গত বছর ব্রাসেলসের এক পুজো।
টিনটিনের দেশে দুর্গাপুজো? সে আবার কেমন ব্যাপার? ছানাপোনা নিয়ে মায়ের আগমন উদ্যাপনে বেলজিয়ামও কিন্তু কম যায় না। খোদ রাজধানী ব্রাসেলসে প্রতি বছর জাঁকজমক করে দু’টো পুজো হয়। উদ্যোক্তা— ‘সর্বজনীন পূজা সমিতি’ এবং ‘ব্রাসেলস সম্মেলনী’।
ফ্লরিডা আর বেলফাস্টে প্রবাসী পুজো দেখার অভিজ্ঞতা থাকলেও ব্রাসেলস আসার আগে পুজো নিয়ে একটু চিন্তা ছিল। কিন্তু গত বছরেই সেই ভুল ভেঙে গেল। পুজোর সময়ে এখানে হিমেল আমেজ। তারই মধ্যে শাড়ি-সালোয়ার কামিজ-কুর্তি-লেহেঙ্গা-র ওপর গরম জামা চাপিয়ে, বেলজিয়ানদের চোখ ছানাবড়া করিয়ে, বাঙালি সেজে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার মজাই আলাদা।
ব্রাসেলসে মাত্র দেড় বছর ও সাকুল্যে একটাই পুজো কাটিয়ে এটাই বলতে পারি যে, এখানে দু’টো পুজোর ‘ফ্লেভার’ দু’রকম। আড়াইশোর উপর বাঙালি সকাল-বিকেল একটা বিশাল হলঘরে জমায়েত হন। সম্মেলনীর পুজোতে প্রতিদিন নিরামিষ ভোগ পাবেন, সঙ্গে বাংলা সিনেমা ও নানাবিধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সারা বছরের প্রস্তুতি চলে, এই পাঁচটা দিনকে অন্যান্য কর্মক্লান্ত দিনের থেকে আলাদা করতে। এখানে সবাই হাতে-হাতে পুজোর কাজ করেন, সঙ্গে ভোগ পরিবেশন ও গানবাজনা। ‘সর্বজনীন পূজা সমিতি’র সন্ধ্যারতি গত বছরের পুজোতে আমার সেরা প্রাপ্তি। এত সুন্দর আরতি বহু দিন পরে দেখেছি, তায় আবার সেটা বেলজিয়ামে!
নিজের পাড়ার পুজোর মতো ঢাক বাজানোর সুযোগই বা ক’টা পাওয়া যায়, বলুন? সর্বজনীন পূজা সমিতিতে এসে কিন্তু সেটাও পাবেন, তার
সঙ্গে ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতাও।
আরও পড়ুন: সাইবার সিটির শারদ-সরোদ
আরও পড়ুন: দেশের স্মৃতি ফিরিয়ে দেওয়াটাই হইচই-এর মূল থিম
গত বছর ‘সর্বজনীন পূজা সমিতি’তে নবমীর সন্ধ্যারতির পর কেউ একজন হঠাৎ করে ঢাকে বোল তুলেছিলেন। কয়েক মিনিট পরে তিনি ক্লান্ত হয়ে গেলে আর এক জন ঢাকের কাঠি হাতে তুলে নেন। তারপর আরও এক জন। এই করে বেশ কিছুক্ষণ ঘরোয়া ঢাকবাদ্যিতে গমগম করে হলঘর। কেউ তখনও খেয়াল করেনি, মঞ্চের ওপর মায়ের সামনে কেউ ধুনুচি তৈরি করছিল। হাতে হাতে ধুনুচি ঘুরে সে এক দারুণ ‘রিলে নাচ’ শুরু হয়ে যায়। ফোনে ছবি আর ভিডিয়োর বন্যা বয়ে যায় চারদিকে।
সব মিলিয়ে ব্রাসেলস জমজমাট। এ বার পুজোর পাঁচটা দিন সপ্তাহের মাঝখানে পড়লেও আশায় রয়েছি, প্রতিদিন দু’বেলাই দু’জায়গায় হাজিরা দিতে পারব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy