আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র ভবন। নিজস্ব চিত্র।
১০ ডিসেম্বর রাজ্যে প্রাথমিকের টেট। প্রশ্নের মান সর্বভারতীয় টেট থেকে উন্নত মানের হবে বলে জানাল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর যোগ্যতা অর্জনের জন্য এই পরীক্ষা হলেও এতে মাধ্যমিকের সিলেবাস থেকে প্রশ্ন করা হবে বলে পর্ষদ সূত্রের খবর।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে বারবার শিক্ষক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। টেট পাস করে শিক্ষকতা করছেন অথচ বাংলা বানান সম্বন্ধে জ্ঞান প্রায় নেই বললেই চলে এই ধরনের তথ্য বহুবার প্রকাশ্যে এসেছে। তাই এ বছর শিক্ষক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মান উন্নয়নের প্রশ্নে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ যথেষ্ট সতর্ক।
পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল বলেন, “শিক্ষকদের প্রকৃত মেধা মূল্যায়নের জন্য যা করা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করা হবে, প্রশ্নের মান সেই অনুযায়ী হবে।”
পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত পর্ষদের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, শেষ যে টেট হয়েছিল সেখানে পাঠ্যক্রমকে মান্যতা দিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিন্তু এবার পাঠ্যক্রমকে মান্যতা দেওয়ার পাশাপাশি প্রশ্নের মান বৃদ্ধি করা হবে, যাতে হবু শিক্ষকদের মেধার প্রকৃত যাচাই করা যায়। এই মেধা যাচাইয়ের পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে আগে বেশ কিছু ত্রুটি ছিল বলেও মনে করেন তিনি।
এ বছর প্রশ্নপত্র কেমন হবে এবং কত নম্বরের প্রশ্ন থাকবে তার বিস্তারিত তথ্য ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। নমুনা প্রশ্নপত্র পর্ষদের তরফ থেকে প্রকাশ করা হয়েছে তাদের ওয়েবসাইটে। এ বছর টেটে বসার জন্য আবেদন করেছেন মোট তিন লক্ষ ন’হাজার ৫৪ জন প্রার্থী, যা গতবছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ কম।
১০ ডিসেম্বর আড়াই ঘন্টার এই পরীক্ষা শুরু হবে দুপুর ১২ টা থেকে। মোট ১৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে যেখানে ১৫০ টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে পরীক্ষার্থীদের। এই পরীক্ষা ব্যবস্থাকে মোট পাঁচটি বিভাগে ভাগ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
তবে কোনও নেগেটিভ মার্কিং থাকছে না। প্রথম ও দ্বিতীয় ভাষা ছাড়া বাকি প্রশ্নপত্র বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে করা হবে বলে জানিয়েছেন পর্ষদ।
প্রথমেই থাকছে শিশুদের শিক্ষাদানের বিদ্যা (চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট পেডাগগি) থেকে ৩০টি প্রশ্ন যার মান এক নম্বর করে। ভাষার ক্ষেত্রে মোট সাতটি ভাষায় পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। সেগুলি হল, বাংলা, হিন্দি, উর্দু, সাঁওতালি, নেপালি, তেলুগু ও ওড়িয়া। প্রথম ভাষার ক্ষেত্রে থাকছে ৩০ নম্বর। দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজি যেটা সকল পরীক্ষার্থীর জন্য বাধ্যতামূলক সেখানে থাকছে ৩০ নম্বর। অঙ্ক এবং পরিবেশবিদ্যাতেও থাকছে ৩০টি প্রশ্ন। মোট ৩০ নম্বরের।
পরীক্ষার নিরাপত্তা ব্যবস্থা গত বছরের মতই কেন্দ্রীয় ভাবে পরিচালনা করা হবে। তার জন্য ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এ ছাড়া এ বছর থেকে অ্যাডমিট কার্ডে দেওয়া হচ্ছে বারকোড যাতে নকল পরীক্ষার্থীরা সহজেই ধরা পড়ে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের যে ওয়েবসাইট রয়েছে সেটিকে এ বার সরকারি ওয়েবসাইট হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে যা এতদিন পর্যন্ত ছিল না।