Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Durga Puja Outside Kolkata

সংস্কৃতে ডক্টরেট পুরোহিতমশাই এ বারও দিল্লি থেকে আসছেন সাগর পেরিয়ে

সিঙ্গাপুরে ভারতীয় বাঙালিদের আয়োজিত এই একমাত্র পুজোটি এ বছর ৬২ বছরে পা দেবে|

সিঙ্গাপুরের পুজো এ বছর ৬২ বছরে পা দেবে|

সিঙ্গাপুরের পুজো এ বছর ৬২ বছরে পা দেবে|

পম্পা ঘোষ
সিঙ্গাপুর শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ১১:২৫
Share: Save:

মহালয়ায় পূব গগনে সূর্য উঁকি দেবার আগেই, সুমি স্নান সেরে শিউলি তলায় এসে গাছটা মৃদু ঝাঁকিয়ে, আঁচল পেতে ফুলগুলো সংগ্রহ করে দৌড় দেয় রামকৃষ্ণ মিশনের দিকে। সকাল সাড়ে সাতটায় সারদা হলে শুরু আগমনী। এক বছর সমুদ্রসৈকতের একটি জায়গায় হওয়ার পর, গত ক’বছর ধরেই সিঙ্গাপুরে বার্টলে রোডের রামকৃষ্ণ মিশনে চণ্ডীপাঠ এবং গানে হচ্ছে দেবীপক্ষের সূচনা।

সিঙ্গাপুরে ভারতীয় বাঙালিদের আয়োজিত এই একমাত্র পুজোটি এ বছর ৬২ বছরে পা দেবে| অবশ্য পুজোর সূচনা তো সেই দু’মাস আগেই হয়ে গিয়েছে। সে দিন দেখা হতেই সুমিকে অন্তরার একরাশ কথা— “কি রে, আনন্দমেলায় এ বারে কোন খাবারের স্টল দিচ্ছিস? গতবার কিন্তু সেই সঙ্গে বাউল থিমের পেন্টিংগুলো জমে গিয়েছিল। আর জানিস, এ বারে আমাদের সপ্তমীর ভোগরান্নার জন্য মা দুর্গা আর গণেশের ব্লকপ্রিন্টের বুটিক শাড়ি আসছে কলকাতা থেকে!”

মৃদু হেসে সুমি বলে, “এখনই বলব কেন? আর শোন, এ বারেও দিল্লি কালীবাড়ির সেই সংস্কৃতে ডক্টরেট পুরোহিতমশাই আসছেন, উপাচারে কোনও ফাঁকি চলবে না। মণ্ডপসজ্জাতেও দেখবি কেমন রাজস্থানের অপূর্ব শিল্পকলার প্রতিচ্ছবি।”

আরও পড়ুন: রাজবাড়ির পুজো অথবা বাঁশের কেল্লা, শিল্প নির্দেশকের তৃপ্তির ঠিকানা​

পঞ্চমীর দিন আনন্দমেলা, সপ্তমী-অষ্টমী-নবমীর ভোগরান্না— সব কিছু নিয়েই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শুরু হয়ে গেছে জল্পনা-কল্পনা। আনন্দমেলায় তিলের তক্তি থেকে আনারসের সুফলে, গুলৌটি কাবাব থেকে অমৃতি— জিভে জল আনা খাবারের পসরা নিয়ে হাজির হবে বঙ্গললনারা। কে বলেছে, নবমীর দিন ফ্যাশন প্যারেডে চুলটা নতুন স্টাইলে বাঁধলে এই সব সাবেকি রান্না করা যাবে না?

প্রতিদিন সকালে মহিলাদের একই রকমের শাড়ি পরে ষোড়শোপচারে মায়ের ভোগ নিবেদনের রীতিটি যেমন ভক্তিবিহ্বল আবহ তৈরি করে, তেমনই সন্ধ্যারতির পর অপূর্ব সাজে সজ্জিতা নৃত্যপটিয়সীদের ধুনুচি নাচ দেখলে আপনার মনে হতেই পারে— স্বর্গ থেকে ঊর্বশী, রম্ভারা বুঝি মর্ত্যে নেমে এসেছেন।

সন্ধ্যারতির পর প্যান্ডেলের অন্য দিকে প্রতি দিনই থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দরা বারবার ফিরে আসেন। যেখানে বিদেশের মাটিতে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মও অংশগ্রহণ করে, এবং বাংলা সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হয়, সম্পর্ক তৈরি হয়।

আরও পড়ুন: বারান্দা-মণ্ডপে মুক্তি রূপে দেবী​

মূর্তিমতী ফাইবারের মা দুর্গা ২০১৫ সালে জাহাজে চেপে আসেন সিঙ্গাপুরে, সেটি এখনও পূজিতা হচ্ছেন| তার আগে মাটির প্রতিমা আনা হত। দশমীর ঘট বিসর্জনের পর থেকে বর্তমান প্রতিমা থেকে যান কোনও ওয়্যারহাউসে। এক বছর পরেও আবির্ভূতা হন সেই প্রজ্বলিত রূপে, আসলে মা যে অবিনশ্বর।

সিঙ্গাপুরে আনুমানিক তিন হাজারের উপর ভারতীয় বাঙালি আছেন| এ ছাড়া বহু বাংলাদেশি আছেন, যাঁরা আরও তিনটি পুজো করেন| রামকৃষ্ণ মিশনেও প্রতি বছর পটচিত্রে মায়ের আরাধনা হয়|

মহা ধুমধামে পুজোর পর মনটা হুহু করে ওঠে। তার পর পুজোর উদ্বৃত্ত অর্থ দিয়ে কোনও বৃদ্ধাশ্রমে সেবামূলক কাজের উদ্যোগ নেন কর্মকর্তারা। তখন মনে হয়, দেবী প্রকৃত অর্থেই দুর্গতিনাশিনী হয়ে অধিষ্ঠিতা হয়ে রয়ে গেলেন আমাদের সঙ্গেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Outside Kolkata International Durga Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE