আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে নিজেদের ভাল থাকার পাসওয়ার্ড ভাগ করে নিলেন সোহিনী এবং প্রিয়াঙ্কা। ছবি: সংগৃহীত।
নতুন ছবি নিয়ে শুরু হয়েছিল সাক্ষাৎকার। তবে সমাজ, ইন্ডাস্ট্রি, প্রতিযোগিতা, আত্মবীক্ষণ, সর্বোপরি ভাল থাকা— সোহিনী এবং প্রিয়াঙ্কা কথা বললেন একাধিক বিষয়ে। মোবাইলের রেকর্ডারের এ পাশে প্রশ্ন সাজিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন।
প্রশ্ন: আশপাশে শুধুই খারাপ খবর। আপনারা ভাল আছেন?
প্রিয়াঙ্কা: আমি খুব ভাল আছি। ভাল থাকাটা নিজের মনের উপর নির্ভর করে। প্রত্যেকের জীবনে তো অনেক কিছুই ঘটে। কিন্তু ভাল দিকটার উপর ফোকাস না করলে আমি হয়তো সারভাইভ করতে পারতাম না। যা-ই ঘটুক না কেন, ভাল থাকতেই হবে।
প্রশ্ন: সেটা কি আমি ‘ভাল আছি’ বোঝানোর জন্য?
প্রিয়াঙ্কা: সব কিছু একসঙ্গে তো খারাপ হতে পারে না। পরিবার বা নতুন ছবি— সেটাই হয়তো আমাকে ভাল রেখেছে। তা ছাড়া আমি জানি, আমি নিজে ভাল না থাকলে আশপাশের মানুষদের আমি ভাল রাখতে পারব না।
সোহিনী: আর সন্তান থাকলে দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়, তাই না?
প্রিয়াঙ্কা: অবশ্যই। আমার ছেলে বড় হচ্ছে। বাড়ি ফিরে আমার মুখ দেখলেই কিন্তু ও বুঝতে পারে। ওর সামনে অভিনয় করতে পারব না।
সোহিনী: আমার ক্ষেত্রে ভাল থাকা বা খারাপ থাকা আসা-যাওয়া করে। খারাপ থাকলে হয় মেনে নিতে হয় বা মানিয়ে নিতে হয়। দীর্ঘ দিন ধরে খারাপ জিনিসগুলো কারও জীবনে থেকে গেলে সেটা তখন একটা অভ্যাসে পরিণত হয়। পৃথিবীটাই তো এখন ভাল নেই। আমার গাড়িচালক যদি ভাল না থাকেন, তা হলে তো আমিও ভাল থাকব না। আর শিল্পীরা তো একটু সংবেদনশীল হন, তাঁরা ঠিক বুঝতে পারেন।
প্রশ্ন: তার সঙ্গে চলছে ২৪ ঘণ্টা সমাজমাধ্যমের নজরদারি!
সোহিনী: সকাল থেকে ৪টে ফেসবুক পোস্ট দেখলেই তো মনখারাপ হয়ে যায়। সে দিন পথদুর্ঘটনায় এক জন অভিনেত্রী প্রয়াত হয়েছেন। বাড়ি ফিরতেই মা আমাকে খাবার দিয়েই ওই প্রসঙ্গে কথা বলা শুরু করলেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে মায়ের উপর চিৎকার করেছি। কারণ সারা দিন তো ওই খবরটা শুনেছি। বাড়ি ফিরেও সেটা শুনে মেজাজটাই বিগড়ে গেল। আমি আর খেতেই পারলাম না। ভাল থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু মরে তো যেতে পারব না, টিকে থাকতে হবে।
প্রশ্ন: আপনাদের দু’জনের ছবি আসছে। এটাও ভাল খবর। আগের বারের তুলনায় এ বার শুনছি আরও মজা..।
সোহিনী: (প্রিয়াঙ্কার দিকে তাকিয়ে) গণেশ-মালতীকে দর্শক পছন্দ করেছিলেন বলে ওদের পরিসরটা একটু বেড়েছে। সৌরভ (দাস) আছে।
প্রিয়াঙ্কা: তা ছাড়া এ বার গল্পটাই তাইল্যান্ডে। গণেশ-মালতীর বিয়ে হয়েছে।
সোহিনী: এ রকম কিছু কিছু পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু মূল নির্যাসটা একই রয়েছে।
প্রশ্ন: এই ছবিটা নিয়ে তো দীর্ঘ দিন পরিকল্পনা চলেছে।
সোহিনী: ২০২০ সালেই হত। কিন্তু লকডাউনের জন্য বার বার পিছিয়েছে। অবশেষে ছবিটা মুক্তি পাচ্ছে ভেবেই আমি খুশি। আসলে কী, ‘বিবাহ অভিযান’ সব বয়সি দর্শকের পছন্দ হয়েছিল। ছাত্রছাত্রীরা, যারা হয়তো কবীর সুমনের গান শোনে, বা যারা ‘হোক কলরবে’ হাঁটে, তাদেরও পছন্দ হয়েছে। আবার যাঁরা গোবিন্দের ছবি দেখেন বা ‘আন্দাজ় আপনা আপনা’ দেখেছেন, তাঁদেরও ভাল লাগবে।
প্রিয়াঙ্কা: (হেসে) তাই এই ছবিটায় অভিনয় করতেও আমাদের খুব ভাল লেগেছে। কারণ ছবিটার মধ্যে এক রকমের স্মার্টনেস রয়েছে। কথা বলতে শুরু করলে শেষ হবে না।
প্রশ্ন: এখন তো বলা হয় সমাজ নাকি অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। ‘বিবাহ’-এই বিষয়টাকে আপনারা কী ভাবে দেখেন?
সোহিনী: বর্তমান প্রজন্মের নীতিগত আদর্শ বা একটা সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, কিছুই নেই। আমার যখন বড় হচ্ছি, তখন কিন্তু আমার মায়েদের প্রজন্মের সঙ্গে আমাদের প্রজন্মের ব্যবধান ছিল না। মায়ের মতো আমিও স্কুলের টিফিনে আলুকাবলি খেয়েছি। শীতকালে চিড়িয়াখানায় গিয়েছি। আমাদের প্রজন্মেই হাতে কম্পিউটার এবং মোবাইল পেলাম। শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স— তার উপর অতিমারি! এ রকম একটা জার্নির মধ্যে দিয়ে আর কোনও প্রজন্ম এগিয়েছে কি না, আমি জানি না।
প্রশ্ন: এর সঙ্গে বিয়ের কী সম্পর্ক?
সোহিনী: এতগুলো কথা বললাম কারণ, আমি নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। এই বছরে যে সিদ্ধান্ত নিলাম, সেটা হয়তো আগামী বছর বদলে গেল। এই বছর হয়তো ভাবছি বিয়ে করব। কারণ বয়স হলে কাউকে তো পাশে চাই। কিন্তু পরের বছর চন্দ্রিলদার (ভট্টাচার্য) একটা সাক্ষাৎকার শুনে হয়তো মনে হল, না আর বিয়ে করব না (হাসি)। এই মনে হয়, ভালবাসার জন্য আমি সব কিছু ত্যাগ করতে পারব। আবার পর মুহূর্তেই মনে হল, না, এখন কেরিয়ার ছাড়া অন্য কোনও কিছু ভাবব না। এই দ্বন্দ্ব চলতেই থাকে।
প্রিয়াঙ্কা: কোনও কিছুতে মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতাটাই তো আর মানুষের মধ্যে নেই!
সোহিনী: একটা সময় বই পড়তে ভালবাসতাম। আজকাল আর বই পড়তে পারি না! ফোন খারাপ হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার জন্য দোকানে সারাতে দিয়েছি। ওই সময়টায় সারা ক্ষণ মনের মধ্যে চলতে থাকল যে ফোনটা হাতের কাছে নেই!
প্রিয়াঙ্কা: বিয়ে হোক বা না হোক, আমার মতে সম্পর্কে একে অপরের উপর বিশ্বাস রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সোহিনী: অবশ্যই। ‘বিশ্বাস’ তো আর দোকান থেকে কিনে ওষুধের মতো খাইয়ে দেওয়া সম্ভব নয়!
প্রিয়াঙ্কা: সেই জন্যই তো সমস্যাগুলো আসে। মানুষ সঙ্গী বদলায়। আবার হয়তো সম্পর্কে জড়ায় বা হয়তো ভয় পায়।
সোহিনী: কোনও সম্পর্কই তো পারফেক্ট হয় না। মানিয়ে নেওয়ার ধৈর্যটাই তো আমাদের মধ্যে হারিয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে নারী-পুরুষের সমানাধিকারের প্রশ্ন।
প্রশ্ন: তারকাদের ক্ষেত্রে তো পান থেকে চুন খসলে খবর হয়ে যায়। লাগাতার চাপের মধ্যে থাকা। কখনও থেরাপিস্টের সাহায্য নিতে হয়েছে?
প্রিয়াঙ্কা: হ্যাঁ। কারণ এখন তো আমাদের কথা বলার লোক নেই! এক জন কারও কাছে মন খুলে কথা বলাটা খুব প্রয়োজন। যিনি আপনাকে জাজ না করে পরামর্শ দেবেন।
সোহিনী: আমি তো খুবই উপকার পেয়েছি। কিন্তু সব ডাক্তারের কাছে যে সমান উপকার হবে তা নয়। এক বার তো আমার এক জন ডাক্তার তাঁর অন্য রোগীদের সমস্যাগুলো আমাকে বলতে শুরু করেছিলেন! তখনই আমি সাবধান হই এবং থেরাপিস্ট বদলে ফেলি। এই যদি পেশাদারিত্বর নমুনা হয়, আমার কিছু বলার নেই। মাঝে আমার জীবনটা একটু নড়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরে যাঁর কাছে গিয়েছিলাম, তাঁকে পেয়ে আমি অনেকটাই আবার ট্র্যাকে ফিরে এসেছি।
প্রিয়াঙ্কা: কাকে কী বলছি, সেটা তো খেয়াল রাখতেই হয়। ছড়িয়ে পড়বে না তো! পাশাপাশি সমাজমাধ্যমে এখন তুমুল প্রতিযোগিতা। এক জন দম্পতি কোথায় ঘুরতে গিয়েছেন, সেটা দেখে আর পাঁচ জন তাঁদের সঙ্গীকে দোষারোপ করতে শুরু করলেন, ‘‘ওই দেখো, ওরা কত ভাল আছে!’’ এটা কি একটা সুস্থ জীবন?
প্রিয়াঙ্কা: আমার তো মনে হয়, মানসিক সুস্থতা নিয়ে আরও বেশি আলোচনা হওয়া দরকার। আমাদের প্রজন্মে তো তা-ও কিছুটা হচ্ছে। আগে তো একটা সময় মনে করা হত যে, মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়েছেন মানেই তিনি পাগল!
প্রশ্ন: থেরাপিস্টকেও তো সব সময় হাতের কাছে পাওয়া যায় না। কঠিন পরিস্থিতিতে কার সঙ্গে কথা বলেন?
সোহিনী: আমার ছোটবেলার কয়েক জন বন্ধু আছে। ওদের কাছে আমি কোনও তারকা নই। ওদের সঙ্গে প্রচুর কথা বলি। মন ভাল হয়ে যায়।
প্রিয়াঙ্কা: আমি বাড়িতে ফিরলে বাকি সব সমস্যা দরজার বাইরে রেখে আসি। অনেক দিন তো ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছি। অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। সহজ রয়েছে, মা-বাবা রয়েছেন, বাগান, পোষ্য— অনেক কিছু রয়েছে। অন্য কিছু ভাবার সময় থাকে না।
সোহিনী: আমাকে ধরেই বলছি, আমাদের প্রত্যেকেরই একটা মানসিকতা রয়েছে যে আমি ভাল, অন্য জন খারাপ। আমরা যে খারাপ থাকতে পারি সেটাই মানতে চাই না। তাই কারও সঙ্গে কথা বলতে পারলে নিজেকেও নতুন ভাবে চেনা যায়।
প্রশ্ন: তারকা হিসেবে সমাজমাধ্যমে কিছু পোস্ট করার আগে চিন্তাভাবনা করেন? মনের মধ্যে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়ে কোনও রকম ভয় কাজ করে?
প্রিয়াঙ্কা: আমার কিছু ভাল লাগলে পোস্ট করি। জানি সবাইকে তো তুষ্ট করতে পারব না। আমাকে ভাল লাগলে ফলো করুন। পছন্দ না হলে, আমার পোস্টে লাইক বা কমেন্ট করবেন না। কেউ কোনও মতামত দিলে, সেখান থেকে কিছু শেখার হলে নিশ্চয়ই ভেবে দেখব।
সোহিনী: বুঝতে হবে, সমাজমাধ্যম কিন্তু বক্তব্য রাখার জন্য তৈরি হয়েছিল, শুধু ছবি পোস্ট করার জন্য নয়! ছবি পোস্ট করা নিয়ে আমি ততটা ভাবি না। কিন্তু সমাজে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে, যেগুলো নিয়ে মুখ খুলতে ইচ্ছে করে। কিন্তু বলতে গেলে অনেক কিছু বুঝে পা ফেলতে হয়। শুধু তারকা নয়, আমাদের প্রত্যেকের উপরে কিন্তু উপরমহলের নজর রয়েছে। একা থাকি, মা আছেন। আমি কী বলব সেটা ভেবেই তো উত্তর খুঁজে পাই না।
প্রশ্ন: কোনও চাপের কথা বলছেন?
সোহিনী: সাধারণ মানুষ ভাবেন, তারকা মানেই তাঁদের প্রচুর ক্ষমতা। কিন্তু আমার তো কোনও ক্ষমতা নেই। একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা স্পষ্ট হবে। বাড়ির অন্দরসজ্জা নিয়ে সম্প্রতি আমি প্রতারণার শিকার হয়েছি। আমাকে তো সেই থানাতেই যেতে হল। এখনও তার সুরাহা হয়নি। আমার টিমের কেউ যদি কাউকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন, সেই ক্ষমতা আমার হাতে নেই। অভিনেত্রী বলে, বাকিদের তুলনায় আর পাঁচ জন বেশি মানুষ আমাকে চেনেন। ব্যস, এটাই। আমার কাছে আলাদা কোনও ক্ষমতা নেই।
প্রশ্ন: এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেই প্রকাশ্যে কথা বলতে চান না। এতটা স্পষ্টবাদী মনোভাবের পিছনে কি আপনাদের ব্যক্তিগত জার্নি কোনও ভাবে দায়ী?
সোহিনী: ছোট থেকেই তো তারকাদের সাক্ষাৎকার পড়ে বড় হয়েছি। যে দিন ইন্ডাস্ট্রির অংশ হয়েছি, সে দিন থেকেই ঠিক করেছিলাম সাক্ষাৎকারে মনগড়া বা কাউকে খুশি করার মতো উত্তর দেব না। ‘হি ইজ় জাস্ট মাই ফ্রেন্ড!’— এই এক উত্তর দিতেও ভাল লাগে না। আসলে দেখনদারির জন্য ঝুটো জীবন, ফেক মানুষ আমি সহ্য করতে পারি না।
প্রশ্ন: বিপদে পড়লে টলিপাড়ায় ফোন করলে কি সত্যিই সাহায্য পাওয়া যায়?
প্রিয়াঙ্কা: কারও থেকে সাহায্য চাওয়ার অর্থ তো তাঁর সঙ্গে আমার একটা কমফোর্ট জ়োন রয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিতে গুটিকয়েক বন্ধু রয়েছেন। যাঁদের সাহায্য করার, বিপদে তাঁরা ঠিকই পাশে থাকেন।
সোহিনী: বন্ধুত্ব একতরফা হয় না। আমিও তাঁদের বিপদে কতটা পাশে থাকতে পেরেছি সেটাও বিচার্য। প্রিয়াঙ্কার যখন পায়ে অপারেশন হল, আমি কিচ্ছু সাহায্য করতে পারিনি।
প্রিয়াঙ্কা: কী বলছ! তুমি আমাকে হাসপাতালে এক দিন দেখতে গিয়েছিলে।
সোহিনী: সেটা তো আর সাহায্য নয় রে বাবা! আমি কি ওর মেডিক্লেমে টাকা কমাতে পেরেছি? ওর ছোট বাচ্চা রয়েছে। বাবা-মা রয়েছেন। ও হাসপাতালে থাকাকালীন তাঁদের কোনও সাহায্য করতে পেরেছি কি? না, পারিনি। আমাদের বন্ধুত্ব তো উপর উপর।
প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের ধরন বদলেছে বলেই কি কারও সময় নেই?
সোহিনী: সারা ক্ষণই তো প্রতিযোগিতা! নিজেদের জীবনটা সবাই আড়াল করতে চায়। জানতে পারলে কে কী বলবে, সারা ক্ষণ এই চিন্তা। সৌমিত্রজেঠুর (চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে যতটা কাজ করেছি বা বিজয়া রায়, তরুণ মজুমদারের লেখা পড়ে আগে ইন্ডাস্ট্রিতে যে শিল্পীদের আড্ডা হত বা নিজেদের মধ্যে একটা আদানপ্রদান হত, সেটা জানতে পেরেছি। এখন তো এই কাজ শেষে যে যার বাড়ি ফিরে যাব। তার পর আবার সেই ফোন!
প্রশ্ন: আপনারা ফোনে ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে গসিপ করেন?
সোহিনী: আমি করি। খুব সীমিত সংখ্যক মানুষের সঙ্গেই সেটা করি। যাঁরা কোনও কিছু শুনলেই চারিদিকে রাষ্ট্র করে, তাদের সঙ্গে পরনিন্দা-পরচর্চা করতে একদম ভালবাসি না। তবে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে সেই ভাবে গসিপ করা হয় না। কারণ ও খুবই কম কথা বলে।
প্রিয়াঙ্কা: (হেসে) যাঁরা কথা ছড়িয়ে দেয় আমিও তাদের থেকে দূরে থাকি। কারণ জানি, কখনও তাঁরা হয়তো আমাকে নিয়েও গসিপ করবেন।
সোহিনী: অকারণে কারও সম্পর্কে খারাপ কথা শুনতে আমারও ভাল লাগে না। চাণক্য নীতি! জানি, আমার নামেও কেউ তখন খারাপ ভাবছেন বা বলছেন।
প্রশ্ন: সমাজমাধ্যমে কাউকে স্টক করেন?
সোহিনী: ও বাবা! কত বার হয়েছে ভুল করে লাইক করে দিয়েছি... সঙ্গে সঙ্গে আবার আনলাইক (হাসি)।
প্রিয়াঙ্কা: আমার মনে হয়, কমবেশি আমরা সবাই করি (হাসি)।
প্রশ্ন: নিজেদের প্রোফাইলের সব কমেন্ট পড়েন?
সোহিনী: আমি পড়ি। মানুষ মনে হয় এখন প্রচণ্ড রেগে আছেন। সে দিন এই বিষয়টা নিয়ে অনির্বাণের (ভট্টাচার্য) সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল। কারও পঞ্চাশের উপর বয়স। তাঁরা যে আমার প্রোফাইলে কতটা কুরুচিকর মন্তব্য করতে পারেন, সেটা কেউ না দেখলে বুঝতে পারবে না!
প্রিয়াঙ্কা: আমি পড়ি না। পড়তেও চাই না। কারও অনুপ্রেরণার কারণ হতে পারলে অবশ্যই ভাল লাগে। কিন্তু ট্রোলিং নিয়েও বিশেষ মাথা ঘামাই না।
প্রশ্ন: একে অপরের একটা করে দোষ এবং গুণ।
প্রিয়াঙ্কা: সোহিনীর ছবি নির্বাচনের ক্ষমতা অসাধারণ। মন্দ বলতে, ও খুব মুডি। ওই যে ও বলছিল, সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা, সেটা ওকে অনেকটা প্রভাবিত করে। পেশাদার জীবনে কোনও সমস্যা হয়তো হয় না। কিন্তু নিজের মানসিক শান্তি বজায় রাখতে হয়তো ওর আর একটু সতর্ক হতে হবে।
সোহিনী: প্রিয়াঙ্কা খুব কম বয়সে পেশাদার জীবনে পা রেখেছে। ওর লাইফের স্পিরিটটা আমাকে খুব অনুপ্রাণিত করে। খারাপ বলতে, মাঝেমধ্যেই মাথায় একটা পোকা নড়ে আর ও সবার থেকে দূরে চলে যায়। তখন ওকে যোগাযোগ করে আর পাওয়া যায় না।
প্রিয়াঙ্কা: সেটা আমার নিজের মানসিক শান্তির জন্য। আশপাশে এত ফেক কাজকর্ম হচ্ছে, আমি ক্লান্ত। খরচ করার মতো এনার্জি নেই। কাজের ক্ষেত্রে আমি একশো শতাংশ দিতে রাজি, বাকি ক্ষেত্রে আমি জানি আমার না থাকলেও চলবে।
প্রশ্ন: সোহিনী, আপনি কি এখন সিঙ্গল?
সোহিনী: (একটু ভেবে) ঠিক জানি না! দাঁড়ান, এত বড় একটা মেয়ে আমি। জানি না এটা ঠিক উত্তর নয়। আমাকে জানতেই হবে। (ভাবার পর) সিঙ্গল নই। তবে মাঝেমধ্যে একটু ঝগড়া করে সিঙ্গল হয়ে যাই (হাসি)।