প্রতীকী ছবি। — ফাইল চিত্র।
রবিবার সকালে কেরলের কোঝিকোড়ে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরের। এর পরেই নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্য জুড়ে জারি হয়েছে সতর্কতা। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ সকলকে মাস্ক পরতে অনুরোধ জানিয়েছেন। বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে কোঝিকোড়ের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঢোকা ও বেরোনোর ক্ষেত্রেও। নির্দেশ অনুযায়ী, প্রত্যেক রোগীর সঙ্গে কেবল মাত্র এক জনই হাসপাতালে ঢুকতে পারবেন। হাসপাতালের বহির্বিভাগকে বাকি ওয়ার্ডগুলি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। কোনও রকম উপসর্গ দেখলেই নিভৃতবাসে থাকার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। মলপ্পুরমের পানিক্কর ও অনাক্কয়ম গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের সতর্ক করতে প্রচার অভিযান চালানো হবে বলেও জানিয়েছেন বীণা। এর মাঝে আবার চিকিৎসকেরা বলছেন, পাখি কিংবা পশুতে ঠোকরানো ফল খাওয়া থেকেও নিপার সংক্রমণ হতে পারে। তাই বাজার থেকে কেনা ফল ভালো ভাবে ধুয়ে তবেই খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
স্বাস্থ্য দফতর আরও জানিয়েছে, ২১৪ জনকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে। তাঁদের কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। কোনও রকম উপসর্গ ধরা পড়লেই তাঁদের নিভৃতবাসে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়াও রাজ্যে চার জন বর্তমানে নিপা আক্রান্ত। মাঞ্জেরি হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
কেরলে নিপা ভাইরাসের হানায় মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরের। কিশোরের বয়স ১৪, কেরলের মলপ্পুরমের বাসিন্দা সে। গত ১৯ জুলাই ওই কিশোরকে জ্বর, মাথাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ নিয়ে কোঝিকোড় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আগেই কিশোরের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পুণের গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছিল। শনিবার সেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। কিশোরের দেহে নিপা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়ার পর চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজ্যে। আক্রান্ত কিশোরকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। রবিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে তার।
এ পর্যন্ত কেরলে পাঁচ বার নিপা ভাইরাস সংক্রমণের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। প্রথম বার ২০১৮ সালে, সে বার ১৭ জন মারণ ভাইরাসের থাবায় প্রাণ হারান। প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন দু’জন। পরের বছর ২০১৯ সালে ফের এর্নাকুলাম থেকে সংক্রমণের খবর আসে। এর পর ২০২১ এ নিপা-সংক্রমণে মারা যায় ১২ বছরের এক কিশোর। ২০২৩ এও নিপার কারণে দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। চলতি বছরেও মারণ ভাইরাস হানা দেওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে কেরলে।