প্রথম দিনের পরীক্ষা শেষে হাসিমুখে স্কুলের গেটে পরীক্ষার্থীরা। নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার মাধ্যমিকের প্রথমপত্রের পরীক্ষা নির্ধারিত সময়েই শেষ হল। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে শহর এবং শহরতলির বিভিন্ন স্কুলগুলিকে পরীক্ষাকেন্দ্র হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ দিন প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে একাধিক স্কুলের পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে উপস্থিত হয়। প্রথম দিনের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর প্রশ্ন কেমন ছিল, পরীক্ষা দিতে আসতে কোনও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে কি না, কিংবা প্রথম বার অন্য স্কুলে পরীক্ষা দিয়ে কেমন অভিজ্ঞতা হল পরীক্ষার্থীদের, জানিয়েছে পরীক্ষার্থীরা।
তবে, পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই পরীক্ষার পরিবর্তিত সময় নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, এমনটাই দাবি করে। পরীক্ষাকেন্দ্র চিনে পৌঁছে যাওয়া, কিংবা নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করার মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তারা চিন্তিত ছিল। এই বিষয়ে ওই পরীক্ষাকেন্দ্রের আরও এক পরীক্ষার্থী সুপ্রি দাস, সেন্ট মার্গারেট’স স্কুলের ছাত্রী জানিয়েছে, পরীক্ষার সময়টা আরও একটু পিছিয়ে দেওয়া হলে পড়ার জন্য একটু বেশি সময় পাওয়া যেত। তবে তার মতো অনেক পরীক্ষার্থীরই প্রশ্নপত্রে কিউআর কোড দেখে ভাল লেগেছে।
উত্তর কলকাতার বেথুন কলেজিয়েট স্কুলে শহরের মোট পাঁচটি স্কুলের পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রথম দিনের পরীক্ষা নির্ধারিত সময়েই শুরু হয় এবং পরীক্ষা শেষ হওয়ার আট মিনিট পর পরীক্ষার্থীরা একে একে স্কুলের গেট থেকে বেরিয়ে আসতে থাকে। রামকৃষ্ণ সারদা মিশন ভগিনী নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী রূপসা রায় চৌধুরী জানায়, বাংলা প্রশ্ন সহজ হওয়ায় পরীক্ষা খুব ভাল হয়েছে। প্রবন্ধের বিষয় নিয়ে লিখতেও তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। ওই স্কুলেরই আরও এক পরীক্ষার্থী মনস্বিতা মজুমদারও পরীক্ষা দিয়ে মোটের উপর খুশি।
পরীক্ষার সময় এগিয়ে আনার বিষয়ে পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। রামকৃষ্ণ সারদা মিশন ভগিনী নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়ের একাধিক পরীক্ষার্থী বেলঘরিয়া, আগরপাড়া, সোদপুরের বাসিন্দা। তাঁদের অভিভাবক রূপা দাস, কাত্যায়নী মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাঁরা পরীক্ষাকেন্দ্রে সঠিক সময়ে পৌঁছানোর জন্য সরকারি বাস পরিষেবার সাহায্য নিয়েছেন এবং রাস্তায় কোনও সমস্যা না থাকায় নির্ধারিত সময়েই তাঁরা পৌঁছে যেতে পেরেছিলেন। তবে আরও এক অভিভাবক রঞ্জন মজুমদার বলেন, ‘‘মেয়ে প্রথম বাইরে পরীক্ষা দিতে আসবে, তাই বাস-ট্রেনের ঝামেলা করিনি। একটু বেশি খরচ করে সাতদিনের জন্য গাড়ি ভাড়া করে নিয়েছি। পরীক্ষা তাড়াতাড়ি শেষ হলে মেয়ে আরও বেশিক্ষণ বাড়ি ফিরে পড়তে পারবে, তাই এই সময়ে পরীক্ষা হওয়াতে ভালই হয়েছে।’’
তবে উলুবেড়িয়া নিবাসী প্রদীপ ঘোষ জানিয়েছেন, পরীক্ষার সময় এগিয়ে আসায় তাঁর কন্যাকে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে যথাসময়ে পৌঁছনোর জন্য ভোর ৪টে নাগাদ ট্রেন, বাস-সহ একাধিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সাহায্য নিতে হয়েছে, যা বেশ সমস্যার। তিনি আরও অভিযোগ করেন, পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের পরীক্ষা চলাকালীন স্কুল সংলগ্ন পার্ক কিংবা অন্যত্র বসার ব্যবস্থা না থাকায় তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তাঁরা এই বিষয়ে সরকারি হস্তক্ষেপের আর্জিও জানিয়েছেন।