WBBSE Examination 2024

পরীক্ষা বাতিল দু’জনের, সদ্যোজাতকে নিয়ে বসলেন এক জন, মাধ্যমিক নিয়ে আর কী জানাল পর্ষদ?

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করেন প্রথম দিন পরীক্ষার শেষে। বৈঠক সূত্রে জানানো হয়েছে, চলতি বছর ২৬৭৫টি কেন্দ্রে মাধ্যমিক দিয়েছে ন’লক্ষ ২৩ হাজার ৪৫ জন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:৫৩
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বাংলা পরীক্ষা দিয়ে শুরু হল চলতি বছরের মাধ্যমিক। পরিবর্তিত সময়সূচি অনুযায়ী সকাল ৯টা ৪৫ থেকে শুরু হয় পরীক্ষা। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করেন প্রথম দিন পরীক্ষার শেষে।

Advertisement

তিনি জানান, চলতি বছর ২৬৭৫টি কেন্দ্রে মাধ্যমিক দিয়েছে ন’লক্ষ ২৩ হাজার ৪৫ জন। এর মধ্যে ৩৩৪ জন পরীক্ষার্থীকে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে। রাইটার দিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে ৪০৯ জন। পাশাপাশি, ক্ষীণদৃষ্টি বা বিশেষ ভাবে সক্ষমদের মধ্যে ১৬৭ জন রাইটার দিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। আহত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪। একজন ল্যাপটপে পরীক্ষা দিয়েছে। এক জন পরীক্ষা দিয়েছে সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে। সাত জন হাসপাতাল থেকে ও এক জন লিলুয়া হোম থেকে পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষা চলাকালীন নানা কারণে ১২ জনের স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে।

অন্যান্য বছরের মতোই চলতি বছরেও অনেক জিনিস নিষিদ্ধ করা হয়েছিল পর্ষদের তরফে। পাশাপাশি প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে কিউআর কোড ব্যাবহারের মতন কড়া পদক্ষেপও করা হয়েছিল।

কিন্তু এর পরেও স্মার্ট ওয়াচ, মোবাইল ফোন পাওয়া গিয়েছে কিছু পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও মালদা জেলার তিনটে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে স্মার্ট ওয়াচ এবং মোবাইল ফোন পাওয়া গিয়েছে। তাদের প্রথম দিনের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। তবে, আগামীতে তারা পর্ষদ প্রকাশিত নিয়ম মানলে পরীক্ষায় বসতে পারবেন।

পাশপাশি, প্রথম দিনের পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যেই প্রশ্নপত্র সামাজমাধ্যমে ছড়িয়ে গিয়েছে। যদিও পর্ষদের তরফে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বৈঠক সূত্রে খবর, মালদহ জেলার রায়গ্রাম হাই স্কুল ও বেদরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের দু’জন ছাত্র পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিয়ে ঢোকে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই ওই দু’জন সামাজমাধ্যমে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে পোস্ট করে দেয়। পর্ষদের তরফে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কারণ পর্ষদ থেকে আগে জানানো হয়েছিল চলতি বছর থেকে কিউআর কোড ব্যাবহার করা হবে প্রশ্নপত্রে। যাতে কেউ ছবি তুললে কিউআর কোডের সাহায্যে পর্ষদের কাছে বিস্তারিত তথ্য পৌঁছে যেতে পারে। পাশাপাশি, প্রশ্নপত্রের সামনে দেওয়া সিরিয়াল কোড ছাত্রছাত্রীদের উওরপত্রেও লিখতে হচ্ছে। এর পর যখনই ছবি তোলা হয় কিউআর কোডের সাহায্যে ওই প্রশ্নপত্রের সিরিয়াল নম্বর জানতে পারে পর্ষদ। তাতেই পরীক্ষা চলাকালীনই ওই দু’জন পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তাদের অ্যাডমিট কার্ড ও রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা তারা দিতে পারবে না।

এখনই কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না স্কুলগুলির তরফে। এই বিষয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘সমস্ত শিক্ষক পেশাদার নয়। যেহেতু তাঁদের পক্ষে নিখুঁত ভাবে তল্লাশি করা সম্ভব নয়। তাই পরে আরএ (রিভিউ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ) কমিটির বৈঠক হবে, সেখানেই আমরা গাফিলতির কারণ খুঁজে দেখব। কী ভাবে কড়া নজরদারি থাকার পরও মোবাইল নিয়ে ঢুকল পরীক্ষার্থীরা তা দেখতে হবে’’। অন্য দিকে ব্যারাকপুরের একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে বড় ভাইয়ের জায়গায় ছোট ভাই এসেছিল পরীক্ষা দিতে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের তরফে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জনানো হয়েছে।

বিগত বছরগুলির ন্যায় চলতি বছর অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে মাধ্যমিকে। সময়সূচি পরিবর্তিত হয়েছে, প্রশ্নপত্রে কিউআর কোড ব্যবহার করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অনেক কিছু যোগ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, একেবারে কড়া নজরদারির মধ্যেই শুরু হয়েছে চলতি বছরের মাধ্যমিকে পরীক্ষা।

আরও পড়ুন
Advertisement