Self-Reliance education in school

পাঠ্য বই-ই নয়, ব্যবসায়িক পাঠ পড়িয়ে জাতীয় স্তরে স্বীকৃতি পেল দক্ষিণ কলকাতার এই স্কুল

সারা দেশব্যাপী ৪০০টি স্কুল এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল। ৫৭টি স্কুল পুরস্কৃত হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম কলকাতার এই স্কুলটি।

Advertisement
অরুণাভ ঘোষ
শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:২৭

নিজস্ব চিত্র।

শুধু পাঠ্য বই-ই নয়, প্রয়োজন সার্বিক উন্নয়নের। স্কুল স্তরেই পেশাগত জীবন নিয়ে সচেতন করতে বিশেষ পদক্ষেপ করল দক্ষিণ কলকাতার এক স্কুল। পড়াশোনার পাশাপাশি স্কুলের ছাত্রীদের স্বনির্ভর করতে এবং ব্যবসায়িক মনোভাব বৃদ্ধি করতে উদ্যোগী হয়েছিল বড়িশা জনকল্যাণ বিদ্যাপীঠ ফর গার্লস। এ বার তার স্বীকৃতি মিলল জাতীয় স্তরে। সারা দেশের ৪০০টি স্কুল এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল। ৫৭টি স্কুল পুরস্কৃত হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল কলকাতার এই স্কুলটি।

Advertisement

বড়িশা জনকল্যাণ বিদ্যাপীঠ ফর গার্লস স্কুলে বর্তমান ছাত্রী সংখ্যা ২৫০। অতিমারি পরবর্তীকালে স্কুল ছুটের কারণে ছাত্রী সংখ্যা তলানিতে ঠেকেছিল। স্কুলকে পুনরুজ্জীবিত করতে প্রথমে ইংরেজি মাধ্যম এবং পরে ২০২২-এ স্কিল ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ শুরু করা হয়। যেখানে, পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার সঙ্গে ছাত্রীরদের স্বনির্ভর করার প্রশিক্ষণ চলে। ছ’মাস ধরে প্রশিক্ষণের পরে প্রত্যেক বছর একটি করে মেলার আয়োজন করে স্কুল। গত বছর ৩ ফেব্রুয়ারি স্কুল প্রাঙ্গণে মেলা হয়।

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শর্মিলা সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘পড়াশোনা করে খালি চাকরি নয়। স্কিল ডেভেলপমেন্ট-এর মাধ্যমে স্বনির্ভর হয়ে ছাত্রীরা যাতে উদ্যোগপতি হয়ে ওঠে, সেটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। স্কুলের বেশির ভাগ পড়ুয়াই প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থী। তারা স্বনির্ভর হলে স্কুলের প্রতিও তাদের আকর্ষণ বৃদ্ধি পাবে।’’

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ এডুকেশনাল প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অধীনস্থ ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ফর স্কুল লিডারশিপ তিন দিনব্যাপী এক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। অল্প সময়ের মধ্যে অভিনব ভাবনা এবং পরিকল্পনাকে কম খরচের মাধ্যমে বাস্তবায়িত করে যে সমস্ত স্কুল পড়ুয়াদের এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়েছে, তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে এই অনুষ্ঠানে।

ইতিমধ্যেই স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন কর্নাটক একটি এই উদ্যোগের জন্য পাঁচ হাজার টাকা অনুদানও দিয়েছে। শর্মিলা জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করে দেশের বহু প্রাথমিক স্কুলগুলি উদ্যোগপতি হওয়ার যে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, তা-ই মূলত নজর কেড়েছে সমগ্র সম্মেলনে। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এই মেলা আয়োজিত হতে চলেছে। সেখানেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে অভিনব কিছু ভাবনা তুলে ধরা হবে, যা ছাত্রীদের বিশেষ ভাবে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার জন্য প্রত্যেক পড়ুয়াকে স্কুলের তরফে আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে। এতে তারা মেলা থেকে টাকা উপার্জন করার পরে আর্থিক সাহায্যে পাওয়া টাকা থেকে এক টাকা বেশি দিয়ে স্কুলকে ফেরত দিয়েছে। পাশাপাশি, প্রাপ্ত লাভের অংশ নানা ভাবে তারা বিনিয়োগ করেছে এ বছরের মেলার জন্য। তিনটি বিভাগে এই স্কুল পুরস্কৃত হয়েছে। ঝুলিতে সেলস পারসনস অ্যাওয়ার্ড, বেস্ট মার্কেটিং টিম অ্যাওয়ার্ড-এর পাশাপাশি আছে প্রফিট মেকিং পুরস্কারও। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, রাজ্য সর্বশিক্ষা মিশন সব সময়ে স্কুলগুলিতে নতুন কিছু করার উদ্যোগে পাশে থাকে। এবং তাদের এই পাশে থাকার ফলে আজ জাতীয় স্তরে বাংলার স্কুলের এই সাফল্য।

Advertisement
আরও পড়ুন