১৯০তম জন্মদিনে জোনাথন। গোটা দ্বীপ জুড়ে চলছে উৎসব। — ফাইল ছবি।
দক্ষিণ অতলান্তিকের সেন্ট হেলেনা দ্বীপে যেন অকাল দীপাবলি। আলোর মালা, আর ফুলের সাজে সেজে উঠেছে দ্বীপ। উপলক্ষ, দ্বীপেরই অন্যতম বাসিন্দা সেশেলস জায়ান্ট টরটয়েজ বা কচ্ছপের ১৯০ তম জন্মদিন। নাম জোনাথন। মনে করা হয়, এই জোনাথনই বিশ্বের প্রাচীনতম বাসিন্দা।
১৮৩২ সাল। পোর্তো প্রায়োতে এসে নামলেন বিবর্তনবাদের স্রষ্টা চার্লস ডারউইন। কিন্তু তখনও আবিষ্কার হয়নি বিবর্তনবাদের। লন্ডনে কলেরার প্রাদুর্ভাবও সে বছরেরই ঘটনা। একই বছর জন্ম জোনাথনেরও। তার পর দু-দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, দুনিয়ার হাজার ওঠাপড়া পেরিয়ে আজও সে গুটিগুটি পায়ে আগুয়ান। ভূমিতলে চলাফেরা করছে এমন প্রাণীর মধ্যে জোনাথনই সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ। এ হেন জোনাথনের জন্মদিনে গোটা দ্বীপ সেজে উঠবে, তাতে আর আশ্চর্য কী!
জোনাথনের বাসস্থান দ্বীপরাষ্ট্রের গভর্নরের বাসভবন। এই উপলক্ষে সেখানকার দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। মানুষ আসছেন চলমান ইতিহাসের গায়ে হাত বুলিয়ে ঘটনার সাক্ষী হতে। মনে করা হয়, জোনাথনের জন্ম ১৮৩২-য়ে। ১৮৮২ নাগাদ তাকে সিসিলিস থেকে আনা হয় সেন্ট হেলেনায়। তার পর থেকে গভর্নরের বাসভবনই তার ঠিকানা।
কিন্তু সেন্ট হেলেনার পর্যটন প্রধান ম্যাট জোশুয়ার মতে, জোনাথনের আসল বয়স নাকি ২০০ পেরিয়ে গিয়েছে অনেক দিন। তবে ১৮৩২-কেই তার জন্মবর্ষ হিসাবে ধরা হয়।
বয়সের ভারে দৃষ্টিশক্তি ও ঘ্রাণশক্তি হারিয়েছে জোনাথন। কিন্তু তার কানের জোর এখনও অটুট। সামান্য আওয়াজেও তার মুখ নড়ে ওঠে, এখনও। জোনাথনের চিকিৎসক অবশ্য বলছেন অন্য কথা। তাঁর মতে শরীর, মন ভাল থাকলে জোনাথনের মেজাজ থাকে চাঙ্গা। সকালের মিঠে রোদের ওম মাখা থেকে শুরু করে চিকিৎসকের সঙ্গে অবোধ্য আলাপচারিতা— সবই দেখার মতো। তবে গভর্নরের বাসভবনে অবশ্য জোনাথন একা থাকে না। তাঁর সঙ্গেই থাকে আরও তিনটি অতিকায় কচ্ছপ— ডেভিড, এমা ও ফ্রেড। তিন জনের বয়সই নাকি একশো পেরিয়েছে, কিন্তু জোনাথনের কাছে তারা এখনও দুধের শিশু!