Adnan Sami-RRR

জ্যোতি বসু ও মমতার নজির টানলেন আদনান সামি, রাজ্যের সঙ্গে দেশকে এগিয়ে রাখা চেনালেন

‘আরআরআর’-এর ঝুলিতে গোল্ডেন গ্লোবস। এ দিকে আঞ্চলিক বনাম ভারতীয় ছবি— বিতর্ক অব্যাহত। এ বারে আসরে নামলেন আদনান সামি।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:৫৮
‘আরআরআর’ প্রসঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন রেড্ডিকে পাল্টা উত্তর দিলেন আদনান।

‘আরআরআর’ প্রসঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন রেড্ডিকে পাল্টা উত্তর দিলেন আদনান। ছবি: সংগৃহীত।

গোল্ডেন গ্লোবস-এ পুরস্কৃত হওয়ার পর ‘আরআরআর’ ছবির কলাকুশলীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন রেড্ডি। কিন্তু শুভেচ্ছাবার্তাটি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এ বারে আসরে নামলেন সঙ্গীতশিল্পী আদনান সামি।

আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাজ্যের প্রাপ্ত কোনও সম্মান যে আদতে দেশের, সে কথা বোঝাতে আদনান পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন। সত্যজিৎ রায়কে স্মরণ করে তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘‘১৯৯১ সালে সত্যজিৎ রায় যখন সাম্মানিক অস্কার পান, তখন কি শুধুই পশ্চিমবঙ্গ সম্মানিত হয়েছিল, না কি সারা ভারত?’’ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘তৎকালীন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু কি বিষয়টাকে শুধুই পশ্চিমবঙ্গের গর্বের কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছিলেন? সেটা ছিল জাতীয় গর্বের মুহূর্ত।’’

Advertisement

এর পরে জনৈক ব্যক্তি সত্যজিৎ রায়ের স্মৃতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি টুইটকে উল্লেখ করে বোঝাতে চান, কৃতিত্ব আগে রাজ্যের, তার পর দেশের। আদনানও এর পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন। গত বছর ২ মে সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবার্ষিকীতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী টুইটারে লিখেছিলেন, ‘‘তিনি শুধু বাংলার গর্ব নন, একই সঙ্গে ভারত এবং সারা বিশ্বের গর্ব।’’ মমতার টুইট প্রসঙ্গে আদনান লেখেন, ‘‘কিন্তু দেখুন কী সুন্দর ভাবে তিনি ভারতের কথাও উল্লেখ করছেন। সেটাই হল আসল কথা।’’

‘আরআরআর’ পুরস্কৃত হওয়ার পর টুইটারে জগন রেড্ডি লিখেছিলেন, ‘‘তেলুগু পতাকা মাথা উঁচু করে উড়ছে। অন্ধ্রপ্রদেশের পক্ষ থেকে আরআরআর ছবির টিমকে আমার শুভেচ্ছা। আমরা তোমাদের নিয়ে খুবই গর্বিত।’’ বিগত কয়েক বছরে বলিউড বনাম দক্ষিণী ছবির দ্বৈরথ বেড়েছে। সেই সঙ্গে সিনেমা কি আদৌ ‘আঞ্চলিক’, না কি তা আক্ষরিক অর্থে ‘ভারতীয়’, এই বিতর্কেও সময়ের সঙ্গে নতুন রঙের প্রলেপ পড়েছে। তাই জগন রেড্ডিকে পাল্টা উত্তর দিয়ে আদনান লেখেন, ‘‘তেলুগু মানে তো ভারতীয় বলতে চাইছেন? আমরা ভারতীয়, তাই বাকি দেশের থেকে নিজেকে আলাদা করার চেষ্টা বন্ধ করুন। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ দেশ।’’ পাশাপাশি আদনান লেখেন, ‘‘১৯৪৭ সালের মতো এই পৃথকীকরণ নীতি খুবই অস্বাস্থ্যকর!’’

আদনানের এই মন্তব্যের পর নেটদুনিয়া কার্যত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গিয়েছে। ‘ভারতীয়’ আবেগে অনেকে যেমন শিল্পীকে সমর্থন জানিয়েছেন, আবার কেউ কেউ দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ নিয়েছেন। তাঁদের মতে, বলিউড দীর্ঘ দিন ধরেই দক্ষিণী ছবিকে ‘নিচু’ নজরে দেখেছে। ‘আরআরআর’ সেখানে বলিউডকে যোগ্য উত্তর দিয়েছে বলেই মনে করছেন তাঁরা। আদনান স্বামীর এখন ভারতীয় নাগরিকত্ব থাকলেও তিনি আদতে পাকিস্তানের নাগরিক ছিলেন। সেই প্রসঙ্গ মনে করিয়ে কেউ কেউ আবার শিল্পীকে কটাক্ষ করতে পিছপা হননি। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সাল থেকে ভারততীয় নাগরিকত্ব অর্জন করেন আদনান।

আদনানও কিন্তু থেমে থাকেননি। তাঁর অন্য একটি টুইটে উঠে এসেছে পণ্ডিত রবিশঙ্করের কথা। সেখানে শিল্পী লিখেছেন, ‘‘পণ্ডিত রবিশঙ্কর সেতার বাজিয়ে উত্তর ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীতকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেন। সারা বিশ্বের কাছে তা কিন্তু ভারতীয় সঙ্গীত হিসেবেই পরিচিতি পায়। বাদ্যযন্ত্র এবং ধর্মের ঊর্ধ্বে তাঁর পরিশ্রমের ফসল প্রত্যেক ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী উপভোগ করেছেন।’’

আরও পড়ুন
Advertisement