প্রতীকী ছবি। — ফাইল চিত্র।
শুক্রবার সকাল থেকেই মাইক্রোসফ্টের একাধিক পরিষেবা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিভ্রাট দেখা দিয়েছিল। বিশ্ব জুড়ে বিমান পরিষেবা, ব্যাঙ্ক এমনকি শেয়ার বাজারেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। অথচ বিশ্বের সর্বত্র নানান দফতর কার্যত অচল হয়ে গেলেও কিছু মাত্র আঁচ পড়ল না চিনে!
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বিশ্ব জুড়ে মাইক্রোসফ্ট বিভ্রাটের দিনেও নাকি বহাল তবিয়তে ছিল বেজ়িং এবং সাংহাই এয়ারপোর্ট! দিব্যি চালু ছিল দেশের ব্যাঙ্ক পরিষেবাও। কারণটা সহজ। মাইক্রোসফ্ট ‘ক্রাউডস্ট্রাইক’-এর ব্যবহারই নেই চিনে! সাইবার নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে দেশে বেশির ভাগ সরকারি ও বেসরকারি দফতরের কাজের জন্য কোনও বাইরের প্রযুক্তি ব্যবহার করে না চিন। ক্লাউড সার্ভার হিসাবেও সেখানে আলিবাবা, টেনসেন্ট এবং হুয়াইয়ের ব্যবহারই বেশি।
তবে চিনে হাতে গোনা কিছু সংস্থায় এখনও আমেরিকার সফ্টওয়্যারটির ব্যবহার রয়েছে। সেগুলির বেশির ভাগই বাইরের। শুক্রবার চিনে সে সব সংস্থার পরিষেবা বন্ধ ছিল। চিনের সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন, বিশেষত হায়াত, ম্যারিয়ট কিংবা শেরাটনের মতো আন্তর্জাতিক হোটেলগুলিতে বুকিংয়ের ক্ষেত্রে এই রকম সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়েছে তাঁদের।
শুক্রবার সকাল থেকে ‘ব্লু স্ক্রিন অফ ডেথ’-এর সমস্যায় ভুগছিল মাইক্রোসফ্ট। শুক্রবার ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ আচমকাই কম্পিউটারের স্ক্রিন নীল হয়ে যায়। চলতে চলতে হঠাৎই কম্পিউটারের স্ক্রিন নীল হয়ে যাওয়া, তার পর শাট ডাউন হয়ে পুনরায় নিজে থেকেই চালু হওয়ার মতো ঘটনা নিয়ে হইচই পড়ে যায়। কেন হল, কী ভাবে হল, কোথায় সমস্যা এ নিয়ে যখন বিশ্ব জুড়ে জল্পনা চলছে, তখন মাইক্রোসফ্ট দাবি করে, ‘ক্রাউডস্ট্রাইক’ আপডেটের জন্য এই সমস্যা হয়েছে। যার জেরে বিপাকে পড়েছে উইন্ডোজ় অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারী ডেস্কটপ ও ল্যাপটপগুলি। তবে বিকেলের মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা আয়ত্তে আনে সংস্থা। ঘটনা প্রসঙ্গে অ্যান্টিভাইরাস সংস্থা ক্রাউডস্ট্রাইক-এর সিইও বলেন, ‘‘শুক্রবার বিশ্ব জুড়ে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল মাইক্রোসফ্টের, তা মিটিয়ে ফেলা হয়েছে। বিশ্ব জুড়ে এই ঘটনার পর পরই সাইবার হানার তত্ত্বও জোরালো হচ্ছিল। যদিও সেই তত্ত্বকে পুরোপুরি খারিজ করে দিয়েছে মাইক্রোসফ্ট।’’
মাইক্রোসফ্টের এই সমস্যার জেরে সাময়িক ভাবে বিশ্ব জুড়ে বিমান, ব্যাঙ্ক, শেয়ার বাজারেও ব্যাপক প্রভাব পড়ে। এই সমস্যার জেরে শুক্র ও শনিবার গোটা বিশ্বে ১৪০০টি বিমান বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছে বিমান চলাচল সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণকারী সংস্থা সিরিয়াম। ওই সংস্থার তথ্য বলছে, আমেরিকায় ৫১২টি বিমান বাতিল হয়েছে। জার্মানিতে ৯২, ভারতে ৫৬, ইতালিতে ৪৫ এবং কানাডায় ২১টি বিমান বাতিল হয়েছে। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরের টার্মিনালে এক থেকে ৯০ শতাংশ বিমান পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। যদিও শনিবারের মধ্যেই আবার স্বাভাবিক হয়েছে পরিষেবা।