সুরকার নীলাঞ্জনের হাত ধরে বাংলায় আত্মপ্রকাশ অন্তরার। ছবি: ফেসবুক।
বাংলা ভাল বোঝেন না। বেড়ে ওঠাও অন্য রাজ্যে। অনেক ভাষায় গান গাইতে শোনা যায় তাঁকে। তবু ভিতরে ভিতরে মাতৃভাষার প্রতি টান অনুভব করেন অন্তরা নন্দী। বাংলায় কাজ করার ইচ্ছা তাঁর অনেক দিনের। নতুন বছরে সেই স্বপ্ন সফল হল ‘নন্দী সিস্টার্স’-এর বড় বোন অন্তরার।
সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই বিপুল জনপ্রিয় অন্তরা আর তাঁর বোন অঙ্কিতা নন্দী। সুরকার নীলাঞ্জন ঘোষের হাত ধরে অন্তরার গাওয়া প্রথম বাংলা গানের ভিডিয়ো প্রকাশিত হয়েছে ইতিমধ্যেই। যা নিয়ে খুশিতে ডগমগ ২৩ বছরের গায়িকা।
গানের নাম ‘চাঁদনি রাতে’। দুই যুবক-যুবতীর প্রেমের মুহূর্ত ফুটে উঠেছে ভিডিয়োতে। আর দেখা যাচ্ছে অন্তরাকে। উচ্ছ্বাসের সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, ‘‘গানটা প্রথম বার শোনার মুহূর্ত থেকেই পছন্দ হয়ে গিয়েছিল। লোকে আমাকে শাস্ত্রীয় বা লোকসুর-ঘেঁষা গানের জন্যই চেনে। কিন্তু এই ধরনের গান আমি সব সময় গাইতে চেয়েছি। আর সেটা যদি আমার মাতৃভাষায় হয়, তার থেকে ভাল আর কী হতে পারে? যবে থেকে সঙ্গীতশিল্পী হতে চেয়েছি, বাংলা ভাষায় গান গাইতে চেয়েছি।’’
কলকাতায় শৈশব কেটেছিল অন্তরার। নেপথ্যগায়িকা হিসাবে প্রথম কাজ করেছেন এ আর রহমানের সঙ্গে। গেয়েছেন হিন্দি ও দক্ষিণ ভারতীয় ভাষায়। গত বছর মুক্তি পাওয়া মণি রত্নমের ছবি ‘পোন্নিয়িন সেলভান’-এ গান গেয়ে পর্দাতেও সমাদর পেয়েছেন ‘ভাইরাল গায়িকা’।
বাংলায় এত দিন তেমন ভাবে ডাক পাননি বলে আক্ষেপ ছিল অন্তরার। অতঃপর, জেএসই মিউজিকের জনাই সিংহ বাগচীর কাছ থেকে ডাক পেয়ে কৃতজ্ঞ তিনি। বললেন, ‘‘২৩টি ভাষায় গাইতে পারি আমি এবং আমার বোন। তাই কোনও বিশেষ ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে বাঁধতে চাই না। যত বেশি সম্ভব ভাষায় গাইতে চাই।’’
অন্তরার সঙ্গে কাজ করতে পেরে খুশি সুরকার নীলাঞ্জনও। আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘ভালই প্রতিক্রিয়া মিলেছে গানটার। অন্তরা খুবই প্রতিভাবান। ওর দক্ষতার অনেকটা এখনও অবধি উন্মোচিত হয়নি। উদ্যম নিয়ে ও কাজ করেছে।’’
প্রস্তুতিতে সময় লেগেছে মাস দুয়েক। নীলাঞ্জন জানালেন, অন্তরাকে ভেবে তিনি গান বাঁধেননি। কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে অন্তরার সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। তাঁর গান শুনেই মোহিত হন। ভাবেন অন্তরাকে দিয়ে গাওয়ালে কেমন হয়! তার পরই আসে ‘চাঁদনি রাতে’।
অন্তরার সঙ্গে ভবিষ্যতেও কাজ করার ইচ্ছে প্রসঙ্গে নীলাঞ্জন বললেন, ‘‘অন্তরার মতো গায়ক-গায়িকারাই তো ভবিষ্যৎ। এই বয়সে ও আর ওর বোন মিলে ‘নন্দী সিস্টার্স’ হিসাবে যে কাজ করেছে, সেটা অকল্পনীয়।’’