প্রতীকী চিত্র।
পেশায় নৈশপ্রহরী হলেও নেশা বইয়ে বুঁদ হয়ে থাকা। ঝুলিতে রয়েছে একাধিক ডিগ্রি। রয়েছে অদম্য জেদ এবং দারিদ্র্য পেরিয়ে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নও। আর এ সবে ভর করেই শেষমেশ সাফল্য এল হায়দরাবাদের ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল্লে প্রবীণ কুমারের জীবনে। সরকারি চাকরি পেতে যেখানে বাকিদের নাজেহাল অবস্থা, সেখানে প্রবীণ শেষ ১০ দিনে তিন তিনটে চাকরি পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
তেলঙ্গানার মানচেরিয়াল জেলার বাসিন্দা গোল্লে প্রবীণ কুমার। বয়স মাত্র ৩১ বছর। বাবা পেদ্দুলু পেশায় রাজমিস্ত্রি, মা পোসাম্মা বিড়ি বাঁধার কাজ করেন। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে দিন বদলের স্বপ্ন দেখতেন প্রবীণ। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে প্রবীণ জানিয়েছেন, আর্থিক প্রতিকূলতা কাটিয়ে সংসারে স্বাচ্ছল্য আনার লক্ষ্যই তাঁকে পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
প্রবীণ জানিয়েছেন, দিনে ১০ ঘণ্টা চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য তিনি বরাদ্দ রাখতেন। সন্ধে ৬টা থেকে সকাল ৮টার নৈশপ্রহরার কাজের ফাঁকে ফাঁকেই চলত এই প্রস্তুতি। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর এই কাজ যে শুধু অর্থ উপার্জনে সাহায্য করেছে তাই নয়, তাঁকে তাঁর পড়াশোনা চালিয়ে যেতেও সাহায্য করেছে।
তবে নৈশপ্রহরী হিসেবে চাকরি শুরুর আগে নিজের জন্মস্থান জন্নরামে বিকম পাশ করেছিলেন প্রবীণ। এর পর ২০১৩ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমকম, বিএড এবং এমএড কোর্সও সম্পূর্ণ করেন। তার পর বিশ্ববিদ্যালয়েই ৯০০০ টাকা মাসিক বেতনের চাকরি জোগাড় করে চলতে থাকে সরকারি পরীক্ষার প্রস্তুতি। এর পরই প্রশিক্ষিত গ্র্যাজুয়েট শিক্ষক (টিজিটি), পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষক (পিজিটি) এবং তেলঙ্গানা রেসিডেনশিয়াল এডুকেশনাল রিক্রুটমেন্ট বোর্ড আয়োজিত নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে জুনিয়র লেকচারার পদে চাকরির সুযোগ পান প্রবীণ।
তার এই বিরাট সাফল্যের জন্য নিজের অধ্যবসায়, ইচ্ছাশক্তি ছাড়াও পরিবারকে কৃতিত্ব দিতে ভোলেননি প্রবীণ। জানিয়েছেন, পরিবার পাশে না থাকলে তাঁর স্বপ্ন অধরাই থেকে যেত।