প্রতীকী চিত্র।
সিবিএসই-র দশমের পরীক্ষা দোরগোড়ায়। তার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা। কিন্তু পরীক্ষার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বর্তমানে সহায়িকা বইয়ের রমরমা বেড়েছে। সেই কারণে অনেকেই পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে সহায়ক হিসাবে এই ধরনের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলেছে। সেই অভ্যাস কী পরীক্ষা প্রস্তুতির ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে? এই প্রসঙ্গে বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল দমদমের আদিত্য অ্যাকাডেমির সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ মেঘনা ঘোষালকে। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে তিনি কী জানিয়েছেন, রইল সবিস্তার।
প্রশ্ন: পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে সহায়িকা বই পড়া কতটা যুক্তিযুক্ত?
মেঘনা ঘোষাল: পরীক্ষা প্রস্তুতি তো এক দিনে শুরু হয় না। তার জন্য নিয়মিত পাঠ্যবই পড়তে হয়, বিভিন্ন সহায়িকা বইয়ের প্রশ্নোত্তর পর্ব চর্চা করে নিতে হয়। তাই প্রতিটি অধ্যায় পাঠ্যবই থেকে ভাল করে পড়া ভীষণ ভাবে জরুরি। তা না হলে সহায়িকার প্রশ্নের উত্তর অভ্যাস করলেও প্রস্তুতি অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। কারণ যত ভাল করে পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়বে শিক্ষার্থী, তত সহজেই দ্রুততার সঙ্গে সহায়িকার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার অভ্যাস তৈরি হবে। এতে ভাল নম্বর তোলাও সহজ বলে মনে হবে পড়ুয়াদের।
প্রশ্ন: সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা কোন সময়ে সহায়িকা বইয়ের সাহায্য নিতে পারবে?
মেঘনা ঘোষাল: পরীক্ষার আগে এমনিতেই শিক্ষার্থীদের একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়। সে ক্ষেত্রে পাঠ্যবইয়ের সমস্ত অধ্যায় যত ক্ষণ না পড়া শেষ হচ্ছে, তত ক্ষণ সহায়িকা বইয়ের সাহায্য না নেওয়াই ভাল। কারণ কোনও একটি অধ্যায়ের জন্য পাঠ্যবই পড়া হয়ে যাওয়ার পর সহায়িকার সাহায্য নিয়ে পড়তে শুরু করলে বাকি অধ্যায়গুলি যেমন পড়া হবে না, তেমনই শেষ মুহূর্তের জন্য অনেক বিষয়ে একসঙ্গে চোখ বুলিয়ে নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। এতে আখেরে শিক্ষার্থীদেরই সমস্যা বাড়বে।
প্রশ্ন: এই বছরের পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞানের উপর বেশি প্রশ্ন আসতে পারে বলে শোনা গিয়েছে, সেই কারণেই কী পাঠ্যবই পড়ার বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে?
মেঘনা ঘোষাল: বোর্ডের তরফে প্রতি বছরই শিক্ষার্থীদের দক্ষতা এবং মেধা যাচাই করার মতো প্রশ্নই তৈরি করা হয়। তবে, এই বছরের ক্ষেত্রে সাধারণ জ্ঞান ভিত্তিক প্রশ্নের উপর বেশি জোর দেওয়া হবে। তাই পাঠ্যবইয়ের প্রতিটি অধ্যায়, প্রতিটি ছোট-বড় প্রশ্ন সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে শিক্ষার্থীদের। এতে সহজেই সব রকম প্রশ্নের উত্তর তারা লিখে ফেলতে পারবে। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি, সহায়িকার সাহায্যে ছোট ছোট প্রশ্নের উত্তর অভ্যাস করা যেতেই পারে। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে সহায়িকা বই পাঠ্যবইয়ের পরিপূরক নয়।
প্রশ্ন: সে ক্ষেত্রে কী একই বিষয়ে অন্যান্য বই পড়া যেতে পারে?
মেঘনা ঘোষাল: বই পড়ার অভ্যাস শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাতে বজায় থাকে, তাই তাদের বিভিন্ন লেখকের বই পড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, পরীক্ষার সময় পাঠ্যবই সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত সহায়িকা বই বা বিষয়ভিত্তিক অন্যান্য বইয়ের দিকে নজর না দেওয়াই ভাল। পাঠ্যক্রমের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধির স্বার্থে বিষয়ভিত্তিক অন্যান্য বই পড়তেই পারে। কারণ প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে যত বেশি পড়াশোনার সুযোগ মিলবে, ততই সেই বিষয় সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবে তারা। এতে তাদের বিষয়টির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিও পরিবর্তন হবে।