WB Madhyamik Revaluation

মাধ্যমিকে ফলঘোষণার আগেই খাতা পুনর্মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত মধ্যশিক্ষা পর্ষদের

১৬ এপ্রিল সকাল ছ’টা থেকে ১৮ এপ্রিল দুপুর দুটো পর্যন্ত এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে পর্ষদের তরফ থেকে। পুনর্মূল্যায়নের সময় যদি দেখা যায় কোনও পরীক্ষার্থীকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, তা হলে পরীক্ষককে পরীক্ষার্থীর খাতায় প্রয়োজনীয় নম্বর দিতে হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:০৩

সংগৃহীত চিত্র।

মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা দেখা শেষ হয়েছে। এখন শুধুমাত্র অপেক্ষা ফলাফল ঘোষণা হওয়ার। এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে ফলাফল ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা। আর ফলাফল প্রকাশ করার আগে বেশ কিছু পরীক্ষার্থীর খাতা পুনর্মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বোর্ডের তরফ থেকে চিহ্নিত করে দেওয়া খাতা পুনরায় দেখতে হবে বলে পরীক্ষকদের নির্দেশ দিল পর্ষদ।

Advertisement

এ বছর থেকেই চালু হয়েছে অনলাইনে নম্বর সাবমিশন। ইতিমধ্যেই সমস্ত প্রধান পরীক্ষকেরা এই কাজ সম্পন্ন করে ফেলেছেন।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সচিব সুব্রত ঘোষ বলেন, “পরীক্ষার খাতা দেখার ক্ষেত্রে যাতে স্বচ্ছতা থাকে ও ভুলত্রুটি কম হয়, তাই ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তবে কোন পদ্ধতিতে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হবে তা গোপন রাখা হচ্ছে।”

মূলত, বিগত কয়েক বছরে দেখা গেছে মাধ্যমিকের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর বহু পরীক্ষার্থী তাদের নম্বর নিয়ে সন্তুষ্ট না হয়ে স্ক্রুটিনি বা রিভিউয়ের জন্য আবেদন করে। এবং অনেক সময়েই নম্বরের ক্ষেত্রে পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে। পরবর্তী কালে প্রথম দশের মেধা তালিকায় রদবদল হয়েছে এই ফলাফল সামনে আসার পর। বিভিন্ন সময় শিক্ষক মহলে প্রশ্ন উঠেছে মূল্যায়ন ব্যবস্থা নিয়ে। আর এ বছর সে বিষয় নিয়ে আরও বেশি সতর্ক মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।

কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যাণ্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “ছাত্র স্বার্থে যে কোনও পদক্ষেপ সব সময়ই স্বাগত। পাশাপাশি, আশা করব পরীক্ষার ফলপ্রকাশের পর খাতার কপি চেয়ে যে আরটিআই আবেদনগুলি পর্ষদের কাছে জমা পড়ে নিয়মমতো তার দ্রুত নিষ্পত্তি যেন পর্ষদ করে।”

সূত্রের খবর, অনলাইন নম্বর জমা দেওয়ার সময় পরীক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক নম্বর দেখতে পাচ্ছে পর্ষদ। এখানে অনেক সময় দেখা যাচ্ছে সাতটি বিষয়ের মধ্যে পাঁচটিতে অত্যন্ত ভাল নম্বর পেয়েছে কোনও পরীক্ষার্থী, দু’টি বিষয়ের নম্বরে অনেক হেরফের রয়েছে, সে ক্ষেত্রে পর্ষদের তরফ থেকে পরীক্ষকদের কাছে খাতা পুনর্মূল্যায়নের জন্য পাঠানো হচ্ছে। যাতে পরবর্তী কালে পরীক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট না হয়ে আরটিআই না করে।

যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধানশিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “ফলাফল ঘোষণা হওয়ার আগে কিছু ক্ষেত্রে এই পুনর্মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কথা ভেবে নিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, যাতে নির্ভুল ফলপ্রকাশ করা সম্ভব হয়। অনলাইনে নম্বর জমা দেওয়ার সময় বেশ কিছু ভুলভ্রান্তি থেকে যেতে পারে, তা পুনর্মূল্যায়নের ফলে ধরা পড়বে।”

মূলত ত্রুটিমুক্ত নম্বর ছাত্রছাত্রীদের দেওয়ার জন্য এই সিদ্ধান্ত পর্ষদের। ১৬ এপ্রিল সকাল ছ’টা থেকে ১৮ এপ্রিল দুপুর দুটো পর্যন্ত এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে পর্ষদের তরফ থেকে। পুনর্মূল্যায়নের সময় যদি দেখা যায় কোনও পরীক্ষার্থীকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, তা হলে পরীক্ষককে পরীক্ষার্থীর খাতায় প্রয়োজনীয় নম্বর দিতে হবে। অনলাইনে এই নম্বর দিতে হবে। পর্ষদের তরফ থেকে পাঁচ দফা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “মধ্যশিক্ষা পর্ষদ মাধ্যমিক পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলঘোষণার আগে অনলাইনে নম্বর ভেরিফিকেশনের যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা অভিনব। হয়তো অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের ভুলভ্রান্তি যতটা কমানো যায় তার ব্যবস্থা করছে। এটা সমর্থনযোগ্য হলেও, এর ফলে পরীক্ষকদের যে অতিরিক্ত শ্রম দিতে হবে তা পুষিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে পর্ষদকে।”

প্রসঙ্গত, গত বছর মাধ্যমিকের ফলঘোষণা হয়েছিল মে মাসের ১৯ তারিখ। এ বছর লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ফলাফল ঘোষণা করার তোড়জোড় করেছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। ২ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছিল, শেষ হয়েছে ১২ ফেব্রুয়ারি। ৯০ দিনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। তার আগেই ফলঘোষণা করতে চাইছে পর্ষদ।

আরও পড়ুন
Advertisement