হিন্দুত্ববাদী নেতাদের সঙ্গে হাসিঠাট্টায় মত্ত পুলিশ ফাইল চিত্র ।
সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে ‘ধর্ম সংসদ’-এর হিন্দুত্ববাদী নেতারা একটি সমাবেশে মুসলমানদের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং অস্ত্র ব্যবহারের ডাক দিয়ে বির্তকে জড়িয়েছিলেন। এইবার একটি ভিডিয়োতে একজন পুলিশ অফিসারের সঙ্গে হাসতে হাসতে কথা বলে ফের বির্তকের কেন্দ্রবিন্দুতে এই হিন্দু ধর্মীয় নেতারা। ভিডিয়ো সামনে আসার পরে প্রশ্ন উঠছে পুলিশের ভূমিকা এবং নিরপেক্ষতা নিয়েও।
ভাইরাল হওয়া এই ভিডিয়োতে পুলিশ অফিসার, রাকেশ কথাইতের সঙ্গে বিতর্কিত ‘ধর্ম সংসদ’-এর আয়োজক তথা হিন্দু রক্ষা সেনার সদস্য প্রবোধানন্দ গিরি, ধর্মীয় নেতা ইয়াতি নরসিংহানন্দ, পূজা শাকুন পাণ্ডে ওরফে সাধ্বী অন্নপূর্ণা, শঙ্করাচার্য পরিষদ নামে একটি সংগঠনের প্রধান আনন্দ স্বরূপ ও ওয়াসিম রিজভি ওরফে জিতেন্দ্র নারায়ণকে দেখা গিয়েছে।
ভিডিয়োতে পূজা শকুন পাণ্ডেকে পুলিশ অফিসার, রাকেশ কথাইতের উদ্দেশে বলতে শোনা যায় যে, ‘‘আপনার একটি বার্তা পাঠানো উচিত যে আপনি পক্ষপাতিত্ব করছেন না। আপনি একজন অফিসার এবং আপনার সবার সঙ্গে আচরণ সমান হওয়া উচিত। আমরা আপনার কাছ থেকে এটাই আশা করি। আপনি সবসময় জয়ী হোন।’’
এরপরেই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা যতি নরসিংহানন্দ বলেন, ‘‘লাড়কা হামারে তরফ হোগা (পুলিশ আমাদের পাশেই থাকবে)।’’
এই কথা শুনে উপস্থিত হিন্দু ধর্মীয় নেতাদের এবং পুলিশ অফিসার রাকেশ কথাইতকে হাসিতে ফেটে পড়তে দেখা যায়। একইসঙ্গে এই কথা শোনার পর সম্মতি হিসেবে মাথাও নাড়তে দেখা যায় পুলিশ অফিসারকে। এরপরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারী পাঁচ হিন্দু নেতা, মুসলিম ধর্মগুরু বা মৌলানাদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার হরিদ্বার থানায় মামলা দায়ের করতে গিয়েছিলেন। মৌলানারা হিন্দুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন এই অভিযোগ এনেও সরব হন এই নেতারা। যদিও পুলিশ দাবি করেছে যে, এই বিষয়ে কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, হরিদ্বার সমাবেশে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য মামলায় উত্তরাখণ্ড পুলিশের দায়ের করা এফআইআর-এ, উপস্থিত তিন হিন্দু ধর্মীয় নেতাদের নাম আছে। ধর্ম সংসদে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যে প্রসঙ্গে, মাঝেমধ্যেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ছবিতে মুখ দেখানো প্রবোধানন্দ গিরি বলেছিলেন, ‘‘আমি যা বলেছি তাতে আমি লজ্জিত নই। আমি পুলিশকে ভয় পাই না। আমি আমার বক্তব্যে অটল থাকব।’’