বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শরীর ভাঙছে। তাই অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেন স্পেনের রাজা হুয়ান কার্লোস। সিংহাসনে বসতে চলেছেন তাঁরই ছেলে ফেলিপ। আজ স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয় নিজেই সংবাদমাধ্যমকে এ খবর জানিয়েছেন। রাজয়ের কথায়, “রাজা নিজেই সিংহাসন থেকে সরে আসতে চাইছেন। আমি মনে করি, এটাই পরিবর্তনের সেরা সময়।”
৭৬ বছরের কার্লোস শারীরিক কারণে সরে আসতে চাইলেও এই সিদ্ধান্তের পিছনে অন্য ইঙ্গিত দেখছেন অনেকে। আসলে একদা স্পেনের অতি জনপ্রিয় এই রাজা কয়েক বছর আগে থেকেই সমর্থন হারাতে শুরু করেছিলেন। ১৯৭০ সালে ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর একনায়কতন্ত্রের হাত থেকে দেশকে গণতন্ত্রের রাস্তায় আনেন কার্লোস। দেশের মানুষের সঙ্গে বরাবরই ভাল যোগাযোগ রাখতেন কার্লোস। ব্রিটিশ রাজপরিবারের মতো নাক উঁচু স্পেনের রাজার নন। তাই কিছু দিন আগে পর্যন্তও কার্লোসের জনপ্রিয়তা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু ২০১২ সাল থেকে সেই ছবি পাল্টাতে শুরু করে। দেশের আর্থিক সঙ্কটের সময় রাজা তাঁর পরিবারের সঙ্গে বতসোয়ানায় শিকার সফরে গিয়েছিলেন। সেই শিকারের ছবি পরে ফলাও করে বেরোলে, দেশের মানুষ তা ভাল চোখে নেয়নি। এর পর একের পর এক দুর্নীতি মামলায় জড়িয়ে পড়েছে কার্লোস ও তাঁর মেয়ে-জামাইয়ের নাম।
গত জানুয়ারির এক সমীক্ষায় স্পেনের ৬২ শতাংশ মানুষ রাজার পদত্যাগের পক্ষে সায় দেন। সমালোচকেরা বলছেন, সেই জন্য এই সময়টাকেই বেছে নিয়েছেন রাজা। কার্লোসের মতো তাঁর ছেলে ফেলিপের নাম কোনও দুর্নীতি মামলায় জড়ায়নি। ফলে সিংহাসনের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে ফেলিপকেই জায়গা ছেড়ে দিচ্ছেন বৃদ্ধ রাজা।