বিদ্যাসাগর ভবন — ফাইল চিত্র।
এক দশক পর পরিবর্তন হতে চলেছে উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম। সর্বভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন পাঠক্রম তৈরি করা হবে বলে জানাল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “ যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই সিলেবাস পরিবর্তন করা হচ্ছে এবং সিলেবাস পরিবর্তন করার সময় এনসিআরটি অর্থাৎ সিবিএসই বোর্ডকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যাতে জাতীয় স্তরের যে কোনও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বাংলার পড়ুয়ারা পিছিয়ে না পড়েন তাই সিবিএসই পাঠ্যক্রমের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নয়া পাঠ্যক্রম তৈরি করা হচ্ছে।”
২০১২-১৩ সালে শেষ পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করা হয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে। তারপর দীর্ঘ ১০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, পড়াশোনায় অনেক পরিবর্তন এসেছে কিন্তু পরিবর্তন হয়নি উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম বা প্রশ্নপত্রের ধরন। এ বার সেই পরিবর্তনে উদ্যোগী হল সংসদ। এই পাঠ্যক্রম পরিবর্তনের জন্য প্রতিটি বিষয়ের সাব কমিটি গঠন করা হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে।
বর্তমানে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ৬০টি বিষয় পড়ানো হয়। এর মধ্যে ১৩টি ভোকেশনাল বিষয়ে পড়ানো হয়। উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম পরিবর্তন হলেও ভোকেশনাল সাবজেক্টের পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করা হচ্ছে না। যে হেতু এই ভোকেশনাল বিষয়ের পাঠ্যক্রম তৈরি করে ভোকেশনাল কাউন্সিল। অর্থাৎ বর্তমানে ৬০টি বিষয় পড়ানো হলেও ৪৭টি বিষয়ের পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করা হবে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে ৪৭টি বিষয়ভিত্তিক সাব কমিটি গঠন করা হয়েছে, প্রতিটি বিষয়ের জন্য এক জন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ শিক্ষক, কলেজ থেকে এক জন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক এবং স্কুল স্তর থেকে দু’জন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক নেওয়া হচ্ছে । এই চার সদস্যের কমিটি গঠন করে নয়া পাঠ্যক্রম তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন সংসদ।
বিষয়ভিত্তিক চার জন করে বিশেষজ্ঞকে নেওয়া হলেও বিশেষ বিষয়ের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই এই কমিটি গঠন করা হয়ে গেছে সংসদের তরফ থেকে এবং ১৬ ডিসেম্বর সংসদের তরফে প্রথম বৈঠক হতে চলেছে এই সমস্ত কমিটির সদস্যদের নিয়ে। সেখানে একটি গাইডলাইন স্থির করা হবে পাঠ্যক্রমে কী পরিবর্তন করা হবে আর কী ভাবে পরিবর্তন করা হবে, প্রশ্নপত্রেও কী পরিবর্তন করা হবে সে বিষয়ে তা-ও আলোচনা হবে এখানে।
শুধু যে পাঠ্যক্রম বা প্রশ্নপত্রেরই পরিবর্তন আনা হচ্ছে তা নয়, ২০২৪ সাল থেকে পরিবর্তন আসছে পরীক্ষা ব্যবস্থারও। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা সেমিস্টার সিস্টেমে গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। নয়া যে পাঠ্যক্রম তৈরি হবে তা একাদশ শ্রেণির ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্ষেত্রে দু’টি করে সেমিস্টারে ভাগ করা হবে।
সংসদের তরফ থেকে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেই কমিটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শুধু পাঠ্যক্রম পরিবর্তন নয়, নয়া প্রশ্নপত্র এবং সেমিস্টার সিস্টেমের সমস্ত তথ্য তৈরি করে দ্রুত সংসদের কাছে জমা দেবেন। তা সরকারের কাছেও পাঠানো হবে সংসদের তরফে। সরকারের অনুমোদন পেলেই ২০২৪ সাল থেকে পরীক্ষা ব্যবস্থা ও সিলেবাস নব রূপে সেজে উঠবে।