Lok Sabha Election 2024

পাঁচ রাজ্যে আপ-কংগ্রেস আসন রফা পাকা হয়ে গেল, দিল্লিতে ‘চার-তিন সূত্র’, বাকি চারের সমীকরণ কী?

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দিল্লির সাত আসনের মধ্যে পাঁচ আসনেই দ্বিতীয় স্থানে ছিল কংগ্রেস। আর দুই আসনে বিজেপির পরেই ছিল কেজরীওয়ালের দল। সাতটি লোকসভাই জিতেছিল বিজেপি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:২৩
অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং রাহুল গান্ধী।

অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং রাহুল গান্ধী। — ফাইল চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনে দিল্লি-সহ চার রাজ্যে এবং কেন্দ্রশাসিত চণ্ডীগড়ে ‘জোট’ বেঁধেই লড়বে আপ এবং কংগ্রেস। শনিবার তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও হয়ে গেল। ৭টি লোকসভা আসন বিশিষ্ট দিল্লিতে আসন সমঝোতা কী হবে, তা নিয়ে জল্পনা ছিল রাজনৈতিক মহলে। শনিবার সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আপ এবং কংগ্রেস জানিয়ে দিল, তারা দিল্লিতে চার-তিন সমীকরণে লড়বে। শুধু দিল্লি নয়, গুজরাত, হরিয়ানা, গোয়া এবং চণ্ডীগড়ে কী সমীকরণে আসন সমঝোতা হচ্ছে তা-ও জানিয়ে দিল অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং রাহুল গান্ধীর দল।

Advertisement

দিল্লিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব কেজরীওয়ালের দলকে চারটি আসন ছাড়ল। সেই চারটি আসন হল নয়াদিল্লি, দক্ষিণ দিল্লি, পূর্ব দিল্লি এবং পশ্চিম দিল্লি। বাকি তিন আসন অর্থাৎ উত্তর-পূর্ব দিল্লি, উত্তর-পশ্চিম দিল্লি এবং চাঁদনি চকে লড়বে হাত শিবির। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দিল্লির সাত আসনের মধ্যে পাঁচ আসনেই দ্বিতীয় স্থানে ছিল কংগ্রেস। আর দুই আসনে বিজেপির পরেই ছিল কেজরীওয়ালের দল। সাতটি লোকসভাই জিতেছিল বিজেপি।

জানুয়ারিতে কংগ্রেস এবং আপ নেতৃত্ব আসন সমঝোতা নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা করলেও জট কাটেনি। সূত্রের খবর ছিল আপের তরফে দিল্লির সাতটি আসনের মধ্যে একটি বা দু’টি ছাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস অন্তত তিনটিতে লড়ার দাবিতে অনড় থাকায় আলোচনা ভেস্তে যায়। রাজনৈতিক মহলের একাংশ আশঙ্কা করেছিল, পঞ্জাবের মতো দিল্লিতেও দুই দল ‘একা’ লড়ার সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।

কংগ্রেস নেতা মুকুল ওয়াসনিকের নেতৃত্বে গঠিত আসন সমঝোতার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির অন্য চার সদস্য রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত, ছত্তীসগঢ়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সলমন খুরশিদ এবং এআইসিসির প্রাক্তন মুখপাত্র মোহন প্রকাশ ছিলেন বৈঠকে। সঙ্গে ছিলেন দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অরবিন্দর সিংহ লভলীও। অন্য দিকে, আপের তরফে রাজ্যসভা সাংসদ সন্দীপ পাঠক এবং দিল্লির দুই মন্ত্রী অতিশী এবং সৌরভ ভরদ্বাজ অংশ নিয়েছিলেন জানুয়ারির রফা-আলোচনায়।

জানুয়ারির পর ফেব্রুয়ারিতেও একাধিক বার দুই শিবির বৈঠকে বসেছিল। সেখানেই আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়। শুক্রবার আপ এবং কংগ্রেস যৌথ ভাবে পাঁচ রাজ্যের আসন বণ্টনের কথা ঘোষণা করে। কংগ্রেস নেতা মুকুল ওয়াসনিক শুক্রবার জানান, ‘‘১০ লোকসভা আসনের হরিয়ানায় ন’টি আসনেই আপের সমর্থনে প্রার্থী দেবে কংগ্রেস। কুরুক্ষেত্র লোকসভা আসনটি ছাড়া হয়েছে আপকে।’’

সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, চণ্ডীগড় লোকসভা আসনে কে লড়বে, তা নিয়ে আপ এবং কংগ্রেসের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়। শেষ পর্যন্ত আসনটি কংগ্রেসকে ছাড়তে রাজি হয় কেজরীর দল। চণ্ডীগড়ের মতো দুই আসনের গোয়াতেও আপের সমর্থনে প্রার্থী দেবে কংগ্রেসই।

গুজরাতেও আপ এবং কংগ্রেস জোট বেঁধেই লড়বে। জল্পনা মতোই কংগ্রেস, আপকে ছেড়ে দিল দক্ষিণ গুজরাতের ভারুচ আসনটি। এই আসন আপকে ছাড়া নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে কিছুটা অসন্তোষ রয়েছে। ভারুচ আসনে ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত তিনটি লোকসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন আহমেদ পটেল। তার পর ১৯৮৯ থেকে টানা ১০ বার ওই কেন্দ্রে জিতেছে বিজেপি। ভারুচ লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা আসনের মধ্যে ছ’টিই এখন বিজেপির দখলে। অবশিষ্টটি আপ-এর। গুজরাত কংগ্রেসের অন্দরে জল্পনা ছিল, এ বার প্রয়াত নেতা আহমেদ-কন্যা মুমতাজকে সেখানে প্রার্থী করতে পারে কংগ্রেস। কিন্তু দেখা গেল আপকেই ভারুচ ছেড়ে দিল হাত শিবির। এ ছাড়াও গুজরাতের ভাবনগর লোকসভাও কেজরীকে ছাড়ল কংগ্রেস।

প্রসঙ্গত, পঞ্জাবে কংগ্রেস এবং আপ, দুই দলই ‘একা লড়া’র সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দিন কয়েক আগেই কেজরী ঘোষণা করেছিলেন, ‘‘আপ এবং কংগ্রেস আসন্ন নির্বাচনে যৌথ ভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দু’দল পৃথকভাবে লড়বে পঞ্জাবে। এ নিয়ে কোনও শত্রুতা নেই।’’

আরও পড়ুন
Advertisement