ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের প্রচারসভায় হলিউড অভিনেত্রী এবং গায়িকা জেনিফার লোপেজ়। নেভাডার লাস ভেগাসে। ছবি: রয়টার্স।
২০২৪ সালের আমেরিকান নির্বাচনে অর্থনৈতিক মন্দা, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে আর একটি বিষয় যা ভোটারদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা হল অভিবাসী সমস্যা। বর্তমানে আমেরিকায় ৪ কোটি ৭৮ লক্ষ অভিবাসী বসবাস করেন যা মূল জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ। সাম্প্রতিক একটি নির্বাচনী জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে অভিবাসনের বিষয়টিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া ভোটারদের সংখ্যা ৪.৮ শতাংশ থেকে ১৪.৬ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। ১৫ বছরে এই সংখ্যা সব
থেকে বেশি বেড়েছে ’২১ থেকে ’২৪-এর মধ্যে— প্রায় ৫.৪ শতাংশ।
ভোটারেরা অভিবাসনের বিষয়টিকে কেন এত গুরুত্ব দিচ্ছেন? এর উত্তরটা দাঁড়িয়ে রয়েছে ২০১৬ এবং ২০২০ সালে নির্বাচিত হওয়া দুই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জো বাইডেনের আমলের অভিবাসন বিষয়ক বিভিন্ন নীতির উপরে ।
২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে মেক্সিকো-আমেরিকা সীমান্তে প্রাচীর তোলা, বহু অনুপ্রবেশকারীকে ফেরত পাঠানো, সীমান্তে পরিবারদের বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া, বাচ্চাদের পরিবারের থেকে আলাদা করা— এমন বহু মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এর পরে যখন বাইডেন প্রেসিডেন্ট হয়ে আসেন, তাঁর নীতি হয় সীমান্তে আসা শরণার্থীদের সঙ্গে মানবিকতা বজায় রেখে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থা করা। ২০২০-র ডিসেম্বরে যেখানে মেক্সিকো সীমান্তে শরণার্থীর সংখ্যা ছিল ৭৪ হাজার, তা ২০২৩-এর ডিসেম্বরে রেকর্ড ৩ লক্ষে পৌঁছয়েছে। সীমান্ত শহরগুলিতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। টেক্সাস, ফ্লরিডা এই প্রদেশগুলির গভর্নরেরা বাস ভর্তি করে অসংখ্য শরণার্থীকে নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলসের মতো ‘ডেমোক্র্যাটিক’ শহরগুলিতে পাঠানো শুরু করে দেন। তাঁদের মতে, সেখানকার ‘উদারপন্থী’ প্রশাসন যাতে সীমান্তের বিশৃঙ্খলা বুঝতে পারে, তাই এই পদক্ষেপ।
একটি জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, ৩৫ শতাংশ ভোটার জোরালো ভাবে মনে করেন যে, কোনও পরিচয়পত্রবিহীন শরণার্থীদের সংখ্যা কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অধিকাংশ ভোটারই চান শরণার্থী অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হোক। যার ফলে লাভবান হবেন ট্রাম্পই।