দেওয়ালের এই লেখচিত্রই কি মিকেলাঞ্জেলোর? সোশ্যাল মিডিয়া
ফ্লোরেন্স শহরের মেদিচি চ্যাপেলের তলায় লুকিয়ে রয়েছে কয়েকশো বছরের পুরনো এক রেনেসাঁস-গুপ্তকথা।
এই চ্যাপেলের একটি কাঠের আলমারির পিছনে সম্প্রতি একটি ‘ট্র্যাপডোর’ বা ঠেলা দরজার সন্ধান মিলেছে। সেই দরজা ঠেলে পৌঁছনো যায় মাটির তলার একটি ঘরে। প্রাচীন ভবনে এ ধরনের চোরাকুঠুরি নতুন কিছু নয়। কিন্তু আসল চমক লুকিয়ে ছিল ঘরের দেওয়ালে, পলেস্তারার আস্তরণের নীচে।
দিন কয়েক আগে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধে এই ‘আবিষ্কারের’ কথা জানানো হয়েছে। মেদিচি চ্যাপেলের শিল্প বিশেষজ্ঞেরা ঘরটি খুঁটিয়ে দেখতে গিয়ে খেয়াল করেন, দেওয়ালের পলেস্তারাটি যেন মেঝের থেকে অনেক বেশি পুরনো। অর্থাৎ ঘর তৈরি করার অনেক পরে যেন দেওয়ালের উপরে এই পলেস্তারা লাগানো হয়েছিল। এর আগে অনেক সময়ে গবেষকেরা এই ধরনের পলেস্তারা সরিয়ে প্রাচীন শিল্প নির্দশনের খোঁজ পেয়েছেন। এই দেওয়ালেও সে রকম কোনও চমক লুকিয়ে নেই তো?
এই প্রশ্নের উত্তর খঁুজতেই শুরু হয় পলেস্তারা সরানোর কঠিন পরিশ্রমসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। সেই কাজ শেষ হতেই হতবাক হয়ে যান গবেষকেরা। গোপন কুঠুরির দেওয়ালে তো আনকোরা মিকেলাঞ্জেলো!
হ্যাঁ, মিকেলাঞ্জেলো বুয়ানোরত্তি। ১৫-১৬ শতকের এই শিল্পী ফ্লোরেন্সের মেদিচি রাজপরিবারের হয়ে বহু কাজ করেছেন। অপরূপ শিল্পকর্মে ভরিয়েছেন ভ্যাটিকান সিটির সিস্টিন চ্যাপেলের বিশাল ছাদ।
অনেক গবেষক যদিও মানতে নারাজ এই সব স্কেচ বা লেখচিত্র রেনেসাঁস যুগের অন্যতম বিখ্যাত শিল্পীর কীর্তি। তাঁদের দাবি, কোনও স্বাক্ষর ছাড়া এই ছবিগুলি বেশ কাঁচা হাতের কাজ। কিন্তু এক দল গবেষকদের দাবি, মিকেলাঞ্জেলোর মতো মহান শিল্পীদের প্রত্যেকের শিল্পশৈলী অনন্য। শিল্প সমালোচকেরা তাই সহজেই বুঝতে পারেন, কোনটা
লিয়োনার্দো দা ভিঞ্চি, কোনটা বত্তিচেলি, কোনটা বা মিকেলাঞ্জেলোর সৃষ্টি। গোপন ঘরের দেওয়ালে খঁুজে পাওয়া স্কেচের ‘স্ট্রোক’-ই বলে দিচ্ছে, সিস্টিন চ্যাপেলের শিল্পীরই সৃষ্টি এগুলি। তা ছাড়া, মিকেলাঞ্জেলোর বানানো ‘অ্যাপোলো ডেভিড’ নামের একটি মার্বেল মূর্তির সঙ্গে একদম মিলে যাচ্ছে দেওয়ালের একটি স্কেচ। গবেষণা করে দেখা গিয়েছে, ছবির সময়সীমা মিকেলাঞ্জেলোর জীবদ্দশার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।