(বাঁ দিক থেকে) এইচডি দেবগৌড়া, কুমারস্বামী, প্রোজ্জ্বল। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে কর্নাটকের ২৮টি আসনের মধ্যে মাত্র তিনটি তাঁর দল জেডিএস-কে ছেড়েছে বিজেপি। তার মধ্যে দু’টিতেই নিজের পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়া। ছোট ছেলে তথা কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী টিকিট পেয়েছেন মান্ড্য আসনে। অন্য দিকে, মেজো ছেলে এইচডি রেভান্নার পুত্র তথা হাসনের বিদায়ী সাংসদ প্রোজ্জ্বলকে তাঁর বর্তমান কেন্দ্রে ফের প্রার্থী করা হয়েছে।
আসন বাড়ন্ত হওয়ায় জামাই সিএন মঞ্জুনাথকে দলীয় প্রতীক দিতে পারেননি জেডিএস প্রধান। কিন্তু কন্নড় রাজনীতিতে জল্পনা, শ্বশুর হিসাবে দায়িত্ব পালনে পিছপা হননি দেবগৌড়া। ওই জল্পনার কারণ হল, পেশায় চিকিৎসক মঞ্জুনাথ এ বার জেডিএসের সহযোগী বিজেপির টিকিটে ভোটে লড়ছেন বেঙ্গালুরু গ্রামীণ লোকসভা আসনে। কিন্তু তাতেও নাকি দেবগৌড়া পরিবারের অন্দরে ক্ষোভ পুরোপুরি মেটেনি। কুমারস্বামী-পুত্র নিখিল টিকিট না পেয়ে ক্ষুব্ধ বলে দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে। ২০১৯ সালে মান্ড্য আসনেই কংগ্রেস সমর্থিত জেডিএস প্রার্থী হিসাবে লড়ে বিজেপি সমর্থিত নির্দল সুমালতা অম্বরীশের কাছে হেরেছিলেন নিখিল।
কর্নাটকে জেডিএসের মূল ভোটব্যাঙ্ক হল ভোক্কালিগা জনগোষ্ঠী। কিন্তু গত বছরের বিধানসভা ভোটের ফলাফলে স্পষ্ট, গ্রামীণ বেঙ্গালুরু, পুরনো মাইসুরু অঞ্চল, হাসন, রামনগর কিংবা চান্নাপটনার মতো এলাকায় দেবগৌড়ার সেই সমর্থনভিত্তিতে ফাটল ধরিয়েছেন কংগ্রেসের ভোক্কালিগা ‘মুখ’ ডিকে শিবকুমার। ভোক্কালিগাদের সমর্থন হারানোর নেপথ্যে পরিবারবাদের রাজনীতিকেই দায়ী করেছেন রাজনীতির অনেকে। পিতা-পৌত্র-পৌত্রেরা সাংসদ-বিধায়ক হওয়ার পরে দেবগৌড়ার দুই পুত্রবধূ অনিতা কুমারস্বামী এবং ভবানী রেভান্নাও রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছেন। কর্নাটক রাজনীতিতে জেডিএসের নতুন নাম হয়েছে, ‘আপ্পা-মাক্কালা-মোমাক্কালা-সোসেইয়ারা’ (বাবা-ছেলে–নাতি-পুত্রবধূ)-র দল। এই পরিস্থিতিতে দেশের অন্যত্র কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের বিরুদ্ধে ‘পরিবারতন্ত্রের’ অভিযোগ তোলা বিজেপি কর্নাটকে শরিক দলের প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে নিশ্চুপ।