ইউসুফ পাঠান (বাঁদিকে)। (ডান দিকে) হুমায়ুন কবীর। —ফাইল চিত্র।
একান্ত বৈঠকের পরও হুমায়ুন কবীরের ‘ক্ষোভ প্রশমন’ করতে পারল না তৃণমূল। লোকসভা ভোটে বহরমপুর থেকে নিজেই প্রার্থী হতে চেয়েছেন তিনি। বহরমপুরে অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতৃত্ব সঠিক প্রার্থী বাছেনি বলে অভিযোগ করেছেন। শনিবারের বৈঠকের পর সেই বিদ্রোহের সুরই চড়িয়ে রাখলেন হুমায়ুন। জানালেন, কিছুতেই ইউসুফ পাঠানের সমর্থনে প্রচার করবেন না।
দু’বছর পর বিধানসভা নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রকারান্তরে দলের ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্য নেতা ফিরহাদ হাকিম। বৈঠক শেষে সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান এবং বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে একটি বেসরকারি হোটেলে একান্তে বৈঠকও করেন ফিরহাদ। কিন্তু সেই বৈঠক শেষেও দেখা গেল নিজেদের অবস্থানে অনড় দুই তৃণমূল বিধায়ক। বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থী হিসাবে প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে কোনও ভাবেই তাঁরা মেনে নেবেন না বলে জানিয়ে দিলেন দু’জন। ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন ফিরহাদের সঙ্গে বৈঠককে নিতান্তই ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ বলে আখ্যা দিলেন। যদিও ফিরহাদ বলেছিলেন, সবাই দলের হয়ে প্রচার করবেন।
জেলা তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, শনিবার বহরমপুরের মুর্শিদাবাদের তিনটি লোকসভা আসনে তৃণমূলের সাংগঠনিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সাংগঠনিক নেতৃত্ব, বিধায়ক এবং সাংসদদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। স্বাভাবিক ভাবে তাতে আমন্ত্রিত ছিলেন মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ এবং ভরতপুরে বিধায়ক হুমায়ুন। বহরমপুরের প্রার্থী পছন্দ-না হওয়ায় প্রথমে ওই দু’জনই দলের লোকসভা প্রস্তুতি বৈঠকে যোগ দেবেন না বলে জানিয়েছিলেন। ঘটনাক্রমে প্রস্তুতি বৈঠক থেকে মুর্শিদাবাদের তাঁদের নাম না করে হুঁশিয়ারি দেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, ‘‘যারা এখন বিদ্রোহ করছেন, তাঁরা যেন এটা ভুলে না-যান ২০২৬ সালে তাঁদেরও ভোট আছে।’’
ফিরহাদের সঙ্গে লোকসভা প্রস্তুতি বৈঠকে দেখা না গেলেও সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে দেখা করেন হুমায়ুন। সেখান থেকে বেরিয়ে হুমায়ুন বলেন, ‘‘রাগ-অভিমান কারও উপর করিনি। তাই সেটা ভঞ্জন হওয়ারও কারণ নেই।’’ একই সঙ্গে তিনি এ-ও জানিয়ে রেখেছেন, তাঁর কাছে অনেক ‘অফার’ রয়েছে। তবে তিনি জানান যে, অন্য কোনও দলে যাবেন না। তৃণমূল বিধায়কের কথায়, ‘‘এই দলেই থাকব এবং এই দলেরই অন্যায় দেখলে, ভুল দেখলে প্রতিবাদ করব।’’
অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘বড় সংসারে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি থাকে। আলোচনায় সবটা মিটে গেছে। দলের হয়ে সবাই প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়বে।’’ কিন্তু হুমায়ুন বলেন, ‘‘বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীর হয়ে আমি কখনও প্রচার করব না। অন্য প্রার্থীর হয়ে প্রচার করব, না কি নিজের জন্যই প্রচার করব, সেটা সময় বলবে।’’