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা, বনি-কৌশানী— জুটিরা নাকি প্যাকেজে আসে? এটা সত্যি?
ঐন্দ্রিলা: হ্যাঁ, অনেকটা হেয়ার, মেকআপ আর কস্টিউমের মতো। কারা কে কী ভাবে কাজ করছে বলতে পারব না। প্যাকেজটা আমি ঠিক বুঝতে পারি না। এখনও অবধি আমার আর অঙ্কুশের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আলাদা। আর তা ছাড়া যদি প্যাকেজই হত, তা হলে ‘শ্বেতকালী’-তে সাহেব ভট্টাচার্যর পরিবর্তে অঙ্কুশ থাকত। ‘শিকারপুর’-এ সন্দীপ্তা সেনের পরিবর্তে আমি থাকতাম। না, আমাদের কোনও প্যাকেজ নেই। দু’জনের কাজই আলাদা আলাদা।
প্রশ্ন: কিছু দিন আগেই ‘সাজঘর’-এর শুটিং শেষ করলেন। প্রসেনজিৎ চট্টপোধ্যায়ের সঙ্গে নাকি রোম্যান্স করতে হয়েছে?
ঐন্দ্রিলা: হ্যাঁ, দারুণ লেগেছে। আমি তো বুম্বাদার সঙ্গে রোম্যান্স করব বলে হাত খুলে দাঁড়িয়েছিলাম। বরং বুম্বাদার অস্বস্তি হচ্ছিল। খালি বলত, কী করে যে আমি তোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের অভিনয় করি! তার পর নিজেই ভেবে বলত, এই ভাবে করি চল। আমিও বলতাম, হ্যাঁ হ্যাঁ হয়ে যাবে চাপ নেই। অঙ্কুশ আবার বসে বসে সেই শুটিং দেখত। তা দেখে অঙ্কুশের একটাই বক্তব্য, রোম্যান্স এত বছর ধরে বিক্রম আর আমি করে এসেছি। এই দু’জনকে বাদ দিয়ে তোমার একটা ‘হট্’ ছেলে জুটল না। শেষে বুম্বাদা, যাঁকে তুমি বাবার মতো দেখো, তার সঙ্গে রোম্যান্স করতে হচ্ছে। আমি বলতাম, এটাই তো আমার লক্ষ্য ছিল। কিন্তু সব মিলিয়ে অসাধারণ অভিজ্ঞতা।