প্রতীকী চিত্র।
এ বার স্কুল স্তরে শিশুদের যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত পকসো আইনের প্রাথমিক পাঠ দেওয়া হবে। শুধু বড়রা নয়, নিত্যদিন কোথাও না কোথাও যৌন হেনস্থার শিকার হচ্ছে স্কুল স্তরের শিশুরাও। স্কুল, খেলার মাঠ, এমনকি বাড়ির ভিতরেও অনেক সময় যৌন হেনস্থার কবলে পড়ে কচিকাঁচারা। অনেক সময় সত্যিটা বলেও উঠতে পারে না শিশুরা। কিন্তু এই হেনস্থা যে আদতে বড় অপরাধ, তারই পাঠ দিতে চলেছে স্কুল শিক্ষা দফতর।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হতে চলেছে পকসো আইন। এই পাঠের মধ্য দিয়ে যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত কোন অপরাধের কী শাস্তি তা উল্লেখ করা হয়েছে। কবিতার ছলে আইনের বিভিন্ন অংশ তুলে ধরা হয়েছে। ‘ব্যাড টাচ’- ‘গুড টাচ’ কী তা বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস-র চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস বলেন, ‘‘মধ্যশিক্ষা পর্ষদ যে ভাবে এই বিষয়টিকে পাঠ্য পুস্তকে তুলে ধরেছে, তাতে শুধু পড়ুয়াই নয় অভিভাবক থেকে শুরু করে গৃহশিক্ষকরাও সচেতন হবেন। সমাজের কাছে শিশুর যৌন হেনস্থা নিয়ে বার্তা পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। এতে শিশুরা বুঝতে পারবে যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তৎক্ষণাৎ বড়দের জানানো প্রয়োজন।’’
আইন অনুযায়ী ১৮ বছর বয়সের নীচে কোনও ছেলে বা মেয়ের যৌনহেনস্থা হলে তা পকসো আইনের আওতায় বিবেচ্য। কোনও শিশু এই পরিস্থিতির শিকার হলে তার কী করণীয় তা রয়েছে এই বইয়ে। পাশাপাশি, কোন স্পর্শ স্বাভাবিক, কোন স্পর্শ হেনস্থার তা নির্ণয় করার পাঠও দেওয়া হবে। শুধু স্কুলেই নয় রাস্তাঘাট, খেলার মাঠ বা বাড়িতেও কেউ অন্য ভাবে স্পর্শ করছেন কি না, তা শিশুরা যাতে বুঝতে পারে তা শেখানোই এর উদ্দেশ্য। আবার কেউ শিশুর কোনও অশ্লীল ছবি সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করলে যে জেল পর্যন্ত হতে পারে সেই শিক্ষাও মিলবে পকসো আইন সংক্রান্ত ওই অধ্যায়।
যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার বলেন, ‘‘স্কুলস্তরেই এই বিষয়টা যুক্ত হওয়ার খুব প্রয়োজন ছিল। ছোট থেকেই শিশুর জানা উচিত এই কোনটা যৌন হেনস্থা। তা হলে পরবর্তী সময় সেই শিশুটিও হেনস্থার প্রতিবাদ করতে পারবে এবং নিজেকেও এই ধরনের অপরাধে যুক্ত করবে না। সচেতনতামূলক পাঠ এটি।’’
উল্লেখ্য, অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে এ বছর থেকে শুরু হল বিভিন্ন রকমের সচেতনতার পাঠ। সম্প্রতি ট্যাব-কন্যাশ্রীর টাকা পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে না গিয়ে চলে যাচ্ছিল সাইবার প্রতারকদের হাতে। এর জন্য পড়ুয়াদের ছোট থেকে সতর্ক করতে এবং সাইবার থ্রেট সংক্রান্ত তথ্য সামনে তুলে ধরতে ,পাঠ্যবইয়ে সাইবার সুরক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের।