থাবা বসাচ্ছে ওমিক্রন ফাইল চিত্র ।
বিভিন্ন দেশের সরকার করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধ করার জন্য নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরেও বিশ্বজুড়ে থাবা বসাচ্ছে ওমিক্রন রূপ। নতুন বছরের মুখেই করোনার বাড়বাড়ন্ত বিশ্ববাসীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক দিনে লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হওয়ার পর, ফ্রান্স ইউরোপের সর্বাধিক কোভিড আক্রান্ত দেশ হয়ে উঠেছে। ফ্রান্সের পাশাপাশি ইতালি, গ্রিস, পর্তুগাল এবং ইংল্যান্ডেও প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে।
ব্রিটেনে মঙ্গলবার নতুন করে ১২৯,৪৭১ জন নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার পর, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন যে, ভাইরাসের অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য ওমিক্রন রূপের বিস্তার রোধ করতে এই বছর তিনি নতুন কোনও বিধিনিষেধ আনবেন না। স্কটল্যান্ডেও ৯,৩৬০ জন নতুন আক্রান্তের খবর উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমেরিকায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৫৮.৬ শতাংশ ওমিক্রন রূপে আক্রান্ত বলে জানান হয়েছিল।
একইসঙ্গে আমেরিকার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের প্রস্তাবিত কোভিড -১৯-এর নিভৃতবাসের সময়কাল ১০ দিন থেকে কমিয়ে ৫ দিন করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন চিকিত্সা বিশেষজ্ঞরা। এই প্রস্তাব আমেরিকার নাগরিকদের মধ্যে আরও বিভ্রান্তি এবং ভয় তৈরি করেতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
ধীরে ধীরে ভারতেও থাবা বসাচ্ছে ওমিক্রন। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে বর্তমানে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৭৮১।
ওমিক্রন এখনও পর্যন্ত কোভিডের সর্বশেষ পরিবর্তিত এবং সব থেকে সংক্রমণযোগ্য রূপ। এই রূপ বিশ্বব্যাপী দ্রুত শক্তিশালী হয়ে উঠছে। একই সঙ্গে, সাধারণ টিকাগুলি ওমিক্রন রূপের উপর কার্যকর নয় বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। মঙ্গলবার পর্যন্ত, গত সাত দিনে বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮,৪১,০০০। এক মাস আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার ওমিক্রন রূপ প্রথম শনাক্ত হয়েছিল। তখনকার তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪৯ শতাংশ।
বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী, ওমিক্রন আগের রূপগুলির তুলনায় ৭০ গুণ দ্রুত সংক্রামিত হয়। তবে ওমিক্রনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শারীরিক অবস্থা গুরুতর নাও হতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা টিকা এবং বুস্টার টিকা পেয়েছেন তাঁদের উপর ওমিক্রন মারাত্মক প্রভাব ফেলবে না বলেও মত বিশেষজ্ঞদের।
বিভিন্ন দেশের সরকার ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করছে যে, উত্সব মরশুমের পরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এবং হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়তে পারে। একই সঙ্গে বিশ্ববাসী অতিমারির তৃতীয় ঢেউয়ের মুখোমখি হতে পারে বলেও আশঙ্কা বিজ্ঞানী মহলের।