পুতুল নাচের প্রশিক্ষণ ক্লাসরুমে। নিজস্ব চিত্র।
পড়াশোনায় একঘেয়েমি কাটাতে ভিন্ন পন্থায় উদ্যোগী হল খানপুর নির্মলাবালা সরকার গার্লস প্রাইমারি স্কুল (বাঁশদ্রোণী)। ফেলে দেওয়া সামগ্রী দিয়ে পুতুল তৈরি করে পুতুল নাচের মাধ্যমে গল্পের ছলে পাঠ্য বইয়ের লেখাকে বাস্তবমুখী করে তুলতে এই উদ্যোগ, স্কুলের শিক্ষিকা সৌম্যা মুখোপাধ্যায়ের।
প্রতি দিন গতানুগতিক ভাবে পড়ুয়ারা ক্লাসে আসে এবং পঠন-পাঠনে অংশ নেয়। এ বার পঠন-পাঠনে আকর্ষণ বাড়াতে এবং সহজে শিশু মনে পাঠ্য বিষয় গেঁথে দিতে পুতুলনাচের আয়োজন ক্লাসরুমে।
প্রসঙ্গত, এ বছরের জানুয়ারি মাসে অসমের গুয়াহাটিতে সেন্টার ফর কালচারাল রিসোর্সেস অ্যান্ড ট্রেনিং-এর উদ্যোগে ‘রোল অফ পাপেট্রি ইন এডুকেশন ইন লাইন উইথ এনইপি ২০২০।’ এই বিষয়ে সর্বভারতীয় স্তরে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ৬১ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছিলেন। বিকাশ ভবনের উদ্যোগে কলকাতা থেকে অংশগ্রহণ করেছিল সৌম্যা।
সর্বভারতীয় এই প্রশিক্ষণে ফেলে দেওয়া বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে কী ভাবে সহজে পুতুল বানিয়ে পাঠ্য বিষয়ে উপস্থাপন করা যায়, গল্পের কোনও চরিত্রকে পুতুলনাচের মাধ্যমে জীবন্ত করে তোলা যায় তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। যাতে প্রাথমিকের পড়ুয়ারা মুখস্থ না করেও সহজে মনে রাখতে পারে।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষিকা সৌম্যা বলেন, “আমাদের স্কুলে বেশির ভাগ প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থী। এই ধরনের শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে এবং স্কুলের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে ক্লাসরুমে এই ধরনের পুতুলনাচের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এতে বুনিয়াদি শিক্ষাও মজবুত হবে। পাশাপাশি স্কুলছুটের সংখ্যাও কমবে।”
সোমবার খানপুর নির্মলাবালা সরকার গার্লস প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। আগামী দিনে নিজ নিজ এলাকায় প্রাথমিক স্কুলে এই প্রশিক্ষণ দেবেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
মূলত এই পুতুল তৈরি করা হয়েছে, মোজা, উল, পিচবোর্ড, বোতল, আইসক্রিম কাঠি দিয়ে। আগামী দিনে এই ধরনের বিশেষ পদ্ধতির ব্যবহারের ফলে প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের স্কুলের প্রতি আকর্ষণ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদী স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।