প্রতীকী ছবি।
চাকরির কাউন্সেলিং-এ ডাক পেয়েও চাকরিতে অনীহা প্রকাশ ৪৫ জন উচ্চ প্রাথমিক চাকরি প্রার্থীর। বাড়ির কাছে চাকরি না পাওয়ায় কাজে যোগ দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। যদিও এই পরিসংখ্যানে গুরুত্ব দিতে নারাজ স্কুল সার্ভিস কমিশন।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, “যত সংখ্যক প্রার্থীকে ডাকা হয়েছে তার মধ্যে যাঁরা রিজেক্ট করেছেন তাঁদের সংখ্যা খুবই কম। এঁদের মধ্যে বেশির ভাগই কর্মরত।”
দীর্ঘ লড়াই এবং অপেক্ষার পর কমিশনের তরফ থেকে প্রথম দফার ৯০০০ চাকরি প্রার্থীকে কাউন্সেলিং-এর জন্য ডাকা হয়েছে ৬ নভেম্বর থেকে। ২০১৫ সালে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছিল তার পর প্রায় ১০ বছর অতিক্রান্ত হতে চলেছে। ন’দিনে পাঁচ হাজার ৯০০ মতো চাকরিপ্রার্থীকে ডাকা হয়েছিল কাউন্সেলিং-এ। তার মধ্যে একাধিক জন ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলায় বাড়ির কাছে কর্মরত রয়েছেন বলে এসএসসি সূত্রের খবর। নিজের জেলা থেকে দূরে বা অন্য জেলায় স্কুল পাওয়ার ফলে এই সমস্ত চাকরিপ্রার্থীরা উচ্চ প্রাথমিকের চাকরির ক্ষেত্রে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
শিক্ষামন্ত্রীর কথা মতো সরকার আগামী দিনে নীতি আনতে চলেছে চাকরি জীবনের শুরুতে অন্তত কিছু দিন গ্রামে গিয়ে শিক্ষকতা করতে হবে।
যদিও স্কুল সার্ভিস কমিশনের এক আধিকারিক জানান, শহর বা গ্রামের কোনও বিষয় নয়। যাঁরা কাউন্সেলিং-এ এসেও উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই নিজের এলাকার কাছেই কর্মরত রয়েছেন সরকারি বা বেসরকারি কোন উচ্চ পদস্থ পদে। কিন্তু কাউন্সেলিং-এ দেখা যাচ্ছে ওই এলাকার যে শূন্য আসনের স্কুল রয়েছে সেটা তাঁর বাড়ি থেকে অনেক দূরের কোন জায়গায় বা গ্রামে। তাই তাঁরা অনীহা প্রকাশ করছেন চাকরিতে যোগদানের ক্ষেত্রে।
২ ডিসেম্বর প্রথম দফার উচ্চ প্রাথমিকের কাউন্সেলিং শেষ হবে। ন’দিনের কাউন্সেলিং-এর হিসাব অনুযায়ী,
৯০০০ চাকরি প্রার্থীর মধ্যে প্রায় ৫,৯০০ জনকে ডাকা হয়েছে। উচ্চ প্রাথমিকে মোট শূন্য আসনের সংখ্যা ১৪,৩৩৯। প্যানেলে নাম রয়েছে ১৩,৩৩৪ জনের মতো। ৪০০০ মতো এখনও চাকরিপ্রার্থী ওয়েটিং লিস্টে রয়েছেন। কমিশন সূত্রের খবর, যত জন চাকরিপ্রার্থীকে ডাকা হয়েছে তার মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ১৫ শতাংশ অনুপস্থিত। আর অন্যান্য বিষয় মিলিয়ে প্রায় ১০ শতাংশ অনুপস্থিত রয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের সদস্য সুশান্ত ঘোষ বলেন, “যাঁরা কাউন্সিলিং-এ গিয়ে না বলছেন তাঁদের হাতে চাকরি রয়েছে বাসস্থানের নিকটবর্তী অঞ্চলে। তাঁরা মেধা তালিকা অনুযায়ী স্কুল বাছাই করতে গিয়ে দেখছেন দুই থেকে তিনটি জেলা পাড়ি দিতে হচ্ছে বা শহর থেকে দূরের গ্রামে যেতে হচ্ছে।”
তবে অপেক্ষরত প্রার্থীরা কিছুটা হলেও আশাবাদী হচ্ছেন বর্তমান পরিসংখ্যান দেখে। তাঁদের অনেকেই মনে করছেন এর ফলে যাঁদের অপেক্ষমান তালিকায় নাম রয়েছে, তাঁদের চাকরির সুযোগ অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে।