অতিমারির প্রথম পর্বে, গত বছরই বিয়ে সেরেছেন দিগন্ত।
জটায়ু থাকলে নির্ঘাত বলতেন, বিবাহ-অভিযানে বাজিমাত্!
তিনি বিয়ে করেছেন। এক-আধ দিন নয়। গোটা একটা বছর আগে! গাঁধী জয়ন্তীর দিন, শুক্রবার বারবেলায় সেই রহস্য ফাঁস। তিনি, দিগন্ত বাগচী নিজেই বোমা ফাটালেন ফেসবুকে।
হতবাক গৌরব চট্টোপাধ্যায়, তুলিকা বসু, সীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, রূপাঞ্জনা মিত্র-সহ টলিপাড়ার অনেকেই। প্রশ্ন একটাই। কোন ফাঁকে এই শুভ কাজটি হল?
আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেতা জানিয়েছেন- অতিমারির প্রথম পর্বে, গত বছরই তিনি বিয়ে সেরেছেন। পাত্রী শর্মিষ্ঠা সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত। একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে আলাপ। সেই আলাপই গড়াল ভাললাগায়। তার পরেই অল্প সময়ের সিদ্ধান্তে বিয়ে। সে সময়ে নাকি তাঁর বিয়ের খবর জানতেন ঠিক তিন জন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে ফেসবুকের স্টেটাস বদলাতে গিয়েই বিয়ের খবর ফাঁস করেন দিগন্ত।
জীবনের নানা ওঠাপড়ায় বিপর্যস্ত দিগন্তের পরিবার। বাবাকে হারিয়েছেন। গুরুতর অসুস্থ অভিনেতার মা-ও। ‘‘সব মিলিয়ে অবসাদে ভুগতে শুরু করি। ভীষণ অসহায় লাগছিল। তখনই ঘটনাচক্রে আলাপ শর্মিষ্ঠার সঙ্গে। কথাবার্তা কিছুটা এগোতেই এক দিন আমার মায়ের সঙ্গে ওর পরিচয় করিয়ে দিই। দুই পরিবারের জানাশোনা হয়। তার পরেই বিয়ে’’, বলছেন দিগন্ত।
প্রেম করার সুযোগ পাননি, কবুল করেছেন দিগন্ত নিজেই। তার আগেই সকলের কথা মেনে আইনানুগ বিয়ে সেরে নেন তাঁরা। অতিমারির কারণে অনুষ্ঠানে দিগন্তের তরফ থেকে উপস্থিত ছিলেন তাঁর মা। হুইল চেয়ারে বসিয়ে তাঁকে নিয়ে এসেছিলেন দিগন্ত। এ ছাড়া ছিল শর্মিষ্ঠার পরিবার।
চমক ছিল বৌ আনার দিনেও। শর্মিষ্ঠাকে আনতে যাবেন বলে অভিনেতা পরিচালকের থেকে আগাম দু’ঘণ্টা ছুটি চেয়ে নেন। সেই মতোই গোধূলি লগ্নে বৌ নিয়ে ঘরে ফেরা। সে পর্ব মিটতেই ফের স্টুডিয়োয় ফিরে চুপচাপ ডুবে যান অভিনয়ে।
জনপ্রিয় অভিনেতাকে স্বামী হিসেবে পেয়েছেন। কতটা খুশি শর্মিষ্ঠা? ‘‘খুশি অবশ্যই। নইলে চার হাত এক হত না’’, দাবি দিগন্তের। এ-ও জানিয়েছেন, নাটক দেখতে ভালবাসেন তাঁর স্ত্রী। প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে তাই সহ-অভিনেতা, বন্ধু সোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন নাটক দেখাতে নিয়ে যাবেন শর্মিষ্ঠাকে। টলিপাড়ার বন্ধুদের প্রতিক্রিয়া কী? দিগন্তের কথায়, প্রথমে কেউ বিশ্বাসই করতে পারেননি। আসলে সকলেই নাকি ভেবেছিলেন, তিনি আর বিয়েই করবেন না! পুরোটা জানার পর খুশি প্রত্যেকেই। এখন একটাই আবদার, ‘‘কবে পাত পেড়ে বসে খাব?’’