প্রতীকী চিত্র।
কোনও ছোট বাচ্চাকে যখন দেখা যায় বাঁ হাতে কাজ করতে, তখন অনেক সময় সমাজে তাদের কিছু ক্ষেত্রে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। আসলে বিষয়টিকে অনেকেই স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারেন না। অনেক বাবা-মা বিষয়টিকে স্বাভাবিক ভাবে নিলেও অনেকেই কিন্তু বাঁ হাতে লেখা, খাওয়া ঠিক মেনে নিতে পারেন না। আসলে বিশ্ব জুড়ে আন্তর্জাতিক বাঁ-হাতি দিবস পালন করা হয় সম্ভবত এই সব মানুষকে বোঝানোর জন্য যে, এটা কোনও অস্বাভাবিকতা নয়। ডান-হাতিরা যেমন মস্তিষ্কের বাঁ দিকের অংশটি বেশি ব্যবহার করেন, তেমনই বাঁ-হাতিরা মস্তিষ্কের ডান দিকের অংশ বেশি ব্যবহার করেন।
১৯৭৬ সালে প্রথম পালিত হয় আন্তর্জাতিক বাঁ-হাতি দিবস। শুরুটা করেন, ডিন আর ক্যাম্পবেল নামে এক ব্যক্তি, যিনি ‘লেফ্টহ্যান্ডার্স ইন্টারন্যাশনাল’ নামে এক সমিতি প্রতিষ্টা করেন। সেই থেকে প্রতি বছর ১৩ অগস্ট পালিত হয় এই দিনটি। মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা হয়, বাঁ-হাতি হলে যেমন কিছু অসুবিধা আছে, তেমন কিছু সুবিধাও আছে। বিশ্বে পুরুষ-মহিলা মিলিয়ে প্রায় দশ শতাংশ মানুষ বাঁ-হাতি। আর বিশ্বের বিখ্যাত মানুষের তালিকায় বাঁ-হাতিদের সংখ্যাটা নেহাত কম নয়।
একবার বাঁ-হাতি বিখ্যাত মানুষদের তালিকায় চোখ বোলালেই বুঝতে পারবেন, তাঁরা ডান-হাতিদের থেকে কোনও অংশে কম বা আলাদা নন, শুধু ডান হাতের বদলে বাঁ হাত ব্যবহারে সচ্ছন্দ। অ্যালবার্ট আইনস্টাইন, অ্যারিস্টটল, লিওনার্দো দা ভিঞ্চি, মেরি কুরি, বারাক ওবামা, বিল গেটস, মার্ক জাকারবার্গ, অমিতাভ বচ্চন, সচিন তেন্ডুলকর, ব্রায়ান লারা, ওয়াসিম আক্রাম, রাফায়েল নাদাল, ডেভিড গাওয়ার, অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, টম ক্রুজ, হেলেন কেলার, লেডি গাগা, লুইস ক্যারল, প্রিন্স উইলিয়ামস, ওপরাহ উইনফ্রে, এঁদের পরিচয় নতুন করে দেওয়ার কিছু নেই, এঁরা সবাই বাঁ-হাতি। এই তালিকা নেহাতই ছোট নয়, আরও প্রচুর বাঁ-হাতি বিখ্যাত মানুষের নাম তালিকায় রয়েছে। ফলে বাঁ-হাতিরা ডান-হাতিদের থেকে কম তো ননই, বরং এগিয়েই বলা যায়।
আরও পড়ুন: নার্সিংহোমে ভর্তি স্বামী, ১১৪ দিন দেখা হয়নি, শেষে সেখানে বাসন ধোয়ার কাজ নিয়ে নিলেন মহিলা
আরও পড়ুন: এক গলা জলে ডুবেও দিব্যি চলছে বাইক
এটা বলা হয়, বাঁ-হাতিরা ডানহাতিদের থেকে বেশি সৃষ্টিশীল এবং বুদ্ধিমান হন। উপরের তালিকা দেখলে অবশ্য এই দাবি সম্পর্কে সন্দেহ হওয়ার কথা নয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মস্তিষ্কের ডান এবং বাঁ অংশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা ডান-হাতিদের থেকে বাঁ-হাতিদের বেশি, এর ফলেই তাঁরা বেশি বুদ্ধিমান হন। এমনকি বাঁ-হাতিদের জলের তলায় দৃষ্টিশক্তি ডান-হাতিদের থেকে বেশি। খুঁজলে এমন অনেক খুঁটিনাটি বিষয় সামনে আসবে। তবে সে সব সরিয়ে রাখলেও বাঁ-হাতি দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য এই বার্তা দেওয়া-- তাঁরা কোনও ভাবেই অস্বাভাবিক নন, ডানহাতিদের মতোই স্বাভাবিক।