প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি কাবু করেছে প্রবীণদের। তা বলে শিশু ও কিশোরদের জন্য ঝুঁকি যে একে বারে নেই, তা নয়। হয়তো প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় তাদের মধ্যে সংক্রমণের হার কম। তবু বিপদের আশঙ্কা তো রয়েছেই। সতর্কতা হিসেবে তাই মাস্ক পরা, বার বার হাত ধোওয়ার মতো অভ্যাসগুলি শিশু ও কিশোরদের জন্যেও সমান ভাবে প্রযোজ্য। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্কের প্রয়োজনীয়তার কথা গত ৫ জুন ঘোষণা করেছিল হু। তবে শিশুদের জন্য আলাদা করে কোনও গাইডলাইন ছিল না। সম্প্রতি এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। কোন বয়সের শিশু-কিশোরের জন্য কী কী সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন তা জানিয়ে নিজস্ব ওয়েবসাইটে হু এবং ইউনিসেফ জানিয়েছে, বারো বা তার বেশি বয়সি কিশোরদের বড়দের মতোই নিয়মিত মাস্ক পরা উচিত।
ছয় থেকে এগারো বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে তা পরতে হবে পরিস্থিতি বুঝে। যেমন, ওই এলাকায় সংক্রমণের হার কতটা, মাস্ক ব্যবহারে শিশুর স্বাচ্ছন্দ্য রয়েছে কি না, মাস্ক সহজলভ্য কি না, বড়দের পক্ষে ওদের উপরে পর্যাপ্ত নজরদারি সম্ভব কি না— তার উপরেই শিশুদের মাস্ক পরা নির্ভর করছে। আবার পাঁচ বছর বা তার থেকে ছোটদের মাস্ক পরার তেমন প্রয়োজন নেই বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, একেবারে ছোটদের তুলনায় বড় শিশু বা কিশোরদের সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা অনেক বেশি।
এই অবস্থায় শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যে নজর দিতে বলা হয়েছে। নয়া পরিস্থিতিতে ওদের দেখা-শেখা এবং সামাজিক ও মানসিক বৃদ্ধি ধাক্কা খেতে পারে। একাকিত্বে ভুগতে পারে অনেকে। আরও মুখচোরা হয়ে উঠতে পারে আবার সামাজিক মেলামেশায় অস্বস্তিতে ভুগতে পারে কেউ কেউ। এগুলোর যে কোনও একটা শিশুকে গুরুতর অসুস্থ করে তুলতে পারে।
বিশ্বের প্রধান নজর যদিও এখন প্রতিষেধক আবিষ্কারের দিকে। চিন, ব্রিটেন, আমেরিকা, জার্মানি, ভারত, অস্ট্রেলিয়া-সহ বহু দেশেই ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চলছে। রাশিয়া অবশ্য ট্রায়াল শেষের আগেই একটি প্রতিষেধককে ছাড়পত্র দিয়েছে। বেশ কয়েকটি গবেষণা চালাচ্ছে চিনও। শনিবার তারা আরও একটি নতুন গবেষণার কথা জানিয়েছে। পতঙ্গের কোষে একটি বিশেষ প্রোটিন তৈরি করে তা থেকে বানানো হয়েছে এই নতুন ভ্যাকসিন। চিনের চেংদু প্রদেশে ওয়েস্ট চায়না হসপিটাল অব সিচুয়ান ইউনিভার্সিটি এটি তৈরি করেছে। চিনা সোশ্যাল মিডিয়ায় চেংদু প্রশাসন জানিয়েছে, প্রথমে বাঁদরের উপরে ভ্যাকসিনটি পরীক্ষা করা হয়েছিল। সাফল্য মেলায় মানুষের উপরে ট্রায়ালের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। এক সরকারি কর্তা জানান, জরুরি অবস্থায় দেশীয় কিছু সংস্থার তৈরি ভ্যাকসিন প্রয়োগে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব জুড়ে সংক্রমণের নিরিখে শীর্ষে আমেরিকা। বিভিন্ন সমীক্ষা বলছে, শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ, লাতিন-আমেরিকান ও জনজাতির মানুষের করোনা আক্রান্ত হওয়ার হার অন্তত দ্বিগুণ বেশি। ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চালানো মার্কিন ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থা ফাইজ়ার জানিয়েছে, ট্রায়ালে অংশ নেওয়া ১১ হাজার স্বেচ্ছাসেবকদের পাঁচ ভাগের এক ভাগই কৃষ্ণাঙ্গ বা লাতিন-আমেরিকান। তাঁদের সংখ্যা আরও বাড়ানোর কথা ভাবছেন কর্তৃপক্ষ।